সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন। অর্থপ্রাপ্তির যোগ ... বিশদ
বেনজির টানাপোড়েনের মাঝেই, শনিবার সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন টালা থানার বিতর্কিত ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। দীর্ঘ জেরার পরই তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়। তথ্য-প্রমাণ লোপাট, ঘটনাস্থলের বিকৃতি, এফআইআরে দেরি প্রভৃতি অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। একই মামলায় এবার গ্রেপ্তার হলেন সন্দীপ ঘোষও। আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তাঁকে আগেই ফাটকে ভরেছিল। ফের দীর্ঘ জেরার পর আদালতের অনুমতি নিয়ে নতুন মামলাতেও তাঁকে হেফাজতে নিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। খুন-ধর্ষণ কাণ্ডে তথ্য-প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ প্রাক্তন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধেও। আগামী কাল, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই চাঞ্চল্যকর মামলার শুনানি। সিবিআই আগে যে স্টেটাস রিপোর্ট দিয়েছিল তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ‘ফ্রেশ স্টেটাস রিপোর্ট’ চেয়েছে তারা। এবার তা জমা দিতে হবে সিবিআইকে। তাই কলকাতা পুলিসের কাছ থেকে দায়িত্বগ্রহণের ৩১ দিন পর ধর্ষণ-খুন মামলায় সিবিআইয়ের এই জোড়া গ্রেপ্তারি তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁদের নজরে এখন রাজ্যের এক আইপিএস কর্তাও—জোর জল্পনা আমলা মহলে।
সিবিআই সূত্রের খবর, সন্দীপের গাড়ি চালকের বয়ানই এই মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। জেরার মুখে নাকি জানিয়েছেন, ঘটনার দিন গভীর রাতে মালিকের ফোন পান তিনি। সন্দীপকে নিয়ে সোজা আর জি করে পৌঁছে দেন তিনি ভোর ৪টের কিছু পর। সকাল ৬টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন তৎকালীন অধ্যক্ষ। তারপর সকাল ৭টার মধ্যে তাঁকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন ওই চালক। সন্দীপের ফোনের টাওয়ার লোকেশন সূত্রেও মিলেছে অবিকল ইঙ্গিত। পিছনের লিফট দিয়েই তিনি অকুস্থলে পৌঁছন বলে সিবিআইয়ের সন্দেহ। তাদের অভিযোগ, সন্দীপের প্রবেশ ও প্রস্থানের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ বিকৃত করা হয়েছে। গোয়েন্দাদের দাবি, প্রথম থেকেই এবং সম্ভবত ইচ্ছাকৃতভাবে তদন্তে গাফিলতি করেছেন টালার ওসি। সহকর্মীর রিপোর্ট পাওয়ার পরও স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু হয়নি কেন? সদুত্তর মেলেনি ওসির। জিডি বুকেও মিলেছে বিস্তর গরমিল। সিবিআই সূত্রের দাবি, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে চারটির বেশি জিডি নথিভুক্তির দৃশ্য আছে! কিন্তু চেপে দেওয়া হয়েছে তা। এজন্য এক পদস্থ আইপিএস কর্তার দিকেই নাকি ইঙ্গিত করেছেন ওসি। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, ধর্ষণ-খুনের ঘটনাস্থল যে সেমিনার হল নয়, সেই ব্যাপারেও তদন্তকারীরা এখন মোটামুটি নিশ্চিত। তাই নতুনভাবে উঠে এসেছে সেই পুরনো প্রশ্ন, তাহলে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করল কে বা কারা? ধর্ষণ করে খুন, নাকি ধর্ষণের মতো কাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে তাঁকে খুনের পরেই! এই প্রশ্নে ঘুরপাক খাচ্ছে একাধিক তত্ত্ব। এই সূত্রে কয়েকজন ডাক্তারও এখন সিবিআইয়ের আতশকাচের তলায়। সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের এই ধারণাই দৃঢ়মূল হচ্ছে যে, ‘অভয়া’ নিজের প্রিয় কর্মস্থলে ‘পরিকল্পিত’ খুনের শিকার। অপরাধ যা’ই ঘটে থাক, তদন্ত যেন নিরপেক্ষ হয় এবং প্রকৃত সত্য সামনে আসে। সঙ্কীর্ণ রাজনীতি আর নয়, দোষীদের চরমতম শাস্তির দাবিই হোক পাখির চোখ। শুধু জুনিয়র ডাক্তার এবং সাধারণ নাগরিকরাই নন, বলা বাহুল্য, মানবিক মুখ্যমন্ত্রীও সেই দিনের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন।