কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
সকলেই কি আর চিনতে পারে, মা? ঘাটে একখানা হীরা পড়ে ছিল। সব্বাই পাথর মনে করে তাতে পা ঘষে স্নান করে উঠে যেত। একদিন এক জহুরি সেই ঘাটে এসে দেখে চিনলে যে, সেখানে এক প্রকাণ্ড মহামূল্য হীরা। ঠাকুর সাক্ষাৎ ভগবান। আমি আর কে, আমিও ভগবতী।
বাস্তবিকই তিনি(ঠাকুর) ভগবান, জীবের দুঃখে দেহধারণ করে এসেছিলেন—রাজা যেমন ছদ্মবেশে নগরভ্রমণে যান। একটু জানাজানি হলেই সরে পড়েন। ভগবান নরলীলা করতে ভালবাসেন কিনা। শ্রীকৃষ্ণ গোয়ালার ছেলে ছিলেন। রাম দশরথের বেটা। ভগবানকে কে বাঁধতে পেরেছে বল না। তিনি নিজে ধরা দিয়েছিলেন বলে তো যশোদা তাঁকে বাঁধতে পেরেছিল, গোপগোপীরা তাঁকে পেয়েছিল।
সাধুপুরুষেরা সব আসেন মানুষকে পথ দেখাতে, এক এক জনে এক এক রকমের বোল বলেন। পথ অনেক, সেজন্যে তাঁদের সকলের কথাই সত্য। যেমন একটা গাছে সাদা, কালো, লাল নানা রকমের পাখী এসে বসে হরেক রকমের বোল বলছে। শুনতে ভিন্ন ভিন্ন হলেও সকলগুলিকেই আমরা পাখীর বোল বলি—একটাই পাখীর বোল আর অন্যগুলো পাখীর বোল নয়, এরূপ বলি না। আমাদের ঠাকুরের ওরূপ সঙ্কীর্ণ ভেদবুদ্ধি ছিল না। অবতারপুরুষকে সকলে কি ধরতে পারে? দুই-একজনে চিনতে পারে মাত্র। তাঁরা জীব-উদ্ধারের জন্যে কত যাতনাই না সহ্য করেন! ঠাকুরের গলা দিয়ে রক্ত বের হত, তবুও কথার বিরাম নেই, কিসে জীবের মঙ্গল হয়। বিশেষ বিশেষ লোক তাঁর সঙ্গে এসেছেন। সর্বপ্রধান যাঁরা তাঁরাই ভগবানের কার্যের জন্যে সঙ্গে সঙ্গে আসেন। সব তাঁর কাছ থেকে এসেছে, তাঁর কাছে চলে যাবে। কেউ তাঁর বাহু হতে, কেউ পা হতে, কেউ লোম হতে হয়েছে—সব তাঁর অঙ্গ, অংশ।
(শিবুদাদাকে) দেখ দেখি, আমি আবার কে রে? আমি মানুষ, তোর খুড়ী। (তবে)লোকে বলে, ‘কালী’। মায়া বৈকি! মায়া না হলে আমার এ দশা কেন? আমি বৈকুণ্ঠে নারায়ণের পাশে লক্ষ্মী হয়ে থাকতুম। (নিজের স্বরূপ মনে) কি সব সময় থাকে? তাহলে কি এইসব কাজকর্ম করা চলে? তবে কাজকর্মের ভিতর যখনই ইচ্ছা হয় সামান্য চিন্তাতে দপ করে উদ্দীপনা হয়ে মহামায়ার খেলা সব বুঝতে পারা যায়। তখন ভাবি, এ কি করছি। আবার এইসব বাড়ীঘর ছেলেপিলে মনে আসে ও ভুলে যাই।
তিনি (ঠাকুর) আমার পূর্ণব্রহ্ম সনাতন। হাঁ, তিনি পূর্ণব্রহ্ম সনাতন— স্বামিভাবেও, এমনিভাবেও। (আবার বলছেন: ঠাকুরকে) সন্তানের মতো দেখি। এই যে এখানে এসেছ, একটা কিছু ভাব নিয়ে এসেছ, হয়তো জগন্মাতা ভেবে এসেছ। ঠাকুর ও আমাকে অভেদভাবে দেখবে, আর যখন যেভাবে দর্শন পাবে, সেইভাবেই ধ্যানস্তুতি করবে, ধ্যান হয়ে গেলেই পূজো শেষ হল। এইখানেই (হৃদয়ে) আরম্ভ ও এইখানে (মস্তকে) শেষ করবে। ঠাকুরের মাঝেই গুরু ইস্ট সব পাবে। উনিই সব। ঠাকুর বলতেন, ‘মলয়ের হাওয়া লাগলে যেসব গাছের স্যার আছে তারা চন্দন হয়।’ মলয় বয়ে গেছে, এইবার সব চন্দন হবে। কেবল বাঁশ, কলা ছাড়া। বাঁশ, শিমুল, তালগাছ—চন্দনের কাছে থাকলে কি হবে? সারাবান বৃক্ষ হওয়া চাই।