অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ
সামনেই দোল। রঙের উৎসবে মাতবে গোটা রাজ্য। রঙে, আবিরে ভেসে যাবে চারদিক। পরিবার, বন্ধুবান্ধব সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলবে এই বিশেষ দিনটি উদযাপন। তবে মনে রাখবেন, একটু অসতর্ক হলেই রং চোখে ঢুকে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। তাই সাবধান। এবার জেনে নেওয়া যাক, রং চোখে ঢুকলে ঠিক কী কী সমস্যা হতে পারে?
ইরিটেশন— রং চোখের কাছে ‘ফরেন বডি’ বা সহজ বাংলায় আগন্তুকও বলা চলে। এহেন অপরিচিত এক রাসায়নিক চোখে প্রবেশ করলে চোখ তার বিরুদ্ধে প্রথমেই ছোটখাট লড়াই শুরু করে দেয়। এই যুদ্ধের ফলাফলই হল ইরিটেশন। এক্ষেত্রে চোখ লাল হওয়া, চোখ দিয়ে জল পড়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
কেমিক্যাল কনজাংটিভাইটিস— চোখ লাল হওয়া, জল পড়ার পাশাপাশি চোখ ফুলে যায়, ব্যথা থাকতে পারে, দেখতে সমস্যা হয়। জটিল এই অসুখটি বেশ কয়েকদিন ভোগাতে পারে।
কর্নিয়ার সমস্যা— রাসায়নিক সবুজ রং চোখের পক্ষে ভীষণই ক্ষতিকর। এই রঙের মধ্যে ম্যালাকাইট গ্রিন নামের রাসায়নিক থাকে। তাই চোখে ঢুকলে মণির চারদিকের কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর এই কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কর্নিয়ায় ভীষণরকম সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তি কমতে শুরু করা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, জল পড়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়।
সমাধান
১. চোখে অস্বস্তি ও বিভিন্ন ধরনের ইরিটেশন দেখা দিলে প্রথমে চোখের ভিতরের সমস্ত রং জলের ঝাপটা দিয়ে বের করে ফেলুন। এরপর ৫-১০ মিনিট অন্তর আর্টিফিশিয়াল টিয়ার ড্রপ দিতে পারেন। চোখে আরাম পাবেন। তবে সমস্যা একদিনের মধ্যে সম্পূর্ণ না মিটলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
২. কেমিক্যাল কনজাংটিভাইটিস হলে প্রথমেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। অপেক্ষা করলে চলবে না। এক্ষেত্রে প্রথমে দেখা হয়, চোখে কোনও রং ঢুকে রয়েছে কি না। রং থাকলে বের করা হয়। এরপর প্রয়োজন মতো আর্টিফিশিয়াল টিয়ার, অ্যান্টিবায়োটিক, লো পোটেন্সি স্টেরয়েড ইত্যাদি ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
৩. কেমিক্যাল কনজাংটিভাইটিসের মতোই কর্নিয়াতে সমস্যা দেখা দিলেও চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এই অবস্থায় প্রয়োজন মতো অ্যান্টিবায়োটিক, চোখের ড্রপ দেওয়া হয়।
প্রতিরোধ
• চোখ বাঁচিয়ে রং খেলুন। যে রং দিচ্ছে, তাঁকে চোখে রং দিতে নিষেধ করুন। আবার আপনিও অন্যের চোখে রং দিতে যাবেন না। চোখের অংশটুকু ছেড়ে যতখুশি রং খেলুন। বাচ্চাদেরও এক শিক্ষা দিন। বুঝিয়ে বলুন।
• সানগ্লাস পরে রং খেলুন। বাচ্চাদেরও চোখে সানগ্লাস পরিয়ে দিন। সানগ্লাস পরে থাকলে চোখে রং ঢোকার আশঙ্কা বহুগুণ কমবে।
• রং একান্তই ঢুকে গেলে চোখ ঘষবেন বা ডলবেন না। একেবারে ঠান্ডা মাথায় সচেতন হয়ে রং বের করুন। স্বচ্ছ জল দিয়ে চোখে বারবার আলতো করে ঝাপটা নিন। পারলে আশপাশের বিশ্বাসযোগ্য কোনও ব্যক্তিকে চোখের দুই পাতা উল্টে দেখতে বলুন রং আছে কি না। থাকলে মেডিক্যাল তুলো বা বাডস দিয়ে রং বের করে দিতে বলুন। বাচ্চাদেরও একইভাবে করুন। যত তাড়াতাড়ি রং বের করা হবে, ততই সমস্যার আশঙ্কা কম থাকবে।
• রাসায়নিক রঙের পরিবর্তে ভেষজ রং ও আবির ব্যবহার করুন। শরীরের পক্ষে ভেষজ রং ভালো। এই ধরনের রং চোখে গেলেও সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা অনেক কম।