সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন। অর্থপ্রাপ্তির যোগ ... বিশদ
লোকসভায় ঢুকবেন জানিয়ে গত মার্চে মুখ্যমন্ত্রী পদে মনোহরলালের ইস্তফা নেওয়া হয়। একাদশ মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন বিজেপির তরুণ এমপি নায়েব সিং সাইনি। ইতিমধ্যেই বিধানসভায় বিজেপি-জেজেপি দোস্তিতে ইতি পড়ে গিয়েছে। ২০১৯-এ নির্বাচন-পূর্ব জোট তাদের ছিল না। ভোটের পর বিজেপির যখন খেয়াঘাটে গড়াগড়ি দশা তখনই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন দুষ্যন্ত। কিন্তু সেই করমর্দন পুরো পাঁচবছর টেকেনি। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগেই তা ভেঙে যায়। সরকার গড়ার জন্য নায়েব সিংকে প্রয়োজনীয় সংখ্যার ঘাটতি পূরণ করেন ছ’জন নির্দল এবং একজন এইচএলপি সদস্য। তবু শেষরক্ষা হয়নি বিজেপির। গুরুত্বপূর্ণ লোকসভা নির্বাচনে হরিয়ানার পাঁচটি আসন খোয়াল কেন্দ্রের শাসক দল। উনিশের পুরো ১০ থেকে অর্ধেক হয়ে গেল তারা। বাকি ৫টি আসন জিতে নিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস। এবার লোকসভার ফল প্রকাশের পর দুষ্যন্ত চৌতালা সোশ্যাল মিডিয়ায় (এক্স) মন্তব্য করেন, ‘ভারতের ভোটদাতাদের নিয়ে আমি সত্যিই গর্বিত। কেননা দেশ, দেশের সংবিধান ও গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্যই তাঁরা তাঁদের মতদান করে থাকেন সবসময়।’ তাঁর আরও তাৎপর্যপূর্ণ সংযোজন, ‘একইসঙ্গে ভোটারদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী এই কারণে যে, সরকারে (বিজেপির সঙ্গে জেজেপি জোট) থেকেও তাঁদের প্রত্যাশা আমরা পূরণ করতে পারিনি।’
আর একমাস পরেই হরিয়ানায় বিধানসভার ভোট। দিন যত এগিয়ে আসছে তত চাপ বাড়ছে নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহদের উপর। কিন্তু ২০১৯ সালের এপ্রিল-মে মাসের পর থেকে কী এমন হল যে হরিয়ানার লক্ষ লক্ষ মানুষের মন উল্টো দিকে ঘুরতে শুরু করল? ব্যাপারটা একদিনে ঘটেনি। মেয়েদের স্বাধীনতা এবং সম্ভ্রমের প্রশ্নে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। ২০১৪ সালে দলও ভেবেছে বিজেপি ‘অপরাজেয়’। তাই কোনও সমালোচনাকে আমল দেয়নি। মনোহরলালও চালিয়ে গিয়েছেন তাঁর বিতর্কিত মন্তব্য। এরপর দেশজুড়ে বিরূপ হল কৃষক শ্রেণি। প্রতিবাদ আন্দোলন ধ্বনিত হল পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি। একগুচ্ছ দাবি জানাতে গিয়ে সরকারের ভয়াবহ রোষের মুখে পড়লেন দেশের ‘অন্নদাতারা’। সরকার এবং শাসক দল সমালোচিত, নিন্দিত হল দুনিয়া জুড়ে। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো জুটল মহিলা কুস্তিগিরদের সঙ্গে অন্যায় কাণ্ড এবং জাতিগত সংরক্ষণ বা কোটা আন্দোলন। কৃষক এবং মহিলাদের ক্ষোভ প্রশমনের বিষয়টি গুরুত্ব পেল না। শাসক চিন্তিত হল কেবল মুখ্যমন্ত্রীর একার ভাবমূর্তি এবং কোটা নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী বদলে ফেলা হল। মনোহরলালের জায়গায় যাঁকে আনা হল সেই নায়েব সিং সাইনি হলেন অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) প্রতিনিধি। হরিয়ানার মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ ওবিসি। কিন্তু এই গেরুয়া চাল যে পাবলিক খায়নি, তার প্রমাণ এবারের লোকসভা নির্বাচনের ফল। তার উপর ফের আন্দোলনে কৃষকরা। হরিয়ানা-পাঞ্জাবের শম্ভু সীমানায় দ্বিতীয় দফার আন্দোলনের ২০০তম দিন ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত। এবার সেই মঞ্চেই হাজির হরিয়ানার ‘সোনার মেয়ে’ ভিনেশ ফোগাট! বিজেপিকে গোহারা করার ডাক দিয়েছেন যাঁরা, সেই কৃষকেদরই সঙ্গে থাকার স্পষ্ট বার্তা তাঁর মুখে। বিধানসভা ভোটের আগে স্বভাবতই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিজেপি নেতৃত্ব।