অর্থকড়ি প্রাপ্তির যোগটি বিশেষ শুভ। কর্ম সাফল্য ও চিন্তার অবসান। দেবারাধনায় মন। ... বিশদ
বাপ এক ছেলেকে কোলে নিয়েছে, আর এক ছেলে বাপের হাত ধরে মাঠ দিয়ে যাচ্ছে, যেতে যেতে একটা চিল দেখে, যে ছেলে বাপের হাত ধরেছিল সে হাত ছেড়ে আহ্লাদে হাততালি দিয়ে “বাবা কেমন পাখী” বলে চেঁচিয়ে উঠলো। কিন্তু হাত ছেড়ে দেওয়াতে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল, আর যে ছেলে বাপের কোলে ছিল, সেও চিল দেখে আনন্দে হাততালি দিতে লাগলো, কিন্তু পড়লো না, কারণ বাপ তাকে ধরে আছে। প্রথমটি পুরুষকার, শেষটি নির্ভর।
গুরু মিলে লাখেলাখ, চেলা না মিলে এক। উপদেষ্টা অনেক পাওয়া যায়, কিন্তু উপদেশ পালন করতে পারে, এমন লোক খুব কমই পাওয়া যায়।
সূর্য-কিরণ সব জায়গায় সমান হলেও জলের ভিতর, আরশিতে ও সকল রকম স্বচ্ছ জিনিসের ভিতর বেশী উজ্জ্বল দেখায়। ঈশ্বরের প্রকাশ সকল হৃদয়ে সমান হলেও সাধুদের হৃদয়ে বেশী প্রকাশ পায়।
সকল পিঠের এঁথেল এক চালের গুঁড়োয় তৈরী হয়, কিন্তু পুর ভেদে পিঠে ভাল-মন্দ হয়ে থাকে। সকল মানুষের শরীর এক জিনিসে গড়া বটে, কিন্তু হৃদয়ের পবিত্রতা অনুসারে ভাল-মন্দ হয়ে থাকে।
ধর্ম বিকৃত ভাব ধারণ করে কেন?
আকাশের জল নির্মল ও পরিষ্কার কিন্তু যখন ছাত ও নল দিয়ে বেরোয়, সেই রকম ঘোলা ও ময়লা হয়ে থাকে।
নুনের পুতুল, কাপড়ের পুতুল ও পাথরের পুতুলকে সমুদ্রে ফেলে দিলে নুনের পুতুল একেবারে গলে যায়, তার আর অস্তিত্ব থাকে না। কাপড়ের পুতুলে জল ঢোকে বটে, কিন্তু সে জলের সঙ্গে মেশে না, ইচ্ছা করলে তাকে জল থেকে ভিন্ন করা যায়। পাথরের পুতুলে জল কোন মতে ঢোকে না। মুক্ত জীব নুনের পুতুলের মতন, সংসারী জীব কাপড়ের পুতুলের সমান, আর বদ্ধ জীব পাথরের পুতুলের মতন।
সত্ত্ব, রজঃ ও তমঃ এই তিন রকম প্রকৃতিতে মানুষের ভিন্ন ভিন্ন স্বভাব হয়।
সংসারী সত্ত্বগুণীর স্বভাব—বাড়িটা এখানে ভাঙা, ওখানে ভাঙা—মেরামত করে না। ঠাকুরদালানে পায়রাগুলো হাগছে, উঠানে এখানে শেওলা পড়েছে, ওখানে শেওলা পড়েছে, হুঁশ নেই। আস্বাবগুলো পুরানো, ফিট্-ফাট্ করবার চেষ্টা নেই। কাপড় যা তাই একখানা হলেই হ’ল। লোকটি শান্তশিষ্ট, দয়ালু, অমায়িক, কারও কোন অনিষ্ট করে না।
রজোগুণীর স্বভাব—ঘড়ি, ঘড়ির চেন, হাতে দুটো তিনটে আংটি, বাড়ির আস্বাব খুব ফিট্-ফাট্। দেওয়ালে রাজপুত্রের ছবি, কোন বড়লোকের ছবি। বাড়িটা চুনকাম করা, কোনখানে একটুও দাগ নেই। নানা রকমের ভাল ভাল পোষাক; চাকরদেরও তাই। এম্নি এম্নি সব।
তমোগুণীর স্বভাব—নিদ্রা, কাম, ক্রোধ, অহঙ্কার এই সব ভাব বিশিষ্ট।
গুটিপোকা যেমন নিজের ঘরে নিজে বদ্ধ হয়, তেমনি সংসারী জীব নিজের ঘরে নিজেই বদ্ধ হয়। যেমন প্রজাপতি হলে ঘর কেটে বেরোয়, তেমনি বিবেক-বৈরাগ্য হলে সংসারী বদ্ধ জীব ঘর থেকে বেরুতে পারে।