শরীর ও স্বাস্থ্য

টেনশন মেজাজ স্ট্রেস: সামলে নিন ঠান্ডা মাথায়

মেজাজ ঠিক রাখার রহস্য কিন্তু লুকিয়ে রয়েছে শান্ত মেজাজে বিবেচনা করার উপর। পরামর্শ দিলেন তনুশ্রী শংকর।

রাগ, টেনশন এই সবের কারণেই আমাদের মনখারাপ হয়, সম্পর্ক ছিঁড়ে যায়। আমরা ভাবি একা হয়ে পড়ছি। দুঃখ পাই। তবু নিজেদের সামলে রাখতে পারি না। আমি মনে করি, কোনও প্রসঙ্গে মতের অমিল যদি কথা কাটকাটি পর্যন্ত গড়ায়, তাহলে সেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়াটা সমাধান নয়। বরং তার মোকাবিলা করা উচিত।  তবে ঠান্ডা মাথায়। আমি যেমন করি। কর্মক্ষেত্রে হয়তো কারও সঙ্গে কোনও একটা বিষয় নিয়ে তুমুল ঝগড়া হল। তারপর দু’জনেই একে অপরকে এড়িয়ে গেলাম। দেখেছি এতে সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে যায়। তার চেয়ে যদি বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করি, তাহলে হয়তো সমস্যার সমাধানও বেরিয়ে আসে কখনও। আমার মতে যে কোনও ক্ষেত্রেই যদি সমস্যার সম্মুখীন হই, অন্যের সঙ্গে মতের অমিল হলে, সমস্যার কারণটা বিশ্লেষণ করি, তার গোড়া পর্যন্ত যাই তাহলে সমস্যা মিটে যায়। মেজাজ ঠিক রাখার রহস্য কিন্তু লুকিয়ে রয়েছে ঠান্ডা মাথায় বিবেচনা করার উপর। 
ইংরেজিতে একটা কথাই আছে, ‘টু স্লিপ অন আ প্রবলেম’। সেক্ষেত্রে কিন্তু ‘স্লিপ’ শব্দটাকে আক্ষরিক অর্থে ধরা হয় না, বরং বলা হয় ঠান্ডা মাথায় সমস্যা মোকাবিলা করার কথা। ফলে মাথা গরম হলে সেই মুহূর্তে বিষয়টা নিয়ে কথা না বাড়ানোই ভালো। নিজের জীবনেও দেখেছি উত্তেজিত আলোচনা হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। আজ পরিণত বয়সে এসে বুঝি, উত্তেজিত মনে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না।   
দ্বিতীয়ত, টেনশন বা মেজাজ কমানোর জন্য যেটা ভীষণ জরুরি তা হল ধৈর্য। আমার যেমন স্বাভাবিকভাবেই ধৈর্য বেশি। ফলে হঠাৎ রেগে যাওয়ার সমস্যায় ততটা পড়ি না। কিন্তু যদি আপনার চরিত্রে ধৈর্যের অভাব থাকে তাহলে সেটা বাড়িয়ে তোলার উপায় ভাবতে হবে। ধ্যান করুন, বিতর্কে যাতে জড়িয়ে না পড়েন সে বিষয়ে সচেতন থাকুন। যখনই দেখবেন কোনও ক্ষেত্রে আপনার মতের সঙ্গে অন্যের মত মিলছে না, তখনই চুপ করে যাবেন। আমি হাতেনাতে ফল পেয়েছি। আমি নিজে যেমন অন্যের মতটাকে গুরুত্ব দিতে জানি। তাতে অনেক সমস্যা গোড়াতেই ঘুচে যায়। এরপরেও মেজাজ হারিয়ে ফেলা বা রাগারাগি করার মতো বিষয় যখন আলোচনায় উঠে আসে, তখন নিজেকে সেখান থেকে সরিয়ে ঩নিই। 
তৃতীয় কথা হল ম্যাচিওরিটি। মনকে পরিণত করতে হবে। এটা অবশ্য বয়সের সঙ্গে বাড়ে। যেমন আমি অল্প বয়সে অপরিণত মনে যখন পারিবারিক সমস্যা সামলাতে গিয়েছি, মনে হতো বিশাল ব্যাপার বুঝি। কিন্তু আজ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মনে হয় সমস্যাগুলো নেহাতই তুচ্ছ। তবে আমার মনে হয় পারিবারিক সমস্যায় মেজাজ হারিয়ে ফেলাটাই স্বাভাবিক। তাই নিজেকে সংযত রাখার জন্য কিছু মাইন্ড গেমস অভ্যাস করুন। ধৈর্য বাড়বে। আর ধৈর্য যত বেশি থাকবে ততই মেজাজ হারানোর প্রবণতা কমবে। পরিণত মনের জন্য বয়সও একটা বড় ফ্যাক্টর। অল্প বয়সে হয়তো অনেকেই বদরাগী হয়, কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে মন পরিণত হয় এবং সেই সময়ই বদমেজাজি স্বভাবও অনেকটাই কমে যায়। পরিণত মনে অনেক সমস্যাই গুরুত্বহীন লাগে। আমার ক্ষেত্রে তো তাই হয়েছে। এখন আর সেই সমস্যাগুলোর পিছনে সময় নষ্ট করি না। 
অনেক সময় হয়তো হঠাৎ কারও কোনও কথায় দুঃখ পেয়ে গেলাম। কিন্তু পরে যখন সেটা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি তখন দেখি কথাটায় অহেতুক বেশি গুরুত্ব দিয়ে দুঃখ পেয়েছি। এই যে খোলামেলা আলোচনা, এটাও যে কোনও রাগ, স্ট্রেস বা টেনশন কমানোর অন্যতম সেরা উপায়। নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলতে পারেন, অন্যের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন। কিন্তু মন খুলে কথা বলতে হবে। 
কর্মজগতে এবং সংসারে বহুদিনের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে আমি দেখেছি, যে যত সহজভাবে অন্যের সঙ্গে মিশতে পারে তার মানসিক সমস্যা তত কম হয়। রাগ, টেনশন, স্ট্রেস এই সবের মূলেই আছে রাখঢাক, গোপনীয়তা। তার চেয়ে নিজেকে মেলে ধরা‌ই ভালো। সমস্যাগুলোর কথা অন্যকে জানালে, তা নিয়ে আলোচনা করলে সমস্যার আসল কারণ বিশ্লেষণ করতে সুবিধে হয়। আর একটা কথা, নিজের দোষ ত্রুটিগুলো এড়িয়ে যাবেন না। অন্যের ভুল ধরার আগে নিজের আচরণ বিচার করুন। প্রয়োজনে দোষ স্বীকার করুন। ‘সরি’ আর ‘থ্যাঙ্ক ইউ’— এই দুটো কথা জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো অভ্যাস করতে পারলে দেখবেন সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে। খোলা মনে নিজের আচরণের বিচার করতে পারলে সবচেয়ে ভালো। 
10d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

গৃহসুখ বৃদ্ধি ও সপরিবারে আনন্দ উপভোগ। অন্যের দোষের দায়বহন করতে হতে পারে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.০৭ টাকা৮৪.৮১ টাকা
পাউন্ড১০৮.৬৫ টাকা১১২.২০ টাকা
ইউরো৯১.৫৭ টাকা৯৪.৭৬ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
17th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা