পেশাদার উকিল, সাহিত্যিক, বাস্তুবিদদের কর্মের প্রসার ও ব্যস্ততা বৃদ্ধি। বিদ্যা ও পুজোপাঠে শুভ দিন। ... বিশদ
২০২২ সালে ৩ডিসেম্বর রাতে ভূপতিনগর থানার অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন নাড়ুয়াবিলা গ্রামে বিস্ফোরণ হয়। বোমা বাঁধার সময় সেই বিস্ফোরণ হয়েছিল বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সেই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্না ও দুই দলীয় কর্মী বিশ্বজিৎ গায়েন এবং লালু মান্না নিহত হন। প্রথমে জেলা পুলিস ওই ঘটনার তদন্ত করলেও পরবর্তীতে এনআইএ তদন্তভার পায়। গত ৯ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী অফিসার অর্পণ সাহা ঘটনাস্থল ভিজিট করেন। তারপর ঠিক লোকসভা ভোটের মুখে বুধবার একসঙ্গে আট তৃণমূল নেতাকে নোটিস পাঠিয়ে বৃহস্পতিবার এনআইএ অফিসে তলব করা হয়।
বৃহস্পতিবার নাড়ুয়াবিলা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বিস্ফোরণে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া সেই বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলে অ্যাসবেসটসের ছাউনি দেওয়া নতুন বাড়ি তৈরি হয়েছে। বাড়ির চারপাশে বাঁশের বাখারি দিয়ে বেড়া। নিহত রাজকুমার মান্নার স্ত্রী একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যা। ওই গোষ্ঠী নাড়ুয়াবিলা গঙ্গাধর আদর্শ বিদ্যায়তনে মিড ডে মিল রান্নার কাজ করে। বৃহস্পতিবার লতারানি মান্নাও ওই স্কুলে মিড ডে মিল রান্নার কাজে ছিলেন। বাড়িতে ছিলেন তাঁর বিবাহিতা মেয়ে সরস্বতী বেরা। সরস্বতী বলেন, বাবার মৃত্যুর জন্য যাঁরা দায়ী তাঁদের শাস্তি হোক। অযথা, নিরীহদের টার্গেট করা উচিত নয়।
লতারানি মান্না বলেন, আমার স্বামী তৃণমূল কংগ্রেস বুথ সভাপতি ছিলেন। নাড়ুয়াবিলা গ্রামে দলকে নেতৃত্ব দিতেন। ঘটনার দিন আচমকা বিস্ফোরণ হয়। তাতে আমার স্বামী সহ তিনজন মারা যান। ওই ঘটনায় কারা দোষী সেটা এনআইএ তদন্ত করে বের করুক। অযথা বেছে বেছে নেতাদের নোটিস পাঠিয়ে হয়রানি করা উচিত নয়। আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। আর হারানোর কিছু নেই। বারবার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তকারী অফিসার বদল হচ্ছে। নতুন অফিসাররা এসে একবার করে নোটিস ইস্যু করছেন।
জেলা পরিষদের পূর্ত ও পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ মানব পড়ুয়া, অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অরুণ মাইতি, মনোব্রত জানা সহ মোট আটজনকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবারই তাঁদের তলব করা হয়েছিল। যদিও কেউই হাজির হননি। এনআইএ নোটিস পাওয়ার পর ওই নেতারা আতঙ্কে গাঢাকা দিয়েছেন। মানব পড়ুয়া সহ কয়েকজনের মোবাইল সুইচ অফ। গোটা ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। ভগবানপুর-২ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অম্বিকেশ মান্না বলেন, বিজেপির নির্দেশমতো কাজ করছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। ঠিক ভোটের সময় নেতৃত্বকে নোটিস পাঠিয়ে বিব্রত করছে।
ভগবানপুরের বিধায়ক বিজেপির রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে তদন্তকারী সংস্থা ডাকতেই পারে। দোষী না হলে তাতে ভয় পাওয়ার কী আছে? প্রত্যেকের তদন্তে সহযোগিতা করা উচিত।