মাধ্যমিকে বেশি নম্বরের জন্য বাড়তি সময়কে কাজে লাগাও পরামর্শে বিধাননগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষিকা রীনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ইতিহাসের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে কিছু আলোচনা করব।সাধারণত মাধ্যমিকে ইতিহাস পাঠ্যবইয়ের মোট আটটি অধ্যায় থাকে। যদিও এবার বিশেষ পরিস্থিতির জন্য সিলেবাস কমিয়ে প্রথম থেকে পঞ্চম অধ্যায় পর্যন্ত রাখা হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও দশ নম্বরের প্রজেক্ট ছাড়া বাকি নব্বই নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে।
নতুন পাঠ্যক্রমে কীভাবে নব্বই নম্বর বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করা হয়েছে এবারে সেই প্রসঙ্গে আসি। প্রথমে ‘ক’ বিভাগ (MCQ)। এখানে প্রতিটি অধ্যায় থেকে চারটি করে এক নম্বরের মোট কুড়িটি প্রশ্ন থাকবে।
দ্বিতীয় ‘খ’ বিভাগ (অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন)-এখানেও প্রতিটি অধ্যায় থেকে চারটি করে এক নম্বরের মোট কুড়িটি প্রশ্ন থাকবে। এই বিভাগে মোট পাঁচটি উপ-বিভাগ থাকে এবং প্রতিটি উপ-বিভাগ থেকেই অন্তত একটি করে মোট ষোলোটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। উপ-বিভাগগুলি হল—একটি বাক্যে উত্তরদান, সত্য-মিথ্যা নির্ণয়, স্তম্ভ মেলানো, মানচিত্রে স্থান চিহ্নিতকরণ এবং বিবৃতি ও ব্যাখ্যা। তৃতীয় ‘গ’ বিভাগ (সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন, প্রশ্নমান ২)
এই বিভাগে প্রথম অধ্যায় থেকে দুটি, দ্বিতীয় অধ্যায় থেকে চারটি, তৃতীয় অধ্যায় থেকে দুটি এবং চতুর্থ ও পঞ্চম অধ্যায় থেকে চারটি করে মোট ষোলোটি প্রশ্ন থাকবে, যার মধ্য থেকে দুটি বা তিনটি বাক্যে মোট এগারোটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
চতুর্থ বিভাগ (বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্ন, প্রশ্নমান ৪)— এই বিভাগে প্রদত্ত প্রশ্নগুলির উত্তর সাত-আটটি বাক্যে লিখতে হবে। প্রথম অধ্যায় থেকে এই বিভাগে কোনও প্রশ্ন থাকবে না। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অধ্যায় মিলিয়ে মোট চারটি প্রশ্ন থাকবে। একই রকমভাবে চতুর্থ ও পঞ্চম অধ্যায় মিলিয়েও মোট চারটি প্রশ্ন থাকবে। সাধারণত ঘ বিভাগে চারটি উপ-বিভাগ থাকে। মোট আটটি প্রশ্নের মধ্যে ছটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। প্রতিটি উপ-বিভাগ থেকে অন্তত একটি করে প্রশ্ন লিখতেই হবে।
সবশেষে পঞ্চম ‘ঙ’ বিভাগ (রচনাধর্মী প্রশ্ন, প্রশ্নমান ৮)—এই বিভাগেও প্রথম অধ্যায় থেকে কোনও প্রশ্ন রাখা হয়নি। দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম এই চারটি অধ্যায় থেকে মোট তিনটি প্রশ্ন থাকবে, যার মধ্য থেকে একটি প্রশ্ন পনেরো বা ষোলোটি বাক্যে তোমাদের লিখতে হবে। প্রশ্নগুলি ৮ নম্বরের বা ৫+৩ বা ৩+৫ হতে পারে। এভাবে পাঁচটি বিভাগ মিলিয়ে মোট (২০+১৬+২২+২৪+৮) ৯০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। 
এবারে আসি প্রস্তুতির বিষয়ে, প্রথমেই বলব, পাঠ্যবইটি খুঁটিয়ে পুনরায় পড়ো। সেই সঙ্গে ভালো সহায়ক বইও দেখতে পারো। এক ও দু’ নম্বরের প্রশ্নের জন্য শুধু মুখস্থ না করে খাতায় প্রশ্ন ও উত্তর লিখে পড়ো। ম্যাপ পয়েন্টিং তৃতীয় ও চতুর্থ অধ্যায় থেকে বেশি অভ্যাস করো। রচনাধর্মী প্রশ্নের ক্ষেত্রে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ অধ্যায়ের ওপর বেশি জোর দাও। চার ও আট নম্বরের প্রশ্নগুলির উত্তর লেখা অভ্যাস করো। হাতের লেখার দিকে নজর রাখবে যেন বুঝতে অসুবিধা না হয়। প্রথম থেকেই দ্রুত লেখার অভ্যাস করো।
সবচেয়ে পছন্দের বিভাগের প্রশ্নের উত্তর আগে লিখবে। কোনও উত্তর পরে লিখলে সেই বিভাগেই জায়গা ছেড়ে রাখবে, প্রতিটি বিভাগের শেষে একটি করে দাগ টানবে।
আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে পরীক্ষা দাও, অবশ্যই সাফল্য আসবে। সবাইকে শুভেচ্ছা রইল।