মেয়াদি সঞ্চয় থেকে অর্থাগম যোগ আছে। সন্তানের আবদার মেটাতে অর্থ ব্যয়। ধর্মকর্মে মন আকৃষ্ট হবে। ... বিশদ
শরীরের সঙ্গে মনের কি সম্বন্ধ? কোনটি প্রয়োজক? মন কি শরীরের প্রভু, না শরীর মনের? অনেক ব্যাখ্যা প্রচলিত রয়েছে। কিন্তু আমরা, হিন্দুগণ, বিশ্বাস করি, মনের স্থান শরীরের পূর্বে, মন এর চালক ও নিয়ামক—বিপরীতটি নয়। মনটি যেমন, শরীরটিও তেমন। বাসনা এবং সংস্কার, শরীর গঠনে প্রভাব বিস্তার করে। ‘অসৎ চিন্তা’ মানুষের চেহারার ‘অসৎ ভাব’ প্রতিফলিত করে। ইহা অনস্বীকার্য যে শরীর মনকে প্রভাবিত ও পরিবর্তিত করে। আহার পরিবেশ, আবহাওয়া, ব্যাধি এসবই আমাদের মনের উপর প্রভাব বিস্তার করে। অবশ্য কেবলমাত্র বাইরের প্রভাব সকল মনকে বিশেষ প্রভাবিত করে না। শরীর ও বাহ্য-বিষয়সকল অল্প পরিমাণে মনকে নিয়ন্ত্রণ করে। এর পশ্চাতে মন ও সংস্কাররাশি নিয়ন্তারূপে বিদ্যমান। বস্তুতঃ মনের কিছু অংশ শরীরে পড়ে থাকে। মন ও শরীর পরস্পরকে কিভাবে প্রভাবিত করে—বর্ণনা করা খুব কঠিন, প্রায় অসম্ভবই বলা চলে। কিন্তু মনে হয় মনের কিয়দংশ যা শরীরের সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত, শারীরিক পরিবর্তনের মাধ্যমে আমাদের অভীপ্সিত পথে পরিচালিত করতে পারি। প্রাণায়াম অভ্যাস বা শ্বাস নিয়ন্ত্রণের ভূমিকা এই ক্ষেত্রেই। এখন দেখা যাচ্ছে, নিয়মিত শ্বাস-প্রশ্বাস বা কুম্ভক অভ্যাস-পবিত্র ও আধ্যাত্মিক চিন্তার ক্ষেত্রে—শারীরিক আনুষঙ্গিকরূপে বেশ কার্যকরী। অতএব যদি আমরা শ্বাসপ্রশ্বাসকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত করতে পারি তবে মনে সূক্ষ্ম আধ্যাত্মিক চিন্তার উদ্ভব ও উচ্চমানসিকস্তরগুলি অনুভব করতে পারি। এটি একটি সরল পথ বলে মনে হয়। কিন্তু ব্যাপারটি তত সহজে ও যন্ত্রবৎ ঘটে না। মন বিদ্রোহ হয়। শ্বাসনিয়ন্ত্রণ কৌশলের বশ্যতা সে মানতে চায় না। জীবন ও মনের গঠনে মস্তিক ও স্নায়ুমণ্ডলীর একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। হিন্দুরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে মনই শরীরকে গড়ে। মস্তিষ্ক ও স্নায়ুমণ্ডলী হচ্ছে মনের প্রধান ও সর্বশ্রেষ্ঠ শারীরিক হাতিয়ার। আমাদের বিশেষ চিন্তাধারা, প্রবণতা ও সংস্কারগুলি শুধু স্থূলদেহ নয়, স্নায়ু ও মস্তিষ্কের অদ্ভূত ছাঁচ তৈরি করে।