পুরোদমে চলছে মাধ্যমিকের প্রস্তুতি
বাড়তি সময়কে যতটা সম্ভব কাজে লাগাচ্ছি
মাধ্যমিকের দু’ মাস আগে প্রস্তুতির জন্য কয়েকটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলেই আমি মনে করি।
বাংলা: বাংলার ছোট প্রশ্ন ও বড় প্রশ্ন সমস্ত কিছুর জন্যই টেক্সট ভালো করে পড়া প্রয়োজন। বিগত ৩-৪ বছরের মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র দেখে সহায়ক পাঠ ‘কোনি’র সম্ভাব্য বড় প্রশ্নগুলি তৈরি করতে হবে। টেস্ট পেপার থেকে ব্যাকরণ অনুশীলন করতে হবে।
ইংরেজি: স্কিল বেসড সাবজেক্ট ইংরেজির Preparation-এর জন্য writing skill, grammar, unseen, seen নিয়মিত test paper বা model প্রশ্নপত্র থেকে অভ্যাস করতে হবে। ইংরাজির জন্য verb, tense ঠিক রেখে বাক্যগঠন শেখাটা জরুরি।
অঙ্ক: অঙ্কও যেহেতু skill based subject তাই নিয়মিত নির্দিষ্ট সময় ধরে test paper বা model প্রশ্নপত্র থেকে এটি অনুশীলন করা জরুরি। অঙ্কের ক্ষেত্রে বইয়ের উদাহরণ ও অনুশীলনী সবকটি সমস্যাই প্রস্তুত রাখতে হবে।
ভৌতবিজ্ঞান: ভৌতবিজ্ঞানের জন্য test বই পড়ার পাশাপাশি সহায়িকা বই ও test paper থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নগুলি নিয়মিত অভ্যাস করতে হবে। theory পড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাণিতিক প্রশ্ন অনুশীলনও জরুরি।
জীবনবিজ্ঞান: জীবনবিজ্ঞানে অবশ্যই Concept Clear রেখে Test বই ভালো করে পড়তে হবে। পাশাপাশি ২ ও ৫ নম্বরের প্রশ্নগুলি নিয়মিত লেখা অভ্যাস করতে হবে। এর সঙ্গে diagram গুলি practice ও উত্তর লেখার সময় প্রাসঙ্গিক চিত্র দেওয়া অভ্যাস করতে হবে।
ইতিহাস: Test বই খুঁটিয়ে পড়াটা খুবই জরুরি। ২ নম্বরের প্রশ্নগুলি নিয়মিত অভ্যাস করা জরুরি। ৪ ও ৮ নম্বরের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য প্রশ্নগুলি লিখে তৈরি রাখতে হবে।
ভূগোল: এখানেও text বই পড়া জরুরি। এছাড়াও ২ ও ৩ নম্বরের প্রশ্নগুলি নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। পাশাপাশি test paper থেকে map pointing অনুশীলনও জরুরি।
বই ভালো করে পড়ার সঙ্গে revision করা নিয়ম করে, test paper থেকে ঘড়ি ধরে পরীক্ষা দেওয়া, উত্তরপত্রগুলি শিক্ষক শিক্ষিকাদের দিয়ে Correction করিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়েই প্রস্তুতি করা উচিত বলে আমার মনে হয়।
দেবর্ষি বসাক, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বালকাশ্রম উচ্চ বিদ্যালয়ের (উচ্চ মাধ্যমিক)
সময়ের মধ্যে উত্তর লেখার অভ্যাস করছি
মাধ্যমিক পরীক্ষা আর বেশি দিন বাকি নেই। হাতে আর মাত্র দুটো মাস। তাই আমিও জোরকদমে পড়াশোনা করছি। প্রত্যেকটি বিষয়কে ধৈর্য সহকারে বারবার অনুশীলন করার চেষ্টা করছি। যত বেশি বার আমরা রিভিশন দেব ততই আমাদের পক্ষে ভালো। মাধ্যমিকে শুধুমাত্র সরকারি বই পড়লেই হয় না অন্যান্য রেফারেন্স বইও আমি পড়ছি। সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে টেস্ট পেপার সলভ করছি। স্কুল থেকে জেনেছি এই পরীক্ষায় নম্বর অনুযায়ী শব্দ নির্দিষ্ট থাকে। তাই আমিও সেভাবেই শব্দ গুণে উত্তর লেখার অভ্যাস করছি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।
স্বস্তিক স্বর, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, দি স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল
টেস্ট পেপার থেকে প্রশ্নপত্র সলভ করছি
মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। পড়াশোনার জন্য একটি রুটিন তৈরি করেছি। বাংলার জন্য গদ্য, পদ্য-এর নিয়মিত পরীক্ষা দিচ্ছি। টেস্ট পেপার থেকে কোয়েশ্চন সল্ভ করছি। ইংরেজির জন্য গ্রামার প্র্যাকটিস করছি। প্রতি সপ্তাহে অঙ্কের একটি করে পাতা পরীক্ষা দিচ্ছি। এছাড়া প্রতিদিন দুপুরে বা রাতে শুতে যাওয়ার ঠিক আগে অঙ্ক প্র্যাকটিস করার সুফল পরীক্ষাতে পাচ্ছি। তোমরাও যারা মাধ্যমিক দেবে তারা এটি করতে পারো। ইতিহাস ও ভূগোলের ক্ষেত্রে শর্ট কোয়েশ্চন খুব দরকারি হয়। কারণ এগুলিতেই সবথেকে বেশি নম্বর পাওয়া যায়। তাই মুখস্থের পাশাপাশি শর্ট কোয়েশ্চনও সলভ করছি। এছাড়া ইতিহাসের বড় প্রশ্ন (৮ নং) ও ভূগোলের ম্যাপ পয়েন্ট প্র্যাকটিস করছি। ভৌতবিজ্ঞানের জন্য সহায়িকা থেকে অঙ্ক করছি ও জীবনবিজ্ঞান-এর ছবিগুলি খুব ভালোভাবে তৈরি করছি। আপাতত এইভাবেই প্রস্তুতি চলছে।
দেবাঞ্জনা চৌধুরী, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী,
বিধাননগর গভর্নমেন্ট হাইস্কুল
লেখার দক্ষতা বাড়াচ্ছি
হাতে আর মাত্র দু’মাস সময় বাকি। তাই ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য যথাসাধ্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। বাংলা পরীক্ষায় দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ে লেখা শেষ করতে পারা যায় না। মাধ্যমিকে যাতে এটা না হয় সেই ভাবে সময় বেঁধে লেখা অনুশীলন করছি। ইংরেজিতে রাইটিং স্কিলে সমস্যা থাকায় প্রচুর বইপত্র ঘাঁটছি। নিজের লেখার দক্ষতা বাড়াচ্ছি। অঙ্কের ক্ষেত্রে বইয়ের বাইরে অনেক অঙ্ক অনুশীলন করছি, যাতে যেকোনও ধরনের অঙ্ক করতে পারি। ভূগোলে বেশি করে মানচিত্র অনুশীলন করছি। যে নির্দিষ্ট আঁকাগুলো রয়েছে সেগুলো অনুশীলন করছি। ইতিহাসের মানচিত্র অনুশীলনের পাশাপাশি এমসিকিউ-এর সব প্রশ্নের উত্তর পারার জন্য নিজেই নিজের মকটেস্ট নিচ্ছি। ভুলগুলো সংশোধন করছি। জীবনবিজ্ঞান ও ভৌতবিজ্ঞান উভয় বিষয়ের ক্ষেত্রে খুব ভালো করে বইটাকে পড়ছি, যাতে সব ধরনের ছোট প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি। সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত দুই বিষয়ের আঁকা ও রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলিকেও ভালোভাবে অনুশীলন করছি। আশা রাখছি এভাবে প্রস্তুতি নিয়ে আসন্ন পরীক্ষায় সাফল্য লাভ করতে পারব।
শ্রীমন্তী ভট্টাচার্য, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী,
মাল্টিপারপাস গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল
প্রতিটি বিষয় খুঁটিয়ে পড়ছি
আমাদের জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক ১ জুন থেকে শুরু হবে। এবার সিলেবাস কিছুটা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এবার পরীক্ষার জন্য বাড়তি সময়ও পাওয়া গিয়েছে। আমার কোনও বিষয়ই অপছন্দ নয়। তবুও বাংলা, ইতিহাস এবং ইংরেজি পড়তে বেশ ভালো লাগে। তাই এগুলির প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখছি না। ভূগোলের জন্যও ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে আর্টসের বিষয়গুলির মতো বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তুতি এখনও অতটা নিপুণভাবে হয়ে ওঠেনি। তাই জীবনবিজ্ঞান, ভৌতবিজ্ঞান এবং গণিত নিয়ে সামান্য চিন্তা আছে। চেষ্টা করছি সেই খামতি পূরণ করার। অঙ্কের ক্ষেত্রে জ্যামিতি এবং পরিমিতি ভালো মতো তৈরি হয়ে আছে। বাকি অধ্যায়গুলিতে যেখানে যেখানে সমস্যা অাছে সেগুলিতে বাড়তি নজর দিচ্ছি।
ঋক প্রামাণিক, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, গভর্নমেন্ট স্পন্সর্ড মাল্টিপারপাস স্কুল ফর (বয়েজ) টাকি হাউজ
পাঠ্যবই পড়ার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি
আর দু’মাসও বাকি নেই। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দিতে চলেছি। মহামারীর জন্য এক বছরের ওপর স্কুলে আমাদের সরাসরি উপস্থিতিতে ক্লাস বন্ধ। অনলাইনে পড়াশোনা হয়েছে ঠিকই তবে তা অফলাইনের মতো করে তো হয় না। তবে সরকার এবার পরীক্ষার সিলেবাস অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে পরীক্ষাও চারমাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্কুলের থেকে অনলাইনে মক টেস্ট নেওয়া হয়েছে। তবে এসবের বাইরেও পরীক্ষার্থীকে নিজের মতো করে তো প্রস্তুতি নিতে হয়, আর তা নিচ্ছিও।
আমি এখন পাঠ্যপুস্তকগুলি খুঁটিয়ে পড়ার দিকেই জোর দিচ্ছি বেশি। কারণ পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়েই ৩৬ নম্বরের ছোট প্রশ্ন থাকে। পাঠ্যপুস্তক ভালোভাবে না পড়লে সেগুলিকে নির্ভুলভাবে সমাধান করা যাবে না। এছাড়াও সবধরনের প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্যেই পাঠ্যপুস্তক সবচেয়ে জরুরি। টেস্টপেপার থেকে প্রশ্নপত্র ধরে ধরে অনুশীলন করছি। বিগত বছরের প্রশ্ন দেখে প্রশ্নের ধরন বোঝার চেষ্টা ও উত্তর লেখার ধরন রপ্ত করছি।
কোনও প্রশ্ন আটকে গেলে তা জেনে নিয়ে পুনরায় অভ্যেস করছি। অজানা প্রশ্নের উত্তর জানতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিচ্ছি।
বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি বলতে, বাংলার ক্ষেত্রে ব্যাকরণ ও প্রবন্ধরচনা, ইংরেজির লিখন-নির্মিতি, অঙ্কের উপপাদ্য-সম্পাদ্য, প্রয়োগ, জীবনবিজ্ঞানের ছবি আঁকা, ভৌতবিজ্ঞানের অঙ্ক, ভূগোল ও ইতিহাসের মানচিত্র এবং ইতিহাসের সাল তারিখের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে অনুশীলন করছি।
ঘণ্টা মেপে পড়ার অভ্যাস নেই আমার। যতক্ষণ পড়তে ভালো লাগছে পড়ছি। বিশ্রাম নিয়ে ফের পড়া, লেখা, অনুশীলন চলছে।
আশাকরি এইভাবেই আগামী মাসদুয়েকের প্রস্তুতিতে মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য পুরোপুরিই তৈরি হয়ে উঠব।
পাপড়ি দাস, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী,
বেথুন কলেজিয়েট স্কুল
সব বিষয়কে সমান গুরুত্ব দিচ্ছি
আর মাত্র দু’মাস পর জীবনের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা মাধ্যমিক পরীক্ষা দেব। কিন্তু আমার প্রস্তুতিপর্ব অন্যান্য বছরের মতো নয়। গত বছরে করোনা মহামারীর কারণে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনলাইনে চলেছে পড়াশোনা। উপরন্তু পাঠ্যক্রম সীমিত হয়েছে, নম্বর বিভাজন বদলেছে এবং প্রায় দেড় বছর সময় দেওয়া হয়েছে। এরূপ পরিস্থিতিতে আমি কীভাবে বিভিন্ন বিষয়ের প্রস্তুতি নিয়েছি তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিলাম। বাংলা: পাঠ্যবই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়েছি যাতে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও দীর্ঘ প্রশ্নের ক্ষেত্রে মূল ঘটনা বিব্রত করতে পারি। উত্তরের মানোন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সহায়িকা বই পড়েছি। ঘড়ি ধরে সঠিক সময়ে পরীক্ষা দেওয়া অভ্যাস করছি।
ইংরেজি: এই বিদেশি ভাষা আয়ত্ত করার ক্ষেত্রে আমার ইংরেজি শব্দভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করতে বিভিন্ন ইংরেজি গল্পের বই ও সংবাদপত্র পড়েছি। ভাষাগত দক্ষতা Writing Skill এবং Grammar and Vocabulary অংশের উত্তরদানে সহায়ক Seen অংশের উত্তরদানের জন্য পাঠ্যবই ও শব্দার্থ ভালোভাবে পড়েছি, সর্বোপরি Model Test Paper অনুশীলন করছি যা সার্বিক প্রস্তুতিতে সহায়ক।
অঙ্ক: পাঠ্যপুস্তকের সমাধান করে দেওয়া অঙ্ক ও অনুশীলনীর সমস্যাগুলি অভ্যাস করেছি। বিভিন্ন অঙ্ক সমাধান করার কৌশল রপ্ত করতে বিভিন্ন বই এবং নমুনা প্রশ্নপত্র সমাধান অনুশীলন করছি। এটি সময় অনুযায়ী পরীক্ষার অভ্যাস গঠনেও সহায়ক।
ভৌতবিজ্ঞান: পাঠ্যপুস্তক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আত্মস্থ করেছি। তথ্যমূলক প্রশ্নের পাশাপাশি প্রচুর প্রয়োগমূলক প্রশ্ন ও গাণিতিক সমস্যা থাকে। তাই বিভিন্ন স্বাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে নমুনা প্রশ্নপত্র ঘড়ি ধরে অভ্যাস করছি।
জীবনবিজ্ঞান: পাঠ্যপুস্তক ভালোভাবে পড়ার পাশাপাশি চিত্রাঙ্কন ও চিহ্নিতকরণ অভ্যাস করেছি। সংজ্ঞা ও উদাহরণের ওপর জোর দিয়েছি। বিভিন্ন প্রয়োগমূলক প্রশ্ন আস্বাদন ও সময় অনুযায়ী পরীক্ষা দিতে নমুনা প্রশ্নপত্র সমাধান অনুশীলন করছি।
ভূগোল: পাঠ্যপুস্তক খুঁটিয়ে পড়ার সঙ্গে বইয়ে উল্লিখিত সব স্থানকে মানচিত্র চিহ্নিতকরণ অভ্যাস করেছি। এছাড়া ঘড়ি ধরে পরীক্ষা দেওয়া অভ্যাস করছি।
ইতিহাস: বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তক খুঁটিয়ে পড়েছি। ঘড়ি ধরে নমুনা প্রশ্নপত্র অনুশীলন করছি। ইতিহাস বইয়ের উল্লিখিত স্থানগুলিকে মানচিত্রে চিহ্নিতকরণ অভ্যাস করেছি।
এভাবে আমি পড়া ও লেখা উভয়কেই সমান ছন্দে চালিয়ে যাচ্ছি।
মঞ্জিষ্ঠা মাইতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী,
সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল
সময় ধরে প্রশ্নপত্র সলভ করছি
গত বছর থেকে লকডাউনের কারণে পড়াশোনায় বেশ কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। স্কুলে গিয়ে যে পড়াশোনাটা হতো সেটা অনলাইনে ভালোভাবে হয়নি। তবুও চেষ্টা করেছি বিষয়গুলিকে ভাগ করে দু’ ঘণ্টা করে করে পড়তে। যেমন বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস সকালে দুই ঘণ্টা করে আর বিকেলে ভূগোল, জীবনবিজ্ঞান, ভৌতবিজ্ঞান দু’ঘণ্টা করে পড়ছি। অঙ্কের ক্ষেত্রে নিয়ম করে তিন ঘণ্টা সময় রাখছি। এছাড়াও বিভিন্ন সহায়ক বইয়ের সাহায্য নিচ্ছি। অঙ্ক সহায়ক পাঠের অঙ্কগুলো বার বার করে কষে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করছি। আর সব বিষয়ের ক্ষেত্রেই সময় ধরে প্রশ্নপত্র সলভ করছি।
ফিরদোস আফরিন, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, চেতলা গার্লস হাইস্কুল
প্রস্তুতির বাড়তি সময় কাজে লাগাতে হবে
এভাবে প্রায় বছরভর স্কুলে না গিয়ে একদিন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাব তা কখনও ভাবিনি। যাইহোক, জুন মাসে মাধ্যমিক পরীক্ষার রুটিন পেয়ে কিছুটা আশ্বস্ত হই। নতুন উৎসাহে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। এই সময়ের মধ্যে আমার মনে হয়েছে, যা হয়ে গিয়েছে তাকে নিয়ে না ভেবে আমাদের সামনের দিকে তাকানো দরকার। মাধ্যমিকের সিলেবাস কমেছে, কাজেই ভার কমেছে। সেটাকেই গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করতে হবে। আমাদের স্কুলে টেস্ট পরীক্ষার মতো করেই ‘মক টেস্ট’ হয়েছে কিছুদিন আগে। বড় পরীক্ষার আগে, এভাবে নিজেদের প্রস্তুত করে নেওয়াটা খুব দরকার। এখন আমাদের দরকার একটানা মনোযোগ দিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া, যাতে খামতি পূরণ হয় ও এই দীর্ঘসময় যথাযথ কাজে লাগানো যায়।
নবোদিত দাস, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী,
বালিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখছি না
এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ৩০-৩৫ শতাংশ সিলেবাস কমে গিয়েছে। আগামী জুন মাসে পরীক্ষা। পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অনেকটাই অতিরিক্ত সময় পাওয়া গিয়েছে। যেহেতু শারীরিক দূরত্ববিধি মানতে হবে, তাই কোনও বিষয় বোঝার থাকলে আমি স্যারেদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল মিট বা জুম-এর মাধ্যমে সেসব বুঝে নিচ্ছি। স্যারেদের থেকে জেনে নেওয়া সেই কথাগুলিকেই কাগজ কলমের মাধ্যমে বাস্তব রূপ দিচ্ছি। আর মন দিয়ে খুঁটিয়ে টেক্সট বই পড়ছি। টেস্ট পেপারের প্রশ্নপত্র সমানতালে ঘড়ি ধরে সমাধান করছি। মোটামুটি সারাদিনে ৭-৮ ঘণ্টা পড়াশোনা করি। তবে হাতে অনেক সময় আর পড়ার বিষয়বস্তু তুলনায় কমে গেলে সব থেকে বড় সুবিধে যেটা হয়, সেটা হল, যখন যেমন খুশি তেমন পড়াশোনা করা যায়, আর তার মজাটাই আলাদা। যেমন সিলেবাসে ত্রিকোণমিতি বাদ পড়েছে বলে তাকে তো আর শেখার তালিকা থেকে বাদ রাখা যাবে না। সে লাগবেই। সেটা এখনই শিখে রাখা যায়। বাড়িতে মোটামুটি দেড়বছর ধরে পড়াশোনা তাও আবার মাধ্যমিকের মতো পরীক্ষার জন্য, এ এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। বাংলা ইংরেজি নানাভাষার কত বই পড়ার অঢেল সময়।
অনুষ্টুপ কুণ্ডু, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী,
বরানগর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম উচ্চ বিদ্যালয় (উঃ মাঃ)
রুটিন মেনে পড়াশোনা করছি
মাধ্যমিক জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। করোনা পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ে আমাদের সিলেবাস শেষ হয়নি। দশম শ্রেণির পড়াশুনা শুরু হতেই স্কুল বন্ধ। অনলাইন ক্লাসে অনেক কিছু অসুবিধে হয়েছে। তাই আমি নিজের রুটিন নিজেই বানিয়েছি। প্রতিটি বিষয় পড়ার জন্য দু’ঘণ্টা সময় নিয়েছি। সব বিষয়ের খাতা আলাদা আলাদা করেছি। বড় ও ছোট প্রশ্নের খাতা আলাদা। একটি অধ্যায় শেষ হলেই বাংলা, অঙ্ক, ইংরেজি, ভৌতবিজ্ঞান, জীবনবিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোলের প্রশ্ন ও উত্তর লিখেছি। সেই অধ্যায়টাকে রাফ খাতায় পরীক্ষা দিয়েছি। মা ও বাবা সেই উত্তর ঠিক করেছেন লাল কালিতে। ঘড়ি ধরে পরীক্ষা দিয়েছি। তবে অঙ্ক পরীক্ষা দুপুরে দিয়েছি। আমি খুব সকালে পড়তে বসি। রাত দশটায় ঘুমোতে যাই। এবার মাধ্যমিক দেবার জন্য অনেক বেশি সময় পাচ্ছি। তাই পুরো সময়টাকে বই পড়ার কাজে লাগাচ্ছি।
সাবিনা খাতুন, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুল (উঃ মাঃ)
04th April, 2021