ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বাধায় চিন্তা ও উদ্বেগ। বেকারদের ভালো প্রতিষ্ঠানে কর্মপ্রাপ্তির প্রবল যোগ। ... বিশদ
বৃহস্পতিবার, ঘড়ির কাঁটায় তখন সাড়ে ১১টা। দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুর হাসপাতাল চত্বরে বসে চাকলার মৌসুমী মণ্ডল। তাঁর কোলে দু’বছরের কন্যাসন্তান। মেয়েকে শুইয়ে তার মাথায় হাত বোলাচ্ছেন মা। গা পুড়ছে জ্বরে। আর তার রক্তপরীক্ষা করানোর জন্য প্যাথলজির সামনে লাইন দিয়েছেন দিদিমা। মা বললেন, আমার জ্বর কমেছে। তবে, মেয়ের জ্বর কিছুতেই কমছে না। পাড়ার অনেকেই জ্বরে কাবু। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এদিকে, চাকলার ফারুক ইসলাম বলেন, বাড়িতে সবার জ্বর। একজনের ছাড়ছে তো অন্যজনের ধরছে। প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এমন অবস্থা। স্থানীয় চিকিৎসকদের দেখিয়েছিলাম। জ্বর কমছে না। তাই হাসপাতালে এসেছি। ডাক্তারবাবু বললেন, রক্ত পরীক্ষা করাতে। তাই লাইনে দাঁড়িয়েছি। চৌরাশির সুমন মণ্ডল বলেন, পাঁচদিনেও জ্বর কমছে না। মাথা যন্ত্রণায় ফেটে যাচ্ছে। হাত-পা কার্যত অবশ। দেগঙ্গার বিএমওএইচ কৃতি সাহা বলেন, যেখানে জ্বরে আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে সেখানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। উপযুক্ত পরীক্ষাও করানো হচ্ছে।
এদিকে, দেগঙ্গা ১ পঞ্চায়েতের সফিকুল মণ্ডল বলেন, পাঁচদিন ধরে ছেলে, আমি জ্বরে ভুগছি। ওষুধ খেয়েও জ্বর না কমায় হাসপাতালে এলাম। বাবা-ছেলে দু’জনেই রক্ত পরীক্ষা করাব। স্থানীয় সূত্রে খবর, হাড়োয়া, দেগঙ্গা জুড়ে জ্বর থাবা বসিয়েছে। ফলে হাসপাতালের টিকিট ঘর, বহির্বিভাগ, রক্তপরীক্ষা ও ওষুধ নেওয়ার জায়গায় দেখা গেল লম্বা লাইন। এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় গিয়ে লাইন দিতে কার্যত হিমশিম অবস্থা। কেউ জ্বর গায়ে আবার কারও বাড়ির লোক দিয়েছেন লাইন। পাশাপাশি হাসপাতালে দেখা গেল, ডেঙ্গু আক্রান্তরা রয়েছেন মশারি টাঙিয়ে। এনিয়ে সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা কম। গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি দেগঙ্গায় বাড়তি নজর দিয়ে বিশেষ দল তৈরি করে যু্দ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে। পুজোর আগে টানা বৃষ্টির জন্য ফের জ্বর শুরু হয়েছে। তবে, জ্বর হলে প্রত্যেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
স্থানীয়দের প্রশ্ন, যেভাবে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতে ফের ২০১৭ বা ২০১৮ সালের স্মৃতি ফিরে আসবে না তো? কেন না, ওই দুই বছরে ডেঙ্গু ও অজানা জ্বরে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল শতাধিক। নিজস্ব চিত্র