সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন। অর্থপ্রাপ্তির যোগ ... বিশদ
চিকিৎসক-পড়ুয়ার মৃত্যুর পর ৩৫ দিন ধরে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি চলছে। তাঁরা ন্যায়বিচার চাইছেন। জাস্টিস চাইছেন দলমত নির্বিশেষে সকলে। আন্দোলনকারীরা অস্বীকার করলেও ঘটনা হল, আর জি কর কাণ্ডের কারণে অচলাবস্থার জেরে কলকাতা ও জেলার মূল সরকারি হাসপাতাল, যেখানে রোগীর চাপ সর্বাধিক, সেখানে চিকিৎসা পরিষেবা চূড়ান্তভাবে অবহেলিত হচ্ছে। কোনও সভ্য সমাজে দিনের পর দিন এটা কি চলতে পারে? দাবি সঙ্গত হলেও পারে না। কারণ পুলিস, দমকল, পানীয় জল সরবরাহের মতো চিকিৎসা পরিষেবাও ‘জরুরি’ ক্ষেত্র বলে চিহ্নিত। স্বভাবতই কর্মবিরতি তুলতে রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে বলে অনুমতি দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ব্যবস্থা মানে, কর্মবিরতি যাঁরা করছেন আইনের পথে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে সরকার। অন্য রাজ্যে তো বটেই, এ রাজ্যেও ১৯৮৩ সালে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন ভাঙতে পুলিসি দাওয়াইয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত জ্যোতি বসু। ৪০ বছর আগের সেই জনস্বার্থবাহী আন্দোলন নিয়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘আপনাদের থেকে জনস্বার্থ শিখব? আগে স্ট্রাইক তুলুন, দাবি নিয়ে পরে ভাবব। সীমা ছাড়াচ্ছেন, বিপদে পড়বেন।’ সত্যিই বিপদে পড়েছিলেন ডাক্তাররা। সেবার পুলিসের বেপরোয়া আক্রমণে আন্দোলন ভেঙে ছত্রাখান হয়ে গিয়েছিল। এটা ঠিক, সেইসময়ে অবশ্য আর জি কর কাণ্ডের মতো ন্যক্কারজনক পৈশাচিক ঘটনা ঘটেনি।
বলপ্রয়োগ করে আন্দোলন ভাঙার সেই সুযোগ এখনও হয়তো আছে। কিন্তু আজকের মুখ্যমন্ত্রী তা করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। বরং তিনি চান, ছোট ছোট ভাইবোনের মতো জুনিয়র ডাক্তাররা খোলা মনে তাঁদের দাবি নিয়ে আলোচনায় বসুন। সরকার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ও তাঁদের নিরাপত্তা বাড়াতে অঙ্গীকারবদ্ধ। ঘটনা হল, এই আর্জি নিয়ে আন্দোলনকারীদের পথ চেয়ে দু’দিন তিন ঘণ্টারও বেশি সময় নবান্নে অপেক্ষা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডাক্তাররাও তো সরাসরি সম্প্রচারের শর্ত প্রত্যাহার করে নিজেদের দাবিকেই ফোকাস করতে পারতেন। মনে রাখতে হবে যে, জাস্টিসের দাবিতেই তাঁদের আন্দোলন চলছে এবং তা জনসমর্থনও পাচ্ছে। এখন শর্তের আড়ালে আন্দোলনের অভিমুখ ঘুরে গেলে মানুষ তা ভালোভাবে নেবেন তো? এটাও তাঁদের মনে রাখা দরকার। কোনও আন্দোলনই অনন্তকাল একইভাবে চলতে পারে না। সরকার সদিচ্ছা দেখিয়েছে, আপনারাও দেখান।