Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ডক্টর মিশ্র
নন্দিনী নাগ

সল্টলেকে ঝাঁ-চকচকে চেম্বার, একতলা একটা ফ্ল্যাটের পুরোটা নিয়ে। সাদা পাথরের তিন ধাপ সিঁড়ি ডিঙিয়ে কাঠের জাঁকালো সদর দরজা। সেই দরজা পেরিয়ে ভেতরের হলঘরে সোফার মধ্যে শরীর ছেড়ে দেওয়ার পর মিসেস দত্তের মনে ডাক্তারবাবুর প্রতি বেশ সমীহ জন্মাল। সঙ্গে আসা মেয়েকে বললেন, ‘এই না হলে বড় ডাক্তারের চেম্বার! এবার দেখিস, আমার একটা ঠিকঠাক চিকিৎসা হবে।’
‘কী করে বুঝলে?’
‘নামটা দেখছিস না! ‘মিশ্রা’। মনে হচ্ছে অবাঙালি। বাঙালিগুলো ডাক্তারি মোক্তারি যা-ই পড়তে যাবে, কলেজে গিয়েই পার্টি পলিটিক্স করবে। ওভাবে কি আর পড়াশোনা হয়? তাই ডাক্তারে রোগ সারাতে পারে না, মোক্তারে মামলা জেতাতে পারে না। আর ওটা মিশ্রও হতে পারে।’
আরও কিছু মতামত পেশ করতে চাইছিলেন মিসেস দত্ত, কিন্তু হাতের পাতায় একটা চিমটি খেয়ে আপাতত উদগত ভাষণ সংবরণ করতে বাধ্য হলেন। মেয়ে চিমটি দিয়ে ব্রেক লাগানোর পর সতর্কবার্তাও দিল, ‘পাবলিক যদি তেড়ে আসে মা, আমি কিন্তু তোমাকে চিনতে পারব না।’
রিসেপশন থেকে ডাক এল বলে মেয়ের কথার সমুচিত জবাব দেওয়া হল না মিসেস দত্তের। সুবেশা তরুণীটির হাতে হাজার টাকা জমা দিয়ে চারপাতার ফর্ম হাতে করে নিজের সিটে ফিরে এলেন তিনি। কোনওরকমে একটা পাতা ভর্তি করে ফর্মখানা মেয়ের হাতে গছিয়ে দিলেন মিসেস দত্ত।
‘বাপ রে বাপ! কবে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছি। আর এরা এখন মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের কারণ লিখতে বসিয়ে দিয়েছে। পরীক্ষার খাতায়ও কোনওদিন এত লিখতে হয়নি।’
মেয়ে আর কিছু না বলে চুপচাপ ফর্ম ফিলআপ করতে লাগল, আর মা পাশের মহিলার সঙ্গে গল্প শুরু করলেন।
—আপনি কি আজ প্রথম?
—না। মাসখানেক আগে এসেছিলাম কত্তাকে নিয়ে। আজ অবশ্য নিজের জন্য এসেছি।
—ওহ। আপনার কত্তা ভালো আছেন?
—হ্যাঁ। ডক্টর মিশ্র ওঁকে আর এক ডাক্তারবাবুর কাছে পাঠিয়েছিলেন। তাঁর ওষুধ খেয়ে এখন সুস্থ। তাই কত্তাই জোর করে আমাকে এখানে পাঠালেন।
—যাক, তাহলে আমার বোন ঠিক জায়গাতেই পাঠিয়েছে। বোন বলল, এতদিন ধরে ভুগছিস দিদি, এত ডাক্তারবদ্যি করলি, একবার কষ্ট করে ডাক্তার মিশ্রাকে দেখিয়ে আয়, ফল পাবি। তাই সেই চুঁচড়ো থেকে এতদূর এসেছি।
—ভালো করেছেন। তা আপনার সমস্যাটা কী?
—আর বলেন কেন! হাত নিয়ে যা ভুগছি! কাজের হাত, এদিকে আঙুলগুলো মুঠো করতে পারি না। অনেক চিকিৎসা করালাম, সারল না। বোনের কথায় অনেক আশা নিয়ে এসেছি এখানে।
—কিন্তু উনি তো...।
রিসেপশন থেকে ডাক এসে যাওয়ায় পার্শ্ববর্তিনীর বাকি কথাটুকু আর শোনা হল না মিসেস দত্তের।
রিশেপসন থেকে পাঠানো ঘরটাতে ঢুকে ভীষণ হতাশ হলেন মিসেস দত্ত। তিনি আশা করেছিলেন, এত অভিজ্ঞ একজন ডাক্তার, যাঁর জন্য এত দূর থেকে আসা, তিনি নিশ্চয়ই কোনও বয়স্ক মানুষ হবেন। মাথায় থাকবে পাকা চুল। অবশ্য কাঁচায় পাকায় মেশানো হলেও মেনে নেওয়া যাবে। চোখে চশমা, বেশ কলেজের প্রিন্সিপাল নিদেনপক্ষে স্কুলের হেডমাস্টার গোছের চেহারা হবে। চেহারায় বেশ বিধান রায় সুলভ ভাব থাকবে! যাঁকে দেখেই আঙুলগুলো বিনয়ে অর্ধেক নুইয়ে পড়বে। বাকি অর্ধেক না হয় চিকিৎসার পর মাথা নোয়ালেই হবে। অথচ এই ঘর আলো করে বসে আছে এক হাল ফ্যাশানের ছুকরি! ডায়েটের চক্করে বেচারার চেহারা পেন্সিলের মতো। চুলগুলো পার্লারের পাল্লায় পড়ে খ্যাংরাকাঠি। নাকের ডগায় একটা চশমা থাকার কথা ছিল বটে, তবে সে আপাতত মাথায়, চুল সামলাচ্ছে। হাজার টাকা জমা দেওয়া না হয়ে গেলে মিসেস দত্ত এমন চেহারার ডাক্তার দেখে অবধারিত দরজামুখো হতেন না। কিন্তু এখন চার পাতার ফর্মটা মেয়েটার বাড়ানো হাতে দিতে বাধ্য হলেন।
মেয়েটা এমনভাবে হুমড়ি খেয়ে পড়ল ফর্মটার ওপর যেন পরীক্ষার পড়া মুখস্থ করছে। রোগীর দিকে ফিরেও দেখল না। বাধ্য হয়ে রোগী নিজের থেকেই দুঃখের কথা বলতে শুরু করলেন। ব্যথার ইতিহাসটুকু বলা শেষ করে ভূগোল শুরু করতে যাবেন, মেয়েটা ভুরুজোড়ার বাঁক আরও তীক্ষ্ণ করে বলল, ‘এসব কথা আমাকে নয়, ডক্টর মিশ্রকে বলবেন।’
‘ওহ। তুমি তিনি নও?’ হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন মিসেস দত্ত।
‘আমি ওঁর জুনিয়র।’ মিস পেন্সিল ফর্ম দেখে দেখে কম্পিউটারে ডেটা ভরতে লাগল।
এক জুনিয়রের সঙ্গে মোলাকাত শেষ করার পর আবার অপেক্ষা। এবারে অন্য লাউঞ্জে। কিছুক্ষণ পর আবার ডাক পড়ল, এবারও আর এক জুনিয়রের ঘরে। সেই করিৎকর্মা ছোকরা কোনও কথা বলার অবকাশ না দিয়ে ঝটপট উচ্চতা, ওজন মাপতে লাগল।
দত্তগিন্নির মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল, ‘তুমি ডাক্তার না দর্জি?’
‘আমি জুনিয়র ডক্টর মিশ্র। সিনিয়র আমার বাবা।’  
ছোকরার কথাতে মিসেস দত্তের পি সি সরকার সিনিয়র, জুনিয়রের কথা মনে পড়ে গেল। এবার তাঁর হাত ম্যাজিকের মতো সেরে যাবে, এই ভরসা তাতে আরও দৃঢ় হল। ইতিমধ্যে জুনিয়র মিশ্র প্রেশার মাপতে শুরু করে দিয়েছে।
‘আমার তো সমস্যা আঙুল ভাঁজ করা নিয়ে, প্রেশার মেপে কী হবে বাবা?’
‘প্রেশারটাই তো আসল মাসিমা। প্রেশার থাকলে মোরগে ডিম দেয়, সাদা খাতাতে নম্বর পড়ে, আর সোজা আঙুল বেঁকবে না!’
দত্ত গিন্নি হতবাক। এতখানি বয়স হল, প্রেশারের সঙ্গে মানুষের এমন হাড়ে-হাড়ে সম্পর্কের কথা তিনি এর আগে কখনও শোনেনইনি। এখানে এসে যত দেখছেন ডক্টর মিশ্রের ওপর তাঁর শ্রদ্ধা ভক্তি তত বেড়ে যাচ্ছে।
তিনখানা ছাঁকনিতে ছাঁকার পর অবশেষে ডাক এল ডক্টর মিশ্রর খাস দরবারে। বড় একটা ঘরের ঠিক মাঝে পাতা বিরাট টেবিলের ওপিঠ থেকে ম্যাজিশিয়ানের ভঙ্গিতে তিনি বললেন, ‘ললিতা দত্ত, বয়স ছেচল্লিশ। বসুন।’
আপ্লুত মিসেস দত্ত চেয়ারে বসে সবেমাত্র তাঁর রোগের বিবরণ শুরু করেছেন, ডক্টর মিশ্র তাকে থামিয়ে দিলেন।
‘আমার ল্যাপটপে সব আপলোডেড হয়ে গিয়েছে। আপনার প্রবলেম আমি জানি। আর কিছু বলতে হবে না।’
খসখস করে প্রেসক্রিপশন লিখতে লাগলেন ডাক্তারবাবু।
‘হাতটা একবার দেখবেন না?’
‘ইনি দেখবেন।’ প্রেসক্রিপশনটা ললিতা দত্তের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে ডাক্তার মিশ্র বললেন, ‘আপনাকে যেতে হবে ডক্টর শ্যামসুখার রিস্ট অ্যান্ড পাম ক্লিনিকে। ওখানে চিকিৎসা হলেই আপনি পুরো সেরে যাবেন। যোগাযোগের ডিটেইলস দিয়ে দিলাম। রিসেপশনে এই কাগজটা দেখালে অ্যাপয়েনমেন্ট করে দেবে।’
....
সতেরো নম্বরে নাম ছিল রমাপদর। সপ্তাহে মাত্র দু’দিন এই ক্লিনিকে বসেন ডাক্তারবাবু, তাই ভিড়টা একটু বেশিই হয়। তা সত্ত্বেও রমাপদ এসেছে এবং তিন ঘণ্টা ধরে বসে আছে। কারণ ওর পেটের রোগটা কিছুতেই সারছে না। হোমিওপ্যাথি, অ্যালোপ্যাথি, বাবাজিপ্যাথি— কোনও কিছুই বাদ যায়নি। কিন্তু পেটটা কব্জায় আসছে না কিছুতেই। প্রথম প্রথম শুধু শব্দ ছিল। এখন কানকে বিরাম দিয়ে হতচ্ছাড়া পেট নাককে পাকড়েছে। একমাত্র এই কারণে বউ বহুদিন আগে বিছানা আলাদা করেছে। এখন তো ঘরও আলাদা। শুধু কি আর বাড়িতে একঘরে রমাপদ! নিজের পরিপাকতন্ত্রের এমন বিমাতৃসুলভ আচরণের কারণে তিনি বন্ধুবান্ধব, আড্ডা সবই ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। অসামাজিক হয়ে যাচ্ছেন রমাপদ। লোকজনের সংসর্গ ত্যাগ করে সমাজ মাধ্যমেই অবসর সময়টা কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। আর সেখান থেকেই ডক্টর মিশ্রের সন্ধান পাওয়া।
তিনদফা ইন্টারভিউয়ের চাপ সামলে ডক্টর মিশ্রের চেম্বারে ঢোকার আগে ওয়াশরুমে ঢুকে বেশ করে পারফিউম মেখে নিলেন রমাপদ। পারফিউম হল সেফ গার্ড। মা গন্ধেশ্বরীর নাম নিতে নিতে চেম্বারে ঢুকলেন তিনি। ঢুকেই চমকে গেলেন।
‘আরে! তুই প্রদীপ না?’
‘তাই তো আলো জ্বেলে বসে আছি। তুই তো রমা...! ঠিক চিনেছি।’
কলেজে বন্ধুরা তার নামের ‘পদ’ অংশটি বিকৃত করে খ্যাপাত। কিন্তু এখন বিস্ময় তাকে এত বেশি পেড়ে ফেলেছে যে, ওসব ফচকেমি গায়ে মাখলেন না। সোজাসাপটা প্রশ্ন করে বসলেন, ‘তুই তো বাঁকুড়া কলেজে আমার সঙ্গে ইতিহাস অনার্স পড়তিস! তুই ডাক্তার হলি কী করে?’
‘তোর সঙ্গে ইতিহাসে অনার্স পড়লে কি ডাক্তার হওয়া যায় না? অনার্সের পর মাস্টার্স করলাম, তারপর থিসিস লিখলাম, পিএইচডি ডিগ্রি পেলাম। নামের আগে ডক্টর বসল। ডক্টর প্রদীপ মিশ্র। সংক্ষেপে ডক্টর মিশ্র। এরমধ্যে অসুবিধা কোথায়?’
হয় প্রদীপ পাগল হয়ে গিয়েছে নয়তো ওর ওপরে শয়তান ভর করেছে, মনে মনে ভাবলেন রমাপদ।
‘পিএইচডি আমাকে শেখাস না প্রদীপ। আমি অতটাও মূর্খ নই। ডক্টর অব ফিলোজফি ডিগ্রি দিয়ে তুই ডক্টর অব ফিজিওলজির কাজ চালাচ্ছিস! এই জালিয়াতি বিজনেসের জন্য তোকে তো পুলিসে দেওয়া দরকার!’
প্রদীপ মিশ্র হাসলেন। নিরুদ্বেগ গলায় রমাপদকে বললেন, ‘ঠান্ডা হও বন্ধু। তারপর আমাকে বুঝিয়ে দাও কোন জায়গাতে আমি জালিয়াতি করছি। নামের আগে ডক্টর বসানোর আইনি অধিকার আমার আছে। বিশ্বাস না হলে সার্টিফিকেট কথা বলবে। আর বাইরে যে বোর্ড লাগানো, তাতে লেখা সমস্ত জটিল রোগ নিরাময়ে সুপরামর্শ দেওয়া হয়। আমি  চিকিৎসাও করি না, ওষুধও দিই না।’
‘কিন্তু রোগীরা তো চিকিৎসা করাতেই আসে! তারা কি তোর কথার অত মারপ্যাঁচ বোঝে?’
‘তাতেই বা জালিয়াতি হয় কী করে? ডিগ্রিধারী নির্ভেজাল ডাক্তারেরা রেফার করেন না? রোগীরা হন্যে হয়ে এ ডাক্তার ও ডাক্তার করে বেড়ায় না? কোথায় গেলে সঠিক চিকিৎসা হবে তার সন্ধান পেতেই তাদের কত সময় কেটে যায়, আর তাতে রোগও বেড়ে যায়। ধর তোর পেটে খুব ব্যথা, নড়তে চড়তে পারছিস না। বহু চেষ্টা করে একজন বড় ডাক্তারের অ্যাপয়েনমেন্ট পেলি। একগাদা টাকা দিয়ে, একটা দিন ছুটি নিয়ে ডাক্তার দেখালি। তারপর ডাক্তার তোকে বলল, আপনার পেট ব্যথার উৎসটা দেখছি ক্ষুদ্রান্ত্রে। আমি পাকস্থলী স্পেশালিস্ট। এটা আমার কেস নয়। তখন? তার চাইতে আমি সমস্যাটা বিচার করে সঠিক জায়গায় পাঠিয়ে দিচ্ছি। লোকের পয়সা, সময় সবই বাঁচছে।’
‘তোর পরামর্শ যে সঠিক হবে তার কি গ্যারান্টি আছে?’
‘আরে বাবা বলতে পারিস আমি এব্যাপারটা গুলে খেয়েছি। বহুবছর ধরে ডাক্তার আর রোগ নিয়ে নাড়াঘাঁটা করে করে আজকে এই জায়গায় এসেছি। বাবা, মা আর গিন্নির জন্য এ জীবনে এতরকম ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়েছে যে, এ ব্যাপারে আমার আর একটা থিসিস হয়ে যায়। ব্যস ওই জ্ঞানের পুঁজি ব্যবসায় লাগিয়ে দিলাম। আর বাকিটা হল রেগুলার আপ টু ডেট থাকা, যাকে বলে রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট। এটা নিয়ে চাপ নেই, মেয়ে এটা ভালোই পারে।’
‘তুই তো দেখছি নামের মর্যাদা রেখেছিস। নানা কিসিমের ডাক্তার গুলে খেয়ে পারফেক্ট মিশ্র পদার্থ হয়ে উঠেছিস। তা মেয়েও কি এই লাইনে?’
‘ছেলে, মেয়ে দু’জনেই। ওই যে আগের দুটো ঘরে যে দু’জন জুনিয়র ছিল, ওরাই তারা। একেবারে পারিবারিক ব্যবসা।’
রমাপদ চুপ করে কয়েক সেকেন্ড ভাবলেন। সত্যিই তো, প্রদীপের কারবারে কোনও জালিয়াতি নেই। নামের আগে ‘ডক্টর’ লেখা তার ন্যায্য অধিকার। এটাকে যদি লোকজন ‘ডাক্তার’ ভাবে, তবে সেটা তাদের সমস্যা। তাতে প্রদীপের কোনও দায় নেই। আর সে তো চিকিৎসা করছে না। কোথায় গেলে চিকিৎসা পাওয়া যাবে সেটাই বাতলে দিচ্ছে। তাহলে তার জোচ্চুরিটা কোথায়? পরামর্শ দেওয়াটা তো আর দোষের নয়। বন্ধুর বুদ্ধির প্রশংসা না করে পারেন না রমাপদ।
‘তার মানে রোগীদের জন্য তুই  কনসালটেন্সি খুলে বসেছিস, দারুণ আইডিয়া কিন্তু। একদম সময়ের সঙ্গে তাল মেলানো আইডিয়া। ভাববার মতো ব্যাপার বটে।’
‘তো ভাব। যত ইচ্ছে ভাব, তবে বাইরে গিয়ে। দয়া করে এবারে আমার সামনের চেয়ারটা ফাঁকা কর, বাইরে অনেকে অপেক্ষা করছে।’
‘কিন্তু আমার সমস্যাটা—’
‘তোর সমস্যার সমাধান হলে তো তোর নামটাই আর থাকে না রে। এই বয়সে নামহীন হওয়াটা কি ভালো?’
রমাপদর হাঁড়িপানা হয়ে যাওয়া মুখকে তোয়াক্কা না করে ফিচেল হাসি হেসে ডক্টর মিশ্র টেবিলে রাখা ঘণ্টিটাতে চাপ দিয়ে হাঁকলেন, ‘নেক্সট!’
12th  January, 2025
অস্তরাগ
সঞ্জয় রায়

অস্তগামী সূর্যের রক্তিম আভা নদীর জলে গলে গলে যাচ্ছে। বসন্ত বাতাসে চরাচর জুড়ে গোধূলির অদ্ভুত বর্ণচ্ছটায় প্রকৃতি যেন মায়াময়। চিত্রপটে স্যিলুট হয়ে বসে আছে দু’টি নরনারী। জীবনের প্রান্তদেশে পৌঁছে দু’টি মন পরস্পর খুঁজে পেয়েছে তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের অদ্ভুত মিল। বিশদ

05th  January, 2025
অতীতের আয়না: সাহেবি বড়দিন ও নিউ ইয়ার
অমিতাভ পুরকায়স্থ

কাজকর্ম শিকেয় তুলে পাঁচ দিন ধরে বাঙালির দুর্গোৎসব পালন যাঁরা বাঁকা চোখে দেখেন, তাঁদের আঠারো শতকের কলকাতা থেকে ঘুরিয়ে আনতে পারলে বেশ হতো। সে সময় শহরের সাহেব-মেমদের বড়দিন উপলক্ষ্যে খানা-পিনা-নাচ-গান ও কেনাকাটার হুল্লোড়ের মরশুম চলত দিন দশেক। বিশদ

05th  January, 2025
গুপ্ত রাজধানী: ইন্ডিয়া গেট
সমৃদ্ধ দত্ত

গরিব ও মধ্যবিত্তদের কাছে সেই আর্থিক শক্তি কোথায়! রবিবার অথবা ছুটির দিন কিংবা ন্যাশনাল হলিডে হলেই কোনও বৃহৎ শপিং মল অথবা মাল্টিপ্লেক্সে যাবে! অনেকক্ষণ মেনুকার্ড দেখার পর শেষ পর্যন্ত বরাবরের মতোই ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেন অর্ডার করার বিলাসিতাও যাদের থাকে না, তারা যাবে কোথায়? বিশদ

05th  January, 2025
কেউ দেখেনি
প্রদীপ আচার্য

নিরাপদর নিরাপদে থাকার সুখ উবে গেল। গ্রামের নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকার একটা আলাদা সুখ আছে। সেই সুখের মুখে আজ ঝামা ঘষে দিল একটা জানোয়ার। সবাই সাপের ভয় দেখিয়েছে। বিশদ

29th  December, 2024
গুপ্ত রাজধানী: হোলি ট্রিনিটি চার্চ
সমৃদ্ধ দত্ত

দিল্লি মানেই ইতিহাসের গল্প। এর আনাচকানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থাপত্য। এরমধ্যে বেশ কয়েকটির খোঁজ এখন আর রাখেন না পর্যটকরা। ইতিহাসের সাক্ষ্য হয়ে গোপনেই পড়ে রয়েছে সেইসব স্থাপত্য। তারই খোঁজে গুপ্ত রাজধানী। বিশদ

29th  December, 2024
আজও রহস্য: রেস কোর্সের অশরীরী
সমুদ্র বসু

ভূত মানুন আর না মানুন, ভূত-প্রেত নিয়ে আগ্রহ কিন্তু সবার। আমাদের আশপাশের গ্রাম, শহর, মফস্‌সল থেকে শুরু করে খোদ কলকাতা শহরে এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে ব্যাখ্যার অতীত বিভিন্ন ঘটনা আজও ঘটে। সেই তালিকায় আছে কলকাতা রেস কোর্সেরও নাম। বিশদ

29th  December, 2024
চোর  মিনার

গম্বুজ। সমাধি। শহিদ স্তম্ভ। এসবই তো ইতিহাসের চিহ্ন হিসেবে সর্বত্রই  দেখা যায়।  কখনও মসৃণ বহিরঙ্গ। কখনও চিত্রাঙ্কন। আবার কোনও সময় ভাস্কর্যের নমুনা থাকে বহির্গাত্রে। কিন্তু এই মিনারের স্তম্ভগাত্রে এত গর্ত কেন? মাটি থেকে সোজা উঠে গিয়েছে আকাশের দিকে। বিশদ

22nd  December, 2024
কলকাতা এক পরীর দেশ

আসলে আমরা খেয়াল না করলেও আমাদের চারপাশের হাওয়ায় এখনও দিব্যি নিঃশ্বাস নেয় আঠেরো-উনিশ শতকের কলকাতা। আর সেই পুরনো কলকাতার স্মৃতিকে ধরে রাখার অন্যতম প্রতীক হল— পরী।
  বিশদ

15th  December, 2024
লাল মন্দির

সমৃদ্ধ দত্ত
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লালকেল্লা ও লাল মন্দির। একটি জগৎ বিখ্যাত। অন্যটি স্বল্প খ্যাত। লাল মন্দিরের উচ্চতা তো কম নয়। লালকেল্লার সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে চাঁদনি চকের দিকে তাকালেই চোখে পড়ার কথা। অথবা সেভাবে পর্যটকদের দৃষ্টিগোচরই হয় না।
বিশদ

15th  December, 2024
ডাক দিয়েছে কোন সকালে
বিজলি চক্রবর্তী

হরি হে তুমি আমার সকল হবে কবে...।’ গলা ছেড়ে গানটা গাইতে গাইতে বিশ্বরূপ রান্নাঘরের দরজায় এসে দাঁড়াল। হাতের কাজ বন্ধ করে নবনীতা বিশ্বরূপের মুখোমুখি হল। বিশ্বরূপ গান বন্ধ করল না। নবনীতার চোখের মুগ্ধতা তাকে উৎসাহিত করে। বিশ্বরূপের গানের ভক্ত নেহাত কম নয়। বিশদ

15th  December, 2024
আদরের পিউ
কৌশানী মিত্র

অনির্বাণের কাল নাইট ছিল। সারারাত দুর্দান্ত পরিশ্রম গিয়েছে। জুনিয়র রেসিডেন্ট হিসেবে এই অদ্ভুত একটা আধা গ্রাম-আধা শহর মতো জায়গাটায় এসে থাকতে শুরু করেছে ও। এখানে আসার পর থেকেই সকাল-দুপুর-রাত কেমন গুলিয়ে যায় অনির্বাণের। বিশদ

08th  December, 2024
প্রতিশোধ
সাবিনা ইয়াসমিন রিঙ্কু

মাত্র ছ’মাসেই যে ফল পেয়ে যাবে ভাবতে পারেনি জয়তী! প্রদীপ্ত কি নিজেও ভাবতে পেরেছিল বাষট্টি থেকে চুরানব্বই হবে! বেশ লম্বা বলে বাইরের লোকরা পার্থক্যটা অতটা ধরতে না পারলেও জয়তী জানে পুরনো প্যান্টগুলো আর কোমর পর্যন্ত উঠতে চাইছে না। বিশদ

01st  December, 2024
বনের মানুষ

—মাস্টার, আজ ডিম বাদ দে, হামাদিগের ছেলে-মেয়েগুলান কেউ খাবেকনি রে!
—কেন?
—হামার সঙতে আসে ওই শর্বরী টুডুটা আছে না? উয়ার ছেলেটোর গায়ে ‘মায়ের দয়া’ বের হইচে। উয়ার লিগে হামাদের পাড়ার সবার মাছ-মাংস-ডিম খাওয়াটো বারণ আছে।
বিশদ

17th  November, 2024
কিছু কিছু সত্য
অংশুমান কর

বড়মা যখন খবরটা দিল তখন সুকমল শেভ করছিল। সকালটা তার খুবই তাড়াহুড়োয় কাটে। তখন এক মিনিটও মহার্ঘ। এক মিনিটের জন্যও এক-দু’দিন ও ট্রেন মিস করেছে। বাসে করে স্কুলে পৌঁছে দেখেছে প্রেয়ার শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রার্থনা শুরু হওয়ার পরে স্কুলে পৌঁছতে ওর খুব লজ্জা লাগে।
বিশদ

10th  November, 2024
একনজরে
দুর্গা বা কালী পুজো, আবার কখনও স্পোর্টসের নাম করে বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের পুলিস কর্মীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে টাকা। বেতন থেকেই সরাসরি এই টাকা চলে যাচ্ছে। এনিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ পুলিসের নিচুতলা। বিষয়টি কানে যাওয়ার পরই সক্রিয় হয়েছে রাজ্য পুলিসের শীর্ষ কর্তারা। ...

কয়েক বছর আগেও বার্সেলোনার আপফ্রন্টের প্রধান ভরসা ছিলেন লায়োনেল মেসি। আর্জেন্তাইন মহাতারকার উপস্থিতি প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের রাতের ঘুম কেড়ে নিত। তিনি দল ছাড়ার পর অনেকটাই দুর্বল ...

অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলকার চালককে গ্রেপ্তার করল হাবড়া থানার পুলিস। ধৃতের নাম শুভঙ্কর দে (৩০)। বৃহস্পতিবার তাঁকে বারাসত আদালতে তোলা হলে তিনদিনের ...

জোর করে ওয়ার্ডে ঢোকার চেষ্টা। বাধা দেওয়ায় নিরাপত্তারক্ষীকে মার। রায়গঞ্জ মেডিক্যালে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে রোগীর পরিবারের বচসায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রোগীর আত্মীয়ের মারে আঙুল ভাঙল নিরাপত্তারক্ষীর। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

অংশীদারি ব্যবসায় পারস্পরিক বিরোধ ও ব্যবসায় মন্দা ভাব। বিপণন কর্মীদের লক্ষ্য পূরণে বাধার যোগ। মনে ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১২৫৮: মঙ্গোলরা বাগদাদ নগরী অধিকার করে ও ধ্বংসযজ্ঞে লিপ্ত হয়
১৮৪১: বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গের নাম মাউন্ট এভারেস্ট রাখা হয়
১৮৯১: রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের একমাত্র গৃহীভক্ত রামচন্দ্র দত্তর মৃত্যু
১৯০৮: অভিনেতা, প্রযোজক তথা পরিচালক এল ভি প্রসাদের জন্ম
১৯১৭: অভিনেতা, প্রযোজক, পরিচালক রাজনীতিবিদ তথা তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এম জি রামচন্দ্রনের জন্ম
১৯৩০: শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী গওহর জানের মৃত্যু
১৯৪০: ভারতে ফুটবল খেলার জনক নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীর মৃত্যু
১৯৪২: মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা মহম্মদ আলির জন্ম
১৯৪৫: গীতিকার ও চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতারের জন্ম
১৯৪৫: জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত  চলচ্চিত্র পরিচালক রাজা মিত্রর জন্ম
১৯৫১: অভিনেত্রী বিন্দুর জন্ম    
১৯৫১: অভিনেতা সন্তু মুখোপাধ্যায়ের জন্ম
১৯৫৩: সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার, গীতিরকার তথা অভিনেতা অঞ্জন দত্তর জন্ম
২০১০: কমিউনিস্ট নেতা তথা পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর মৃত্যু 
২০১১: অভিনেত্রী গীতা দে-র মৃত্যু
২০১৪: অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৫.৫৮ টাকা ৮৭.৩২ টাকা
পাউন্ড ১০৩.৮৬ টাকা ১০৭.৫৫ টাকা
ইউরো ৮৭.২৬ টাকা ৯০.৬১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৮,৯০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৯,৩০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭৫,৩৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৯২,০০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৯২,১০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৩ মাঘ, ১৪৩১, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫। চতুর্থী ৫৭/৫০, শেষরাত্রি ৫/৩১। মঘা নক্ষত্র ১৫/৫৫ দিবা ১২/৪৫। সূর্যোদয় ৬/২৩/৫, সূর্যাস্ত ৫/১০/২৩। অমৃতযোগ রাত্রি ৭/৪৯ মধ্যে পুনঃ ৮/৩২ গতে ১০/৪১ মধ্যে পুনঃ ১২/৫০ গতে ২/১৭ মধ্যে পুনঃ ৩/৪৪ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৬/৫৫ গতে ৮/৪১ মধ্যে পুনঃ ৩/৪৩ গতে ৪/৩৬ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৭ গতে ১১/১৯ মধ্যে পুনঃ ৪/৩৬ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৯/৪ গতে ১১/৪৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/২৮ গতে ১০/৭ মধ্যে। 
৩ মাঘ, ১৪৩১, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫। চতুর্থী শেষরাত্রি ৫/৪৫। মঘা নক্ষত্র দিবা ১/৩৭। সূর্যোদয় ৬/২৬, সূর্যাস্ত ৫/১০। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪৬ মধ্যে ও ৮/৩১ গতে ১০/৪৪ মধ্যে ও ১২/৫৮ গতে ২/১৭ মধ্যে ও ৩/৫৭ গতে ৫/১০ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৮ গতে ৮/৫১ মধ্যে ও ৩/৪৩ গতে ৪/৩৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/৩৪ গতে ১১/২৫ মধ্যে ও ৪/৩৪ গতে ৬/২৬ মধ্যে। বারবেলা ৯/৭ গতে ১১/৪৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/২৯ গতে ১০/৮ মধ্যে। 
১৬ রজব।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
সইফের উপর হামলার ঘটনায় বান্দ্রা থানায় জবানবন্দি দিলেন করিনা

10:59:00 PM

গুয়াহাটিতে একটি বৈঠক করলেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা

10:29:00 PM

দিল্লিতে বিজেপির দপ্তরে বৈঠক শেষ করে ফিরছেন অমিত শাহ

10:03:00 PM

দিল্লিতে বিজেপির দপ্তরে বৈঠক শেষ করে ফিরছেন গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত

09:52:00 PM

আইএসএল: ম্যাচ ড্র, জামশেদপুর ১-মোহন বাগান ১

09:31:00 PM

রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে বিজেপির দায়ের করা মানহানির মামলায় স্থগিতাদেশ দিল কর্ণাটক হাইকোর্ট

09:21:00 PM