উচ্চশিক্ষা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় দিনটি শুভ। কর্মস্থলে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। আর্থিক দিক অপেক্ষাকৃত শুভ। ... বিশদ
যে-কোন ব্যক্তি ভগবান বুদ্ধ, শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীরামকৃষ্ণের মতো নবরূপী অবতারের সাহায্যে ঈশ্বরের অথবা নির্বিশেষ সত্যের উপাসনা করতে পারে। সে বিশ্বাস করে যে, তার ইষ্টই নরদেহে অবতাররূপে ঈশ্বরীয় সমস্ত বিশুদ্ধ গুণাবলীর আধারস্বরূপ ও প্রকৃতির এক রহস্যময় প্রকাশ। এইসব অবতারদের প্রত্যেকেই অদ্ভুত আত্মসংযম, মানবজাতির প্রতি অহৈতুকী প্রেম, অসাধারণ আত্মত্যাগ, পার্থিব বস্তুর ও ভোগবাসনার প্রতি অতুলনীয় অনাসক্তি, অনন্যসাধারণ আধ্যাত্মিকতা ও দৈবীশক্তি এবং অননুকরণীয় আদর্শনিষ্ঠা প্রদর্শন করেছেন,—যা সাধারণ মানবে কদাচিৎ দৃষ্ট হয়। ঐ একই শাশ্বত সত্যকে যীশুখ্রীষ্ট, শ্রীকৃষ্ণ, ভগবান বুদ্ধ, শ্রীরামকৃষ্ণ অথবা তাঁদের মতো যে-কোন মহাপুরুষের মাধ্যমে উপাসনা করা যেতে পারে। যেমন একজন নৈষ্ঠিক খ্রীষ্টধর্মাবলম্বীর কাছে যীশুখ্রীষ্টের জীবন শ্রেষ্ঠ আদর্শরূপে গৃহীত হয়, একজন বৌদ্ধধর্মাবলম্বীর কাছে ভগবান বুদ্ধও সেইরূপ। অপর অনেকের কাছে আবার শ্রীকৃষ্ণ অথবা শ্রীরামকৃষ্ণই নির্বিশেষ সত্যের শ্রেষ্ঠ প্রকাশরূপে অনুভূত হয়ে থাকেন।
এইসব ঈশ্বরাবতারদের প্রত্যেকেই মহিমময়। তাঁরা প্রত্যেকেই নশ্বর মানবদের সত্যস্বরূপে উপনীত হওয়ার উন্মুক্ত দ্বারস্বরূপ। এঁরা প্রত্যেকেই নদীবক্ষে প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে নৌকার মতো জীবকুলকে আধ্যাত্মিকতার অনন্ত সমুদ্রে নিয়ে যান। এরূপ ঈশ্বরাবতারদের অনুরাগী ভক্তরা তাঁকেই সত্যস্বরূপ ব’লে বিশ্বাস করে এবং বিশ্বব্যাপী সর্বশক্তিমান ঈশ্বররূপে তাঁরই উপাসনা ও প্রার্থনা করে। নিষ্ঠাবান খ্রীষ্টধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করে যে, ঈশ্বরের একমাত্র প্রিয় পুত্র যীশুখ্রীষ্ট সত্যের প্রচারকল্পে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সত্যের যথার্থস্বরূপ সম্বন্ধে তিনি যা-কিছু বলেছিলেন, তাঁর সমগ্র জীবন বা সত্তাই ছিল সেই সত্যের প্রতিরূপ। তাঁর উপাসনার সাহায্যে তারা শাশ্বত সত্যেরই উপাসনা করে, তাঁর প্রতি বিশ্বাসই ঈশ্বর-বিশ্বাস, তাঁর প্রতি অনুরাগই হ’ল এই বিশ্বের চরমসত্তা ঈশ্বরের প্রতি অনুরাগ। তারা বলে—যদি আমরা খ্রীষ্টকে উপলব্ধি করি এবং তাঁকে জানতে পারি তাহলে পরম সত্যকেই জানা হবে এবং তাঁর যে বাণী: ‘সত্যের উপলব্ধি করো এবং সত্যই তোমাদের মুক্ত করবে,—একথা সার্থক হবে। অনন্ত নরক থেকে উদ্ধার ও মুক্তিলাভের অপর কোন পথ নেই। শ্রীবুদ্ধের ভক্তরা ঘোষণা করে: ‘সত্যই সকল বস্তুর চরম মানদণ্ড—যার দ্বারা সত্য ও মিথ্যার (এই দু’টি মতবাদের) মধ্যে পার্থক্য বিচার করা যায়। অতএব সত্যকে যেন আমরা পূজা করি এবং সত্য সম্বন্ধে অনুসন্ধান ক’রে তার স্বরূপ অনুভব করি এবং সত্যেরই অনুগামী হই। যেহেতু আমাদের আচার্য, প্রভু বুদ্ধই যথার্থ-সত্যস্বরূপ’।