ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বাধায় চিন্তা ও উদ্বেগ। বেকারদের ভালো প্রতিষ্ঠানে কর্মপ্রাপ্তির প্রবল যোগ। ... বিশদ
ঋষয় ঊচু:
‘‘ত্বয়া খলু পুরাণানি সেতিহাসানি চানঘ।/ আখ্যাতান্যপ্যধীতানি ধর্মশাস্ত্রাণি যান্যুত।।’’
ঋষিগণ সূতকে সম্বোধন করছেন—‘হে অনঘ’ বলে, অর্থাৎ হে নিষ্পাপ! আমরা জেনে এসেছি পাপ হেতুই নিম্নকুলে জন্ম হয়। কিন্তু এখানে ঋষিগণ সে আইন মানছেন না। তার পরিবর্তে সূত শূদ্র হলেও তাঁকে নিষ্পাপ বলে আচার্যরূপে বরণ করছেন, তাই ‘অনঘ’ সম্বোধন।
এখন প্রশ্ন হল, ঋষিরা শ্লোকে কোথায় তাঁকে ‘আচার্য’ বলেছেন? এর উত্তর হল—সূত্র কর্তৃক ইতিহাস (রামায়ণ, মহাভারত) পুরাণ; (অষ্টাদশ পুরাণ) ও ধর্মশাস্ত্র (মনুসংহিতা ইত্যাদি) পঠিত কেবল নয় অধ্যাপিতও বটে, একথা ঋষিগণ বলেছেন—‘‘অধীতানি চ আখ্যাতানি।’’ বেদ অধ্যয়নে ত্রৈবর্ণিকের অধিকার, কিন্তু অধ্যাপনে কেবল ব্রাহ্মণের অধিকার। সেই সময় অধ্যাপক হতেন কেবল ব্রাহ্মণেরা, তাই তাঁরা গুরুস্থান পেতেন। সূতকে এখানে ‘অনঘ’ সম্বোধন দ্বারা ও তাঁর অধ্যাপনার কথা বলে, ঋষিরা তাঁকে আচার্যরূপে গুরুপদের মর্যাদা দিলেন। এখন পরপর দুটি শ্লোকে সূতের এই জ্ঞানভাণ্ডারের পিছনে যে বিদ্যাবংশের সম্প্রদায়শুদ্ধি আছে তাও দেখানো হচ্ছে—
‘‘যানি বেদবিদাং শ্রেষ্ঠো ভগবান্ বাদরায়ণঃ।/ অন্যে চ মুনয়ঃ সূত পরাবরবিদো বিদুঃ।।’’
‘‘বেত্থ ত্বং সৌম্য তৎ সর্বং তত্ত্বতস্তদনুগ্রহাৎ।/ ব্রূয়ুঃ স্নিগ্ধস্য শিষ্যস্য গুরবো গুহ্যমপ্যুত।।’’
এখানে ‘হে সৌম্য’ ও ‘হে সূত’ বলে সম্বোধন করা হল। সৌম্য অর্থ সাধু। ঋষিরা বলেছেন—হে সূত! ‘ত্বং বেত্থ তৎ সর্বং’—তুমি সেইসব জানো। কী সেইসব? ‘বেদ-বিদাং শ্রেষ্ঠো ভগবান্ বাদরায়ণঃ’—
বিদ্বজ্জন-শ্রেষ্ঠ ভগবান বাদরায়ণ বেদব্যাস, ও ‘অন্যে চ মুনয়ঃ’— অন্যান্য মুনিরা, ‘পরাবরবিদো বিদুঃ’—সগুণ ও নির্গুণ ব্রহ্ম সম্বন্ধে যা জানেন। অর্থাৎ এঁদের জ্ঞানভাণ্ডারের অধিকারী সূতমুনি। এখন প্রশ্ন হল— অন্য সকলকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সূতমুনিই জানলেন কী করে? উত্তরে বলা হল—‘তত্ত্বতস্তদনুগ্রহাৎ’ তাঁরা অনুগ্রহ করে সূতকে দিয়েছেন বলেই জেনেছেন। আদতে শাস্ত্র নিজে পড়ে জানা যায় না। গুরুর অনুগ্রহ ছাড়া শাস্ত্র কৃপা করে না। গুরুকৃপাই শাস্ত্র-কৃপারূপে দেখা দেয়। আরও প্রশ্ন ওঠে—বিশেষ করে সূতকেই বা এত অনুগ্রহ করার কারণ কি? এর উত্তরে ভাগবত একটি চমৎকার শব্দ প্রয়োগ করেছেন বিশেষণরূপে, সেইটির দ্বারা শিষ্যের অনুগ্রহ পাবার অধিকার বুঝিয়ে দিচ্ছে।