বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সবেদা এখন পাড়ি দিচ্ছে অন্যরাজ্যে। এই জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সবেদা উৎপাদিত হয় জয়নগর থানার বহড়ুক্ষেত্র গ্রাম পঞ্চায়েতের হাসিমপুর গ্রামে। সবেদা একটি উচ্চফলনশীল ফল। সব ধরনের মাটিতে এই ফল চাষ করা গেলেও বেলে-দোঁয়াশ মাটি সবচেয়ে উপযুক্ত। সবেদা বাগানে অন্যগাছ থাকলে অবশ্য সবেদার ফলন মার খায়। কার্তিক মাস থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত সবেদার ফলন পাওয়া যায়। এই এলাকার চাষি আকবর লস্কর বলেন, আমি ২০ বছর ধরে সবেদার চাষ করছি। এই গাছ বসাতে সামান্য কিছু টাকা লাগে মজুরির জন্য। তবে সবেদা গাছের জন্য তেমন কোনও সারের প্রয়োজন হয় না। বহু বছর বাঁচে এই গাছ। ৪ ফুটের গাছে এক বছরেই ফুল ও ফল আসে। ১ বিঘা জমিতে ২২টি বড় গাছ লাগানো হয়ে থাকে। এই গাছ বছরে তিনবার ফল দেয়। সবচেয়ে বেশি ফলন হয় গ্রীষ্মকালে। এই সময় এক-একটি সবেদার ওজন ১৫০-২০০গ্রাম হয়ে থাকে। শীতকালে ৯০-১০০গ্রাম এবং বর্ষাকালে ৪০-৫০গ্রাম ওজন হয়ে থাকে সবেদার। গ্রামপ্রতি কমবেশি ১২হাজার ফল হয়। এবছর অবশ্য প্রচুর ফলন হওয়ায় সবেদার দাম কমে গিয়েছে বাজারে। ফলে চাষিরা তেমন দাম পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।
প্রতিদিন দুপুরে জয়নগর, বকুলতলা, কুলতলি, মৈপীঠ, রায়দিঘি, মথুরাপুর, মন্দিরবাজার, মগরাহাট সহ কয়েকটি থানা এলাকার সবেদা চাষিরা হাসিমপুরে আসেন। সেখানে সবেদা বিক্রির বড় হাট বসে। সবমিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার সবেদা চাষি এই হাটে এসে থাকেন। এই এলাকার আরএক চাষি আজিজুর লস্কর বলেন, বর্তমানে হাসিমপুরের হাটে যে সবেদার কেনাবেচা হয়, তার ১০০পিসের দাম গড়ে ২০০টাকা। এখানকার এই সবেদা কাঠের বাক্স বন্দি হয়ে দিল্লি, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র সহ বেশকিছু রাজ্যে চলে যায়। এছাড়া কলকাতা সহ হাওড়া বাজার এবং স্থানীয় মার্কেটে, ট্রেনে বিক্রি হয়ে থাকে। চাষিরা বলেন, একটি কাঠের বাক্সে ৩০০পিস সবেদা ধরে। ওই বাক্সে ৫-৬দিন পর্যন্ত ফল ভালো থাকে। গাছ থেকে তিন মাসের মধ্যে ফল পাড়তে হয়। চৈত্র-বৈশাখ মাসে সবেদা গাছে ফুল ধরে।
খোকন শেখ নামে আরএক চাষি বলেন, সবেদা চাষে মাসে প্রায় ৯ হাজার টাকা খরচ হয়। আয় হয় ১৫-২০ হাজার টাকা। তবে এই চাষে তাঁরা কোনও সরকারি সহায়তা পান না। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি কর্মাধ্যক্ষ শাহজাহান মোল্লা বলেন, চাষিদের পাশে রাজ্য সরকার সবসময় আছে। চাষিরা যেকোনও প্রয়োজনে কৃষি দপ্তরে যোগাযোগ করতে পারেন।