কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
সদ্গুরু অতীন্দ্রিয়শক্তিসম্পন্ন হন। তিনি শিষ্যের সূক্ষ্ম শরীর দেখিয়া অতীত ও ভবিষ্যৎ সংস্কার মত শিক্ষা দিয়া থাকেন ; ইহাই ভূত-ভবিষ্যৎ-দর্শনের অর্থ। গণনার দ্বারা ভূত-ভবিষ্যৎ বলা বা জ্যোতিষ-সহায়ে ভূত-ভবিষ্যৎ বলা অনেক ক্ষেত্রে অভ্রান্ত হয় না। সরল মনে তাঁহাকে ডাকিবার চেষ্টা করিলে তিনি সময়ে সকল ব্যবস্থাই করিয়া দিবেন।
তোমাকে এইমাত্র বলিতে পারি, শ্রীশ্রীঠাকুর জগতের গুরুরূপে আসিয়াছেন, সুতরাং যে তাঁহাতে বিশ্বাস দৃঢ় রাখিয়া তাঁহার নাম জপ করিবে তাহার ঐহিক পারত্রিক মঙ্গল নিশ্চয়—তাহার উদ্ধারের কোন ভাবনা নাই। তাঁহার নামই মহামন্ত্র, উহা নিত্য যত পার জপ করিবে। ...অন্যরূপ দীক্ষা লইতে যদি তোমার ইচ্ছা হয় এবং আমার পূর্বোক্ত কথায় বিশ্বাস রাখিতে না পার, তাহা হইলে আমাকে আর পত্র না লিখিয়া শ্রীমহারাজকে (ভুবনেশ্বর, পুরী, শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ, ঠিকানায়) পত্র লিখিও এবং তিনি যেমন বলেন করিও। তোমাদের বাড়ীতে নিত্য ৯/১০ জন ভক্ত সমবেত হইয়া পাঠ, আলোচনা, ভজন ইত্যাদি করিয়া থাক জানিয়া সুখী হইলাম। এ অতি উত্তম কাজ। ভক্তসঙ্গে শ্রীভগবানের নামগুণানুকীর্তন ভাবভক্তি বৃদ্ধির সহায়ক। অতএব, প্রতিকূল মতাবলম্বী যে যাহাই বলুক তাহাতে কর্ণপাত না করিয়া ঐরূপ করিতে বিরত হইবে না। এইরূপ করিয়া তোমাদের জীবনে উন্নতি হইতেছে দেখিলে, তাহারা আপনা হইতেই উহার উপকারিতা বুঝিতে পারিবে। ঐ সকল বিষয় লইয়া বৃথা কাহারও সহিত বাগ্বিতণ্ডা বা তর্ক করা উচিত নহে। তাহাতে অনিষ্ট হয়।
যে-সকল পুরুষ শ্রীভগবানকে প্রত্যক্ষ করিয়াছেন তাঁহাদের কথাই বেদ। তাঁহাদের নাম আপ্তপুরুষ এবং বেদকে আপ্তবাক্য বলা হয়। তাঁহাদের কথার উপর বিশ্বাস রাখিয়া ধর্মানুষ্ঠান করিয়া যাইতে হয়। নতুবা বিষয়াসক্ত আমাদিগের মলিন বুদ্ধির দ্বারা সকল কথা বুঝা ও তাহার নির্দেশ ধর্মানুষ্ঠান করায় কোন ফলই হয় না। অতএব সকল কথা বুঝিবার চেষ্টা ছাড়িয়া শ্রীশ্রীঠাকুরের কথায় সম্পূর্ণ বিশ্বাস ও নির্ভর করিয়া সাধন করিয়া যাও। শ্রীশ্রীঠাকুর বলিতেন, ‘প্রারব্ধ’ও আছে এবং ‘কৃপা’ও আছে। কৃপা দ্বারা সামান্য ভোগ করিয়াই প্রারব্ধ কাটিয়া যাইতে পারে।
ধ্যেয়বস্তুতে মন একাগ্র করিতে যাইয়া যদি তন্দ্রার মত আসে অথচ আনন্দ থাকে, তাহা হইলে উহাকে আলস্য বা জড়তা বলা যায় না। উহা খুব উচ্চ অবস্থা না হইলেও ভাল, এবং নিত্য অভ্যাসে উহা দূর হইয়া যাইবে।
জপ করিতে করিতে মন স্থির হইয়া ধ্যান করিবার ইচ্ছা হইলে তাহাই করিবে। চঞ্চল মনকে বশীভূত করিবার উপায় – বৈরাগ্য ও অভ্যাস, গীতায় এ কথা আছে। উহা ভিন্ন অন্য উপায় নাই। প্রাণায়াম করিবার আবশ্যকতা নাই। অন্ততঃ শ্রীশ্রীঠাকুর আমাদিগকে উহা করিতে বলেন নাই। ইষ্টের প্রতি ভালবাসায় মন একাগ্র হইলে বায়ুনিরোধ আপনা হইতেই হইবে।
এ সকল প্রশ্ন সমাধান করিবার তোমার আবশ্যকতা কিছু নাই এবং আমারও সময় নাই। নিত্য জপধ্যান করিয়া যাও ও কায়মনোবাক্যে পবিত্র থাক, তাহা হইলেই বস্তুলাভ হইবে। বিশ্বাস, শ্রীশ্রীঠাকুরের বাক্যে দৃঢ় বিশ্বাস –ইহাই আবশ্যক জানিবে।