ব্যবসা ভালো হবে। কেনাবেচা ক্রমশ বাড়বে। অর্থাগম ভাগ্য আজ অনুকূল। দেহে দুর্বলতা। ... বিশদ
মহাকাশযাত্রীরা বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণ করে থাকেন। তবে সেগুলি সুষম খাবার। যাতে থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিগুণ, খনিজ পদার্থ, ভিটামিন ও শরীরের উপযোগী অন্যান্য দ্রব্য। খাবারগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হিমায়িত বা ফ্রিজজাত শুকনো খাবার, বেভারেজ বা তরল পানীয়, সতেজ খাবার যেমন সতেজ ফল, শাকসব্জি ইত্যাদি। এছাড়াও থাকে বাদাম, কুকিজ ইত্যাদি। জলে ভেজানো যাবে এমন ধরনের খাবার, থার্মোস্টেবেলাইজড খাবার এবং প্রিজারভেটিভ মেশানো পাউরুটি, কেক ইত্যাদি মহাকাশযাত্রীরা গ্রহণ করে থাকেন।
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ
প্রতিটি দেশ তাদের সংস্কৃতি, খাদ্যের রীতিনীতি ইত্যাদি অনুসারে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য মহাকাশযানে পাঠায়। নাসার ক্ষেত্রে আমেরিকার ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ অর্থাৎ এফডিএ তাদের জন্য খাবার প্রক্রিয়াকরণ করে থাকেন। তবে মনে রাখা প্রয়োজন, যে দেশই তাদের মহাকাশচারীদের জন্য খাবার পাঠাক না কেন, খাবার হতে হয় পুষ্টি সম্মত, সহজপাচ্য, ওজনে হালকা, সহজে পরিবেশনযোগ্য এবং যেটি তৈরি করতে জলের পরিমাণ কম লাগে অথবা প্রায় লাগে না বললেই চলে। মহাকাশযাত্রীদের খাবারের ব্যাপারে আর দু’টি জিনিস মাথায় রাখতে হয়। ১) খাওয়ার পর হাত, মুখ যাতে সহজে পরিষ্কার করা যায় এবং ২) খাবার খেতে খুব কম শক্তি ব্যবহার করতে হয়। কার্বনেটেড তরল সাধারণত ব্যবহার করা হয় না। কারণ এ ক্ষেত্রে প্রায় শূন্য অভিকর্ষ ত্বরণে তরল ও গ্যাসকে আমাদের পাকস্থলী সহজে পৃথক করতে পারে না। ফলে বমি হয়। যাকে ‘ওয়েট বারপিং’ বলা হয়।
মহাকাশে রান্না
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনগুলিতে প্যাকেটজাত খাদ্য সেদ্ধ করা এবং গরম করা হয়। প্রথমে ‘রাশিয়ান অরবিটাল সেগমেন্ট’ ছিল একমাত্র আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন, যেখানে খাবারকে সেদ্ধ করা এবং গরম করা হতো। পরবর্তীকালে অবশ্য এর সংখ্যা বেড়েছে। আমেরিকা ও চীন মহাকাশ গবেষণা স্টেশনগুলিও এই খাদ্য প্রস্তুতিতে বিশেষ সাহায্য করে। তবে মহাকাশযানের মধ্যে ছোট রান্নাঘর (মাইক্রোকিচেন) থাকে, যেখানে খাবার গরম করার জন্য মাইক্রোওয়েভ ওভেন ব্যবহার করে থাকেন মহাকাশযাত্রীরা।
মহাকাশযাত্রীদের খাবারের ইতিহাস
পৃথিবীর প্রথম মহাকাশচারী ইউরি গ্যাগারিন ১৯৬১ সালে ভস্তক-১-এ ১০৭ গ্রাম ওজনের টুথপেস্টের মতো টিউবে করে খাবার খেয়েছিলেন। সে খাবার ছিল মূলত মাংসের পেস্ট এবং গলিত চকোলেট। ১৯৬১ সালে সোভিয়েত মহাকাশচারী ঘেরম্যান টাইটভ, ভস্তক-২-তে প্রথম বমি করেন। খাবারজনিত কারণে মহাকাশযাত্রীদের মহাকাশে অসুস্থ হওয়া এই প্রথম। আমেরিকান মহাকাশচারী জন গ্লেন ১৯৬২ সালে প্রথম মহাকাশযানের মধ্যে অ্যালুমিনিয়াম কিউব থেকে খাবার খেয়েছিলেন। প্রথমদিকে মহাকাশযাত্রীরা খাদ্য উপযোগী ছোট ছোট কিউব, ঠান্ডায় জমানো পাউডার জাতীয় খাবার অথবা জেলির মতো খাবার খেতেন। তখন অবশ্য খাবারের স্বাদ, গন্ধ বা বর্ণের উপর অত নজর দেওয়া হতো না। সেই সময় মূলত জোর দেওয়া হতো খাদ্যের ক্যালোরিক ভ্যালুর উপর। পরবর্তীকালে মহাকাশযানের মধ্যেই বার্লি চাষ করা হয়েছিল এবং সেই ফসলকে পৃথিবীতে আনাও হয়েছিল।
বর্তমানের খাবার
২০০২ সাল থেকে স্পেস স্টেশনে ‘লাডা গ্রিনহাউস সিস্টেমের’ মধ্যে নভশ্চররা টাটকা সব্জি চাষ করছেন। নাসার ‘অ্যাডভান্স ফুড টেকনোলজি’ (এএফটি) প্রজেক্ট মহাকাশ যাত্রীদের খাবারের গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য সর্বদা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে— কী করে তাদের শরীরে জল ক্ষয় রোধ করা যায়, ভিটামিনের অভাব মেটানো যায়, শরীরের মধ্যে বিভিন্ন খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করা যায়।