গৃহসুখ বৃদ্ধি ও সপরিবারে আনন্দ উপভোগ। অন্যের দোষের দায়বহন করতে হতে পারে। ... বিশদ
লক্ষণীয় যে, আলোচ্যমান তিন ক্ষেত্রেই অকুস্থল নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহদের সাধের ‘ডাবল ইঞ্জিন’ রাজ্য। গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনের মাধ্যমে রাজস্থানের ক্ষমতা কংগ্রেসের কাছ থেকে ফের ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। এখন রাজ্যপাটে তরুণ তুর্কি ভজনলাল শর্মা। হরিয়ানা দীর্ঘদিন যাবৎ শাসন করছে বিজেপি। লোকসভা নির্বাচনের আগে মনোহরলাল খট্টরকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলেরই তরুণ নেতা নায়েব সিং সাইনিকে। অন্যদিকে, এবার সাধারণ নির্বাচনেই পালাবদল ঘটে গিয়েছে ভুবনেশ্বরে। নবীন পট্টনায়ককে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে এখন বিজেপি নেতা মোহন মাঝি। ওড়িশায় বিজেপির এটাই প্রথম ইনিংস। খেয়াল করার মতো ব্যাপার এই যে, বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিক নির্যাতনে বিতর্কের কেন্দ্রে সব ধরনের বিজেপি-শাসিত রাজ্য—পুরনো রাজ্য, বদলি মুখ্যমন্ত্রী কিংবা ফার্স্ট ইনিংসে কোনও ফারাক নেই। সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলি কিংবা তাদের শাসক দল একটি ঘটনাকেও নিন্দা করেছে বলে শোনা যায়নি। কঠোর পদক্ষেপের খবর তো নেইই। অভিযুক্ত ধর্মোন্মাদদের সতর্ক করার কোনও বার্তা দেননি—না নরেন্দ্র মোদি, না অমিত শাহ কিংবা জে পি নাড্ডা।
তাই ব্যাপারটিকে কোনোভাবেই ‘কাকতালীয়’ বলে মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। তাহলে কি এটাই ধরে নিতে হবে, এই ভয়াবহ সংস্কৃতির বিস্তারে গেরুয়া শিবিরের গুরুঠাকুরদের মৌনসম্মতি রয়েছে? এই মর্মান্তিক ঘটনাগুলিতে ‘বিচার’ দাবি করে নাগরিক সমাজও কিন্তু টুঁ শব্দটি করছে না। কিন্তু কেন? উঠে গিয়েছে সেই সংগত প্রশ্নও। রাজস্থানের ঘটনায় শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সবরকমে আছে বলে জানিয়েছে। অন্যদিকে, হরিয়ানার ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ বলতে, সম্ভবত, বাংলার প্রশাসনের চাপেই পুলিস আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরপর তদন্ত এবং বিচার প্রক্রিয়া কতদূর এগবে, সংশয় রয়েই যায়। ওড়িশার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টেলিফোনে তাঁর সঙ্গে কথা বলার পর ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক মাধ্যমে কিছু বার্তা দিয়েছেন। তবে তাতে পরিযায়ী শ্রমিক-নির্যাতন প্রসঙ্গের উল্লেখ নেই। বাংলার পরিষায়ী শ্রমিকরা পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসতে চাইলে নবান্ন প্রয়োজনীয় সাহায্য করবে বলেই আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে, যে দেশের ভিত্তি ও সৌন্দর্য বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য, সেখানে এ কোনও সমাধান নয়। কেন্দ্রীয় সরকার এবং শাসক দলের দায়িত্বশীল ভূমিকাই প্রত্যাশিত। না-হলে রাজ্যে রাজ্যে এই ধরনের অশান্তি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হতে পারে।