কর্মলাভের যোগ আছে। ব্যবসায় যুক্ত হওয়া যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। বুদ্ধিমত্তার জন্য প্রশংসা জুটবে। ... বিশদ
গতবছর শিলিগুড়ি শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক আকার নিয়েছিল। শহরের ১২, ১৩, ১৯, ২০, ২১ সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে এক হাজারের বেশি বাসিন্দা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। বেসরকারি সূত্রের হিসেব অনুসারে ডেঙ্গুর ছোবলে এক ছাত্র সহ চারজনের মৃত্যুও হয়। এরপর শীতের মরশুম শুরু হতেই মশাবাহিত ওই রোগের দাপট কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হয়। মশার উপদ্রবও কমে যায়। এই অবস্থায় নতুন বছরের শুরুতেই শহরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর হদিশ মিলেছে। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত জ্বরে আক্রান্ত বেশকিছু রোগীর রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত দু’জন রোগী মিলেছে। আক্রান্তদের বাড়ি শিলিগুড়ি শহরেই।
জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, জানুয়ারি মাসে ওই দু’জন রোগীর সন্ধান মিলেছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিলিগুড়ি পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য সিপিএমের শঙ্কর ঘোষ অবশ্য বলেন, এবার এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত কোনও রোগীর খোঁজ মেলেনি। কাজেই ওই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।
অতীতের শিক্ষা নিয়ে এবার ডেঙ্গু দমনে ঝাঁপিয়েছে বামফ্রন্ট শাসিত শিলিগুড়ি পুরসভা। ইতিমধ্যে তারা অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করেছে। নাগরিকদের সচেতন করতে প্রচার অভিযানে নেমেছে। এমনকী তারা নাগরিকদের জন্য পুস্তিকাও প্রকাশ করেছে। তা সত্বেও শহরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর হদিশ মেলায় শহরবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, সর্বত্র নিকাশি নালা সাফাই করা হয় না। কিছু নালাতে জল দাঁড়িয়ে থাকে। তাছাড়া শহরের পতিত কিছু এলাকায় জঞ্জালের স্তূপ জমা হলেও পুরকর্তৃপক্ষ নিয়মিত সেগুলি সাফাই করছে না। এককথায় মশার আঁতুরঘর ধ্বংস করার উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ দেখা যায়নি। তাই শীতের দাপট কিছুটা কমতেই মশার উপদ্রব বেড়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘরের জানালা খুলে রাখা যাচ্ছে না। বাড়ির বারান্দা কিংবা এলাকার চায়ের দোকানে বসে গল্প করা যাচ্ছে না। মশা ছেঁকে ধরছে। কাজেই, এখনই মশার বংশনিধনে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে পারে।
এনিয়ে পুরসভার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের রঞ্জন সরকার বলেন, পুরসভা শুধু মেয়রের ছবি নিয়ে প্রচার করছে। বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই করছে না। ওদের ব্যর্থতার জেরেই শহরে ফের থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গু।
বামফ্রন্ট শাসিত পুরসভা অবশ্য ব্যর্থতার অভিযোগ মানতে নারাজ। শঙ্করবাবু বলেন, স্বাস্থ্যদপ্তরের পরামর্শ মতো ডেঙ্গু দমনে নাগরিকদের সচেতন করতে লাগাতার প্রচার অভিযান চলছে। কিছু এলাকায় মশা মারার তেল স্প্রে করা হচ্ছে। ফাঁকা জায়গায় জমে থাকা জঞ্জাল সাফাই করা হচ্ছে। বছরভর এমন নানা কর্মসূচি চলবে। রাজনীতি করার উদ্দেশে বিরোধীরা না জেনে অপপ্রচার করছে।
অন্যদিকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যদপ্তর একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রোগ নিয়ন্ত্রণে ভেক্টর কন্ট্রোল টিমের সংখ্যা বাড়ানো হবে। মশার আঁতুরঘর চিহ্নিত করার পর তা ধ্বংস করা হবে। বর্ষার সময় ডোবা ও পুকুরে গাপ্পি মাছ ছাড়ার ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে। তাছাড়া ড্রোন ওড়ানো হতে পারে বলেও জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন।