পলাশীর যুদ্ধ শেষ। দেশের একটা বড় অংশে কায়েম হয়েছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন। তন্ন তন্ন করে চলছে সম্পদের খোঁজ। উঠে আসছে ভারত সম্পর্কে নানা অজানা তথ্য। সেগুলির ব্যাখ্যা নেই দেশীয় পণ্ডিতদের কাছেও! অগত্যা এই পরাজিত জাতি ও তাদের সম্পদ নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন বোধ করল ব্রিটিশরা। একাজে সবার আগে এগিয়ে এলেন উইলিয়াম জোনস। কলকাতায় একটি উচ্চ শিক্ষা তথা গবেষণা সংস্থা গড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি লিখলেন গণ্যমান্য ইউরোপীয় শিক্ষাবিদদের। আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ১৭৮৪ সালের ১৫ জানুয়ারি কলকাতার পুরনো সুপ্রিম কোর্টের ভবনে মিলিত হন ৩০ জন বিদগ্ধ ব্যক্তিত্ব। সভাপতিত্ব করেন তৎকালীন গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস। সহ সভাপতি হন উইলিয়াম জোনস। সেই সভাতেই ‘দি এশিয়াটিক সোসাইটি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। ওই বছর ১৫ জুলাই ফোর্ট উইলিয়ামে প্রতিষ্ঠা হয় এশিয়াটিক সোসাইটির। ১৮০৮ সালে দক্ষিণ কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের একটি ভবনে সংস্থাটি স্থানান্তরিত হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৬৫ সালে এই ভবনের পাশেই সোসাইটির দ্বিতীয় ভবনটি গড়ে ওঠে। এখন সেখানে রয়েছে সোসাইটির নিজস্ব গ্রন্থাগার ও সংগ্রহালয়।
প্রথম দিকে ইউরোপীয়রাই সোসাইটির সদস্য হতে পারতেন। ১৮২৯ সালে ভারতীয়দের জন্য দরজা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সোসাইটির তৎকালীন সম্পাদক হোরেস হেম্যান উইলসন। প্রসন্নকুমার ঠাকুর, দ্বারকানাথ ঠাকুর, রসময় দত্ত এবং রামকমল সেন এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম ভারতীয় সদস্য ছিলেন। ১৮৩৩ সালে রামকমল সেন এশিয়াটিক সোসাইটির প্রথম ভারতীয় সম্পাদক এবং ১৮৫৫ সালে রাজেন্দ্রলাল মিত্র প্রথম ভারতীয় সভাপতি হন।