সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন। অর্থপ্রাপ্তির যোগ ... বিশদ
সরকারের দেওয়া তথ্য বলছে, ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা বা নমামি গঙ্গে প্রকল্পে গত দশ বছরে নিজেদের সরকারের বাজেট বরাদ্দের অর্ধেক টাকাও খরচ করতে পারেননি দিল্লির কেষ্টবিষ্টুরা। যেমন, প্রথম বছর ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষে ৯২ শতাংশ অর্থ, ২০১৫-১৬-তে ৭৮ শতাংশ অর্থ, ২০১৬-১৭-তে ৩৩ শতাংশ অর্থ, ২০১৭-১৮-তে ৭০ শতাংশ অর্থ, ২০১৮-১৯-এ ৭০ শতাংশ অর্থ, ২০১৯-২০-তে ৪৩ শতাংশ অর্থ, ২০২০-২১-এ ৩৮ শতাংশ অর্থ, ২০২১-২২-এ ২৯ শতাংশ অর্থ এবং ২০২২-২৩-এ ৪০ শতাংশ অর্থই খরচ করতে পারেনি মোদি সরকার। দশ বছরে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৫১ শতাংশ অর্থ। গঙ্গাকে দূষণমুক্ত করে তার পুনরুজ্জীবনের যে শপথ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী, সেই প্রকল্প নিয়ে প্রচারে কোনও ফাঁক না থাকলেও তা রূপায়ণে যে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্র— সরকারের দেওয়া তথ্যই তার প্রমাণ। বিরোধীদের অভিযোগ, ক্ষমতায় এসে নরেন্দ্র মোদি ইউপিএ সরকারের ২০০৯-এ চালু করা ‘মিশন গঙ্গা’ প্রকল্পের নাম বদলে ঘোষণা করেন, ‘নমামি গঙ্গে’র। কিন্তু গঙ্গা এখন দশ বছর আগের থেকেও বেশি দূষিত। এই আমলে মোদি ঘনিষ্ঠ কিছু শিল্প সংস্থা ও কিছু বিজেপি নেতা গঙ্গাকে দূষণমুক্ত করার প্রকল্পের ঠিকা আদায় করে কোটি কোটি টাকা মুনাফা করে চলেছেন। কাজের কাজ সেভাবে কিছু হচ্ছে না।
গঙ্গা দূষণ নিয়ে বিরোধীদের এই অভিযোগকেই যেন মান্যতা দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। যে উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি গঙ্গা নিয়ে তাঁর আবেগ ও পরিকল্পনার কথা শুনিয়েছিলেন, সেই রাজ্যের প্রয়াগরাজে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভ মেলা। মেলায় ৪০ কোটি মানুষের সমাগম হবে বলে মনে করা হচ্ছে। গঙ্গা-যমুনার পবিত্র এই সঙ্গমস্থলে তাঁরা স্নান করবেন, তাঁদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবেশ আদালত। গঙ্গার দূষিত জল পুণ্যার্থীদের স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা পরিবেশ আদালতের। কারণ, প্রয়াগরাজের রসুলবাদ থেকে সঙ্গমস্থল পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার পথে ৫০টি নর্দমার বিষাক্ত জল সরাসরি গঙ্গায় গিয়ে মিশছে বলে মামলা হয়েছে আদালতে। এই দূষিত জলে পুণ্যার্থীদের একাধিক ব্যাধি হতে পারে বলে সতর্ক করে অবিলম্বে নিকাশি বর্জ্য প্রয়াগরাজের গঙ্গায় ফেলা বন্ধ করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই হচ্ছে মোদির নমামি গঙ্গের আসল চেহারা! এটা একটা উদাহরণ মাত্র। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিনই এমন নানাভাবে দূষিত হচ্ছে গঙ্গার জল। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকার যে এ ব্যাপারে আদৌ সচেতন নয় বরং উদাসীন—তা বলার অপেক্ষা রাখে না।