অর্থকড়ি প্রাপ্তির যোগটি বিশেষ শুভ। কর্ম সাফল্য ও চিন্তার অবসান। দেবারাধনায় মন। ... বিশদ
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে উত্তর হাওড়া বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় তিন হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। একুশের ভোটে শাসকদল এই আসন নিজেদের দখলে রাখলেও সংগঠনের অবস্থা ছিল বেশ নড়বড়ে। দলের অভ্যন্তরে আশঙ্কা ছিল, প্রায় দশ হাজারের মতো ভোটে এখান থেকে পিছিয়ে থাকবে তৃণমূল। এই সম্ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন বিজেপি’র রাজ্যস্তরের নেতারা। কিন্তু তাতে কী! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কোনও দুর্গ চুরমার করতে যেন ‘একাই কাফি’। হলও তাই। বিজেপি’র ভরসার ওয়ার্ডগুলিতে তৃণমূল সুপ্রিমোর পদযাত্রা ভোটের ফলাফলকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দিল। ঘাটতির আশঙ্কাকে চুরমার করে তৃণমূল এখান থেকে ১০ হাজার ৩১ ভোটে লিড নিয়েছে। যা দেখে এদিন গণনা কেন্দ্রে তৃণমূল কর্মীদের হাসি আরও চওনা হয়েছে। তাঁরা বলছেন, দিদির জন্যই এই অসাধ্য সাধন সম্ভব হল। শিবপুর কেন্দ্রের ইছাপুর মোড় থেকে কদমতলা হয়ে মধ্য হাওড়া ছুঁয়ে মমতার পদযাত্রা উত্তর হাওড়ার গোলমোহর, ডবসন রোড, জি টি রোড হয়ে সালকিয়া চৌরাস্তা পর্যন্ত গিয়েছিল। সেদিন রাস্তার দু’ধারে জনতার স্রোতই বলে দিয়েছিল, ভোটের ফল কোনদিকে যাবে।
উত্তর হাওড়ায় বিজেপি ধাক্কা খেতে শুরু করে প্রথম রাউন্ড থেকেই। দ্বিতীয় রাউন্ডে যেখানে তৃণমূল পেয়েছে ৪ হাজার ৩৩৮ ভোট, সেখানে বিজেপি মাত্র ২ হাজার ৩১৮। সপ্তম রাউন্ডে যেখানে তৃণমূলের ঝুলিতে পড়েছে ৪ হাজার ৪৪টি ভোট, সেখানে বিজেপি টেনেটুনে পৌঁছেছে ২ হাজার ৬৩৫টি ভোটে। ১২ এবং ১৩ রাউন্ডে বিজেপি তৃণমূলকে টেক্কা দিলেও ততক্ষণে এই বিধানসভা এলাকায় অনেকটাই মার্জিন বাড়িয়ে ফেলেছেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাৎপর্যের বিষয় হল, উত্তর হাওড়ায় এমন বহু ওয়ার্ড বা বুথ রয়েছে, যেখানে তৃণমূল এযাবৎকালে কখনওই জেতেনি। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই পদযাত্রাই খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছে এখানে। অবিশ্বাস্যভাবে হাওড়া পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডেও লিড পেয়েছে তৃণমূল। একই অবস্থা ১০ নম্বর ওয়ার্ডেও। চার হাজারের বেশি লিড দিয়েছে ৩ নম্বর ওয়ার্ড। যা দেখে এই বিধানসভার কর্মীদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও এই রাজ্যের মানুষের কাছে এক এবং অদ্বিতীয়ম। বিরোধীদের জমি যত শক্তই হোক না কেন, তাতে ঘাসফুল ফোটাতে পারেন তিনি। তা দেখিয়ে দিল উত্তর হাওড়া।