ঘরে বা পথেঘাটে পড়ে গিয়ে শরীরে বড় আঘাত পেতে পারেন। আমদানি রপ্তানির ব্যবসা ভালো হবে। ... বিশদ
একটি ‘সূর্য ঘড়ি’ তৈরি করতে লোকেরা খোলা জায়গায় একটি লাঠি পুঁতে রাখত। তারপর ছোট-বড় চক্র দিয়ে লাঠিকে ঘিরে ফেলত। সেই চক্রগুলোর ওপর বিভিন্ন সঙ্কেত লিখে রাখত। ওই সঙ্কেতগুলো দিয়ে বিভিন্ন প্রহর বোঝানো হতো। সূর্যের আলো লাঠির উপর পড়লে তার ছায়া সেখান থেকে নির্দেশিত চক্রে মাটিতে পড়বে এবং সেখান থেকে সময় নির্ধারিত হবে। এমন একটি ঘড়ি এখনও বার্লিন জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। দিনের বেলায় না হয় সূর্যের আলো দেখে সময় নির্ধারণ করা যেত। কিন্তু রাতের বেলায় কীভাবে সময় বোঝা যাবে এ চিন্তা ভাবিয়ে তুলল সে সময়কার মানুষজনকে। চোখ গেল রাতের আকাশে। তারা এমন একটি নক্ষত্রের সন্ধান করতে লাগলেন যেটি সবসময় একদিক থেকে অন্যদিকে যাবে।
শেষপর্যন্ত পাওয়া গেল এমন একটি নক্ষত্র, যেটি দেখতে খুব উজ্জ্বল এবং একটু লম্বা। এটি আকাশের উত্তরে উঠে এবং ধীরে ধীরে দক্ষিণে চলে যায়। শুধু তাই নয় এই তারা মেরুকে কেন্দ্র করে ঘড়ির কাঁটার মতো ঘুরতে থাকে, যা দিয়ে অনায়াসে সময় নির্ধারণ করা যায়। ওই নক্ষত্রটির নাম ‘ক্যাসিওপিয়া’।
এই ‘তারা ঘড়ি’ প্রথম আবিষ্কার করেছিল জার্মানরা। তারা ঘড়ির পরে আসে ‘জল ঘড়ি’। ১৪০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে মিশরীয়রা প্রথম জল ঘড়ি আবিষ্কার করেছিল। কীভাবে ‘জল ঘড়ি’ কাজ করত? একটি ফানেলে জল ভরা হতো এবং সেই ফানেলের নীচে একটি সরু পাইপ লাগানো হতো। ফানেলের জল একটি সরু পাইপ দিয়ে একটি জারে গিয়ে পড়ত। সেই জারে একটি হালকা কর্ক রেখে দেওয়া হতো। পাত্রের অন্য প্রান্তে লাগিয়ে দেওয়া হতো দাঁতযুক্ত একটি সময় নির্দেশক কাঁটা। ফানেল থেকে ধীরে ধীরে জল চলে আসত জারে এবং জারে যত জল পড়ত কর্ক ততই ভেসে উঠত। তখন সময় নির্দেশক কাঁটা ঘুরতে আরম্ভ করত, যা বলে দিত সময়। গ্রিকরা একে ‘ক্লিপসেড্রা’ বলতেন।
তারপর এল ‘বালির ঘড়ি’। এটি প্রায় বারোশ’ বছর আগে আবিষ্কার হয়েছিল। বালি ঘড়িটা ছিল অনেকটা জল ঘড়ির মতোই। তবে এ ঘড়ির জন্য প্রয়োজন হয় একটি ফানেল যার মাঝখানটি চ্যাপ্টা। ফানেলের ওপর দিয়ে কিছুটা বালি ফানেলের মধ্যে ঢেলে দেওয়া হলে সে বালি ফানেলের মাঝখানে গিয়ে বাধা পায়। অপেক্ষাকৃত সরু ও মিহি দানার বালি ফানেলের চ্যাপ্টা অংশ দিয়ে নীচে পড়তে শুরু করে। ফানেলের নীচের অংশে আঁকা থাকতো স্কেল। বালির জমা হওয়ার পরিমাণ নির্ণয় করত
নির্দিষ্ট সময়।
রাতের বেলা মানুষ ঘড়ির বিকল্প হিসেবে ‘মোমের ঘড়ি’ আবিষ্কার করে। মোমের ঘড়ির প্রথম আবিষ্কার হয় চীনে। তারা সূর্যঘড়ির পদ্ধতিতে এই ঘড়ি ব্যবহার করত। অন্ধকার ঘরে তারা একটি মোমবাতি জ্বালাত। সেই আলোর কাছাকাছি কোনও মানদণ্ড রেখে দিত। মোমের আলো গিয়ে সেই মানদণ্ডের ওপর পড়ত। মানদণ্ডের সামনের অংশ আলোকিত হতো আর পিছনের অংশে তার ছায়া পড়ত। মোম যত ছোট হতো ছায়া তত দীর্ঘ হতো। সে সময় এই ছায়া পরিমাপ করে তখনকার মানুষ সময়
পরিমাপ করত।
যন্ত্র ঘড়ি কে আবিষ্কার করেন তা আজও অজানা। অবশ্য অনেকে মনে করেন যে, আর্কিমিডিসের হাতেই প্রথম যন্ত্রঘড়ি জীবন পায়। একটি তথ্য থেকে জানা যায়, ‘গ্রেট টম’ নামে ১২৮৮ সালে একটি ঘড়ি তৈরি হয়েছিল লন্ডনে। এও জানা গেছে যে ফ্রান্সের রাজা চার্লসের জন্য ১৩৬০ সালে একটি ঘড়ি তৈরি করা হয়েছিল সেটি নাকি আজও সচল। আব্রাহাম লুই ব্রেগেট প্রথম তৈরি করেছিলেন হাতঘড়ি। আর প্রথম আধুনিক ঘড়ি আমরা পাই জার্মানির পিটার হেনলাইনের হাত ধরে।