কয়েক মাস ধরেই শুরু হয়ে গিয়েছে পড়ার ম্যাজিক। ম্যাজিশিয়ান সোমনাথ দে পড়াশোনাকে থিম করে ম্যাজিক শেখাচ্ছেন তোমাদের। লেখাপড়ার বিষয়ের মধ্যে থেকেই এবারের জন্য বাংলা বিষয়টিকে বেছে নিয়েছেন ম্যাজিশিয়ান। একটা নয়, বাংলা ভাষার অক্ষর ও শব্দ সাজিয়ে গুছিয়ে দু-দু’খানা  ম্যাজিক তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। তা দেখলে তোমাদের বাংলার প্রতি আগ্রহ আরওই বেড়ে যাবে। শিখবে নাকি ম্যাজিক দুটো?

ম্যাজিক ১
একটা ব্যানারের আকারে কাটা লম্বাটে কাগজ নিয়ে হাজির হয়েছেন ম্যাজিশিয়ান। তাতে বড় বড় হরফে লেখা সহজ পাঠ কে লিখেছেন? প্রশ্ন পড়ে স্বাভাবিকভাবেই অবাক হয়েছ তোমরা। এমন সহজ প্রশ্ন করেছেন ম্যাজিশিয়ান যে অবাক হওয়ারই কথা। তোমাদের মুখের হাবভাবেই সেই বিস্ময় প্রকাশিত। বিস্ময় দেখে ম্যাজিক রাখার সামগ্রী সাজানো টেবিলের ওপর ব্যানারটা ফেলে দিলেন ম্যাজিশিয়ান। তারপর বললেন, ‘প্রশ্নটা সহজ হয়ে গেল না?’ তোমরাও সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠলে হ্যাঁ বলে। এবার ম্যাজিশিয়ান আবারও ওই ফেলে দেওয়া ব্যানারটা তুলে নিলেন হাতে। আর অবাক কাণ্ড এবার কোনও এক জাদুবলে লেখা প্রশ্নটা উধাও হয়ে গিয়েছে কাগজ থেকে। বদলে সেখানে উঠে এসেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি! তোমাদের চোখে আবারও বিস্ময় স্পষ্ট। হাসতে হাসতে ম্যাজিশিয়ান মশাই তখন বললেন, ‘কেমন ম্যাজিক দেখালাম বলো?’
পদ্ধতি: আসলে খেলাটা কিন্তু মোটেও শক্ত নয়। কয়েকটা জিনিস শুধু হাতের কাছে মজুত রাখতে হবে। তাহলে অনায়াসেই এই খেলা দেখানো যাবে। প্রথমত ব্যানার স্টাইলে দুটো কাগজ একই মাপে কেটে রাখতে হবে। তার একটায় বড় হরফে প্রশ্ন লেখা থাকবে, ‘সহজপাঠ কার লেখা?’ আর অন্যটায় বড় একটা রবি ঠাকুরের ছবি আটকানো থাকবে। এই দ্বিতীয় ব্যানারটা সকলের চোখের আড়ালে উল্টো করে ম্যাজিকের সামগ্রীওয়ালা টেবিলে ফেলে রাখতে হবে। আর তার পিছন দিকে ম্যাজিকাল টেপ সেঁটে রাখতে হবে। এবার প্রশ্ন লেখা কাগজটা যখন সকলের সামনে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাবে তখন খেয়াল রাখবে দ্বিতীয় কাগজটা যেন কারও চোখে না পড়ে। এরপর প্রথম কাজটা উল্টো করে টেবিলে রাখা কাগজের ওপর ফেলে দেবে। তখন ম্যাজিকাল টেপে দুটো কাগজ আটকে যাবে। তারপর যখন তুমি কাগজটা তুলবে তখন রবীন্দ্রনাথের ছবির দিকটা সামনে উঠে আসবে। সবাই ভাববে লেখা মুছে ছবি হয়ে গিয়েছে। 

ম্যাজিক ২
একটা চৌকো কাগজ তাতে ‘আমাদের ছোট নদী’ ছড়ার প্রথম চারটে লাইন আংশিকভাবে লেখা রয়েছে। ম্যাজিশিয়ান সেই কাগজটি তোমাদের ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন আর বলছেন তোমাদের বাকি লাইনগুলো ভর্তি করতে। ছড়া তো তোমাদের সকলেরই মুখস্থ। তোমরা গড়গড় করে বলে দিচ্ছ লাইনগুলো। এবার ম্যাজিশিয়ান একটা যন্ত্র বার করলেন। নাম ম্যাজিক প্রেস। তোমাদের বললেন ওই ম্যাজিক প্রেসের সাহায্যে তিনি ছড়ার লাইনগুলো চোখের নিমেষে সম্পূর্ণ করে দেবেন। বলেই ম্যাজিক প্রেসের ভেতর দিয়ে আংশিক লেখা কাগজটা ঢুকিয়ে দিলেন। আর তারপর ম্যাজিকের মন্ত্র পড়ে ম্যাজিক প্রেসে হাত ঢুকিয়ে যে কাগজটা বার করলেন তাতে সত্যিই ছড়ার চারটি লাইনই সম্পূর্ণভাবে লেখা। পদ্ধতি: আসলে দুটো সমান মাপের কাগজে একইভাবে ছড়ার চারটি লাইন লিখতে হবে। একটিতে লাইনগুলো আংশিক লেখা থাকবে অন্যটিতে সম্পূর্ণ। এবার সম্পূর্ণ লেখা কাগজটি আগে থাকতেই ম্যাজিক প্রেসে ঢুকিয়ে রাখা হবে। আর আংশিক লেখা কাগজটি সবার সামনে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখানো হবে। এরপর যখন ম্যাজিক প্রেসের ভেতর কাগজটা ঢোকাবে তখন আংশিকটা রেখে সম্পূর্ণ কাগজটা বার করে আনবে। সবাই দেখে ভাববে সত্যিই ম্যাজিক প্রেসে কাগজ ছেপে বেরল বুঝি।
ম্যাজিক প্রেস বানানোর জন্য একটা ব্যাগ নিতে হবে। তার ওপর ও নীচ দু’দিকই খুলে দিতে হবে। তারপর ব্যাগের ভেতরে একটা লুকোন খাপ তৈরি করতে হবে। এবার ওই খাপের ভেতর সম্পূর্ণ ছড়া লেখা কাগজটি আগে থেকে ঢুকিয়ে রাখতে হবে। পরে যখন আংশিক লেখা কাগজটা ঢোকাবে তখন সেই খাপে ওটা রেখে আগেরটা বার করে আনতে হবে। ব্যাস, সবাই চমকে যাবে।