কর্মপ্রার্থীদের কর্মলাভ কিছু বিলম্ব হবে। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য লাভ ঘটবে। বিবাহযোগ আছে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে ... বিশদ
ভারতের কৃষি অর্থনীতিতে ধান-গম-আলু-পেঁয়াজের উৎপাদন ও দাম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রায় প্রতি বছরই ফড়ে ও কালোবাজারি, মজুতদারদের চক্রান্তে মানুষের অবস্থা দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব সহ বিভিন্ন রাজ্যের ব্যবসায়ীরা এই বাজার নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকেন। সে কারণে দেশের মানুষের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে চড়চড় করে দাম বাড়িয়ে তোলা হয় প্রতিবারই। এমনিতেই দেশের সামগ্রিক আর্থিক দশা মন্দার মধ্য দিয়ে চলছে। এই পরিস্থিতিতে খরিফে উৎপাদন কম হয়েছে, এই সাফাই দিয়ে বাঁচতে চাইলেও পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে নাকানিচোবানি খাচ্ছে কেন্দ্র। অথচ, ঠিক মতো রাখার অভাবে পচে যাচ্ছে বস্তা বস্তা পেঁয়াজ। বর্ষার কারণেও ক্ষতি হয়েছে বলে জানাচ্ছে সরকার। তাই বাজারে জোগানের অভাবের কারণে রাজধানী দিল্লিতে এক কিলো পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা। কলকাতায় যার দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা ছুঁয়েছে। যদিও সরকার বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করতে আগেভাগেই ৫৬,৭০০ টন পেঁয়াজ সংগ্রহ করে রাখলেও আদতে তা সেভাবে কাজে দিচ্ছে না বলেই অভিযোগ। সংবাদ সূত্রে জানা গিয়েছে, নাফেডের কাছে আর মাত্র ১,৫২৫ টন পেঁয়াজ পড়ে আছে। তাই মজুত কমতে থাকার পাশাপাশি জোগান কম হওয়ায় চিন্তিত কেন্দ্র।
গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই রাজধানীতে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে হতে খোলা বাজারে ১০০ টাকা কিলোতে এসেছে পৌঁছনোয় চাপে পড়ে গিয়েছে মোদি সরকার। তাই রাজ্যগুলিকে যেমন মজুতদারদের দিকে বাড়তি নজরদারি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, অন্যদিকে পেঁয়াজের রপ্তানি সম্পূর্ণ বন্ধ করা হয়েছে। এমনকী দেশীয় বাজারে জোগান বাড়াতে আফগানিস্তান, মিশর, ইরান এবং তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের কোথাও কেউ যাতে অহেতুক পেঁয়াজ মজুত করে রাখতে না পারে, তার জন্যও বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র। বেঁধে দেওয়া হয়েছে পরিমাণ। খুচরোর ক্ষেত্রে কোনও ব্যবসায়ী ১০ মেট্রিক টন এবং পাইকারি বিক্রেতার ক্ষেত্রে ৫০ মেট্রিক টনের বেশি কেউ পেঁয়াজ মজুত করতে পারবে না বলেই কড়া অবস্থান নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু, এখানেই তো আসল সমস্যা, বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে?
খরিফ মরশুমে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ উৎপাদন কম হয়েছে। বৃষ্টির জন্যও নষ্ট হয়েছে অনেক। তাই বাজারে পেঁয়াজ কম। যদিও কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করছে, চলতি নভেম্বরের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম কমবে। মূলত মহারাষ্ট্র থেকে পেঁয়াজের সরবরাহ কম হওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন কমই দাম বৃদ্ধির কারণ বলে দায়িত্ব পাশ কাটাতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। গতবার যেখানে খরিফ মরশুমে ৩০ লক্ষ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছিল, এবার তা হয়েছে ২০ লক্ষ টন মতো। এক্ষেত্রে মজুতদারি ও কালোবাজারি রুখতে সব জায়গাতেই পৃথক সেল গঠন করা জরুরি। শুধু কমিটি গঠনই নয়, তাকে সক্রিয়, স্বচ্ছ-দুর্নীতিমুক্ত ও তার হাতে ক্ষমতা প্রদান করতে হবে। তা না হলে, মূল্যবৃদ্ধির যে ঘূর্ণাবর্ত চলছে দেশজুড়ে, তার ঝড়ে ঝাপটায় হেঁশেলে সমস্যা বাড়তে পারে আম জনতার।