কর্মলাভের যোগ আছে। ব্যবসায় যুক্ত হওয়া যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। বুদ্ধিমত্তার জন্য প্রশংসা জুটবে। ... বিশদ
ইংলিশবাজার মিউনিসিপ্যাল ওয়াকার্স ইউনিয়নের সম্পাদক মৃন্ময় বসাক বলেন, পুরসভার খাতায় প্রায় দেড় হাজার সাফাই কর্মী রয়েছে। অথচ বাস্তবে তার অর্ধেকও কাজ করেন না। ভূতুড়ে কর্মীদের পুরসভার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। তাদের জন্য বরাদ্দ টাকা প্রকৃত কর্মীদের মধ্যে ভাগ করতে হবে। তাহলে পরিষেবার মান আরও ভালো হবে। পুরসভা দাবি না পূরণ করলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।
ইংলিশবাজার পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, পুরসভার সাফাইকর্মীদের নিয়ে ব্যক্তিগত কাজ করানো উচিত নয়। প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে কাউন্সিলারদের সঙ্গে আলোচনা করব। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, আগে সাফাইকর্মীদের জন্য দৈনিক মাথাপিছু ৮০ টাকা করে বরাদ্দ করা হতো। আমি পদে বসার পর থেকে জনপ্রতি বরাদ্দের পরিমাণ বাড়িয়ে ১৮০ টাকা করি। প্রতি মাসে প্রাপ্য বেতনের উপর অতিরিক্ত সাত শতাংশ টাকা চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ফলে আগের তুলনায় ওই খাতে মাসিক খরচ পাঁচ লক্ষ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি মাসে নিজস্ব তহবিল থেকে ৭০ লক্ষ টাকা চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বেতন দিতে চলে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইংলিশবাজার পুরসভাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বহু বিতর্ক হয়েছে। তবে পুর নির্বাচনের আগে বিপুল সংখ্যক ভূতুড়ে সাফাইকর্মীর বিষয়টি সামনে আসায় শহরজুড়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা কার্যত কিছু মানুষকে কাজের নামে পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। সাফাইয়ের জন্য বরাদ্দ টাকা যথাযথ ব্যয় হলে শহরের অলিগলি ঝকঝক করত বলে বাসিন্দারা মনে করেন।
এক পুর কর্তা বলেন, সাফাইকর্মী মূলত কাউন্সিলাররাই ঠিক করেন। পুরসভা শুধু মাথাপিছু টাকা বরাদ্দ করে। বড় ওয়ার্ডে বেশি সংখ্যক সাফাইকর্মী দেওয়া হয়। তুলনায় ছোট ওয়ার্ডে সাফাইকর্মীর সংখ্যা কম। তবে প্রভাব খাটিয়ে কেউ আবার ছোট ওয়ার্ডের জন্যও বেশি সংখ্যক সাফাই কর্মী বরাদ্দ করিয়ে নেন। বর্তমানে শহরের কয়েকজন কাউন্সিলার রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা হয়ে রয়েছেন। নিজের দলের কাছেও তাঁরা ক্রমে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছেন। সঙ্গে লোকবল রয়েছে প্রমাণ করতে তাঁরা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। সাফাই কর্মীদের জন্য পুরসভার বরাদ্দকৃত অর্থে তাঁরা অনুগামীদের ‘বেতন’ দিচ্ছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাউন্সিলারের সঙ্গে অনুগামীরা ঘুরে বেড়ান। সফাই কর্মী হিসাবে পুরসভা থেকে বেতন নিলেও তাঁরা কোনওদিন হাতে ঝাড়ুও ধরেননি। তাঁদের পোশাক দেখেও সাফাই কর্মী বলে মনে হবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল কাউন্সিলার বলেন, আমার ওয়ার্ড বড় হওয়া সত্ত্বেও সাফাই কর্মীর সংখ্যা কম। অথচ দলেরই এক ‘হেভিওয়েট’ কাউন্সিলারের ওয়ার্ডের আয়তন কম হলেও সাফাই কর্মীর সংখ্যা বেশি। অবশ্য সবই খাতায় কলমে। ভূতুড়ে সাফাইকর্মীরা কাউন্সিলারের ফরমাস খাটায় ওয়ার্ড অপরিষ্কার থাকে। ওয়ার্ডের বেকার যুবকরাও আমাদের উপর রুষ্ট হচ্ছেন।