কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
উত্তর: জপের দ্বারা জীবনে চলার পথে নিয়ম-নীতি-আচরণের মাধ্যমে শৃঙ্খলাবোধ এনে গুরু প্রদত্ত সত্য বস্তুকে রক্ষা করা যায়, অর্থাৎ মনের কলুষ বা আবিলতা নাশ হয় এবং দৃঢ়তা, একাগ্রতা ইত্যাদি বাড়তে থাকে। মন ক্রমশ অনিত্য বস্তুর প্রতি আসক্তি কাটিয়ে সত্যের অনুসন্ধানে তৎপর হয় এবং প্রকৃত সত্যবস্তুর সাথে তার মিলন ঘটে। ধ্যানের ধ্যেয় বস্তু ধাতু সৃষ্টি করে, ক্রমে ওই ধাতু থেকে মন প্রেয় বস্তুকে লাভ করে। গুরু তোমাকে তোমার যে মূর্তি(ধ্যানের বস্তু) দিয়েছেন, ধ্যানের দ্বারা তাকে অঙ্কিত করতে হবে, তবেই গুরুশক্তি সেখানে কাজ করবে।
প্রশ্ন: জ্ঞান কাকে বলে এবং কয় প্রকার? কোথা থেকে লাভ করা যায়?
উত্তর: ভগবানকে জানার জন্য জ্ঞান। জ্ঞান সাধারণত চার প্রকার। মনুষ্যজ্ঞান, দেবজ্ঞান, ঈশ্বরজ্ঞান এবং ব্রহ্মজ্ঞান। এছাড়া সর্বশ্রেষ্ঠ বিশেষ জ্ঞান হলো বিজ্ঞান। সব জ্ঞানই গুরু কাছে পাওয়া যায়।
প্রশ্ন: তুমি কি জানো না যে তোমার কর্মে ও চলার পথে কোথায় ভুল হচ্ছে?
উত্তর: আমরা সবাইকে বলি—আমরা কোথায় ভুল হচ্ছে তা বুঝতে বা ধরতে পারছি না। এটা কিন্তু আদৌ সত্য নয়। কারণ ভাল-মন্দ, সৎ-অসৎ জ্ঞান সকলেরই আছে। তা সত্ত্বেও আমরা গর্হিত কর্ম করি কেন? আমরা মায়ার কাছে দাসখত লিখে দিয়েছি, যার ফলে মোহগ্রস্ত হয়ে অপরাধজনক কর্মে প্রবৃত্ত হই। যাতে বিচার আত্মমুখী হয়, সেই শিক্ষা লাভ করবার জন্যই আমরা গুরুর কাছে আশ্রয় নিই। শ্রীগুরুর অমৃত বাণী শ্রবণ করি বটে, কিন্তু তা ধারণ করে বিচার বা বিশ্লেষণ করি না— এটাই আমাদের মারাত্মক ভুল।
প্রশ্ন: সংযম ধৈর্য কার দ্বারায় আসে এবং কোন কর্মের দ্বারা তা প্রকাশ পায়?
উত্তর: সংযম-ধৈর্য আসে গর্ভধারিণী মায়ের কাছ থেকে। কারণ মা হলেন রজোগুণী। তাই তার স্নেহ পরিচর্যার মাধ্যমে সন্তানের মধ্যে বিশেষ শক্তির উন্মেষ ঘটে। তমোগুণ শক্তি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। ‘যেমন কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা।’ ওই রূপ মায়াশক্তির দ্বারায় তমোগুণ মায়াশক্তি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে থাকে।
প্রশ্ন: গুরুর কাছে কিছু চাওয়া উচিত কি?
উত্তর: আমরা গুরুর কাছে সাধারণত বাস্তব অভাব পূরণের দাবী করে থাকি। কিন্তু যিনি প্রকৃত গুরু তিনি জানেন শিষ্যের প্রকৃত অভাব কি? যাতে শিষ্যের কল্যাণ হয়, তা শিষ্য চাইবার আগেই তিনি দিয়ে থাকেন। তাই গুরুর কাছে কিছু চাইতে নেই।
প্রশ্ন: গুরু দক্ষিণা কি? গুরু দক্ষিণা না দিলে কি ফল হতে পারে?
উত্তর: গুরু ইষ্টের মধ্যে অভেদে প্রকাশমান থাকেন। দীক্ষার পর গুরুমুখী ভাবার্থের দ্বারা শিষ্যের মধ্যে যদি ওই ইষ্টের প্রকাশ হয়, তখন গুরু যদি ইষ্টমন্ত্রটি কাছ থেকে দক্ষিণাস্বরূপ ফেরৎ চান, শিষ্য যদি তা প্রত্যার্পণ করে, তাহলে তিনি শিষ্যকে গুরুতে লয় করে নেন। এর ফলে গুরু ঋণ শোধ করা যায়। কিন্তু যে সব শিষ্য ইষ্টমূর্তিতে লয় হয় না, তারা গুরুর কাছে চিরকাল ঋণী থাকে এবং গুরুর আসল কর্ম করতে সমর্থ হয় না।
প্রশ্ন: মন্ত্র গ্রহণের সার্থকতা ও ভাবার্থ কি?
উত্তর: মন্ত্র হলো মনকে জানা বা খাঁটি করা । মন্ত্রের বলে একটি ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়। গুরু দীক্ষা বীজ বপন করেন। মন্ত্র হলো শিবশক্তিকে জানা এবং ওই শক্তি বলে ভক্ত শিবত্ব প্রাপ্ত হয়। আর মন্ত্রের ঠিকমত কর্ম করলে তাঁর নাম ও ভাবের মধ্যে ভক্ত ভক্তি রসে ডুবে যায় এবং শিষ্যে পরিণত হয়।