শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্তশত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত সাফল্য।প্রতিকার: ... বিশদ
পাকিস্তানের আর পাঁচটা রাজনীতিবিদদের মধ্যে পড়েন না ইজাজ। কারণ, তিনি পাক সেনার ব্রিগেডিয়ার পদমর্যাদার আধিকারিক ছিলেন। এর পাশাপাশি আইএসআইয়ের পাঞ্জাব ইউনিটের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন এবং পারভেজ মোশারফের আমলে পাকিস্তানের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা, পাকিস্তানে জঙ্গিগোষ্ঠীর সমান্তরাল প্রশাসন চালানো নিয়ে যে ক’জন গুটিকয়েক ব্যক্তি অবহিত, তাঁর মধ্যে অন্যতম হলেন ইজাজ। কারণ, মার্কিন বাহিনীর থেকে লাদেনকে লুকিয়ে রাখার অন্যতম ‘কারিগর’ হিসেবে বারবার তাঁর নামই উঠে এসেছে। ফলে তাঁর এই মন্তব্যে কাশ্মীর ইস্যুতে ফের পাকিস্তানের মুখ পুড়ল বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। তবে তিনিই প্রথম নন, কাশ্মীর ইস্যুতে গোটা বিশ্বকে পাশে পেতে ইসলামাবাদ যে ব্যর্থ, বারবার সেই কথা বলেছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। তাঁর আক্ষেপ, ‘কাশ্মীর ইস্যুতে দু’হাত তুলে আমাদের গ্রহণ করতে রাজি নয় কেউই।’
তবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের এই ভাবমূর্তি যে একদিনে তৈরি হয়নি, তাও ওই সাক্ষাৎকারে স্বীকার করে নিয়েছেন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘একদিনে এটা হয় না। হয়ওনি। এতদিন ধরে যাঁরা পাকিস্তানকে শাসন করেছেন, তাঁদের হাত ধরেই আমাদের দেশের এই ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে। সবাই ভাবে আমরা আসলে দায়িত্বজ্ঞানহীন রাষ্ট্র।’ তাঁর এই মন্তব্য যে কতটা সত্যি, তার প্রমাণ সন্ত্রাসবাদীদের তহবিল প্রদান এবং অর্থ তছরুপের বিরুদ্ধে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স বা এফএটিএফের সাম্প্রতিকতম সিদ্ধান্ত। ভারতে নাশকতা চালানো হাফিজ সইদ, মাসুদ আজহারদের সংগঠনগুলির অর্থ সাহায্যে লাগাম পরাতে ব্যর্থ হওয়ায় গত মাসেই ইমরান খানের দেশকে ‘বর্ধিত কালো তালিকাভুক্ত’ করেছে এই আন্তর্জাতিক সংগঠনের এশীয় প্রশান্তমহাসাগরীয় গোষ্ঠী বা এপিজি। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা সংক্রান্ত ৪০টি মাপকাঠির মধ্যে ৩২টিতেও পাকিস্তান ব্যর্থ বলে জানিয়েছে এপিজি। অর্থাৎ, আগামী অক্টোবরে পুরোপুরি কালো তালিকাভুক্ত হওয়া থেকে দেশকে বাঁচাতে সন্ত্রাস দমনের উপর জোর দিতে হবে পাক প্রশাসনকে।
কিন্তু সমস্যা এখানেই। ইমরান খানের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল ‘নয়া পাকিস্তান’-এর। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন ক্ষমতায় এলে সন্ত্রাসবাদকে দেশ থেকে উপড়ে ফেলা হবে, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষায় জোর দেওয়া হবে এবং পাকিস্তানের সার্বিক উন্নয়নই হবে একমাত্র লক্ষ্য। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলের দাবি, তিনটির কোনওটিই তিনি করতে পারেননি। বরং নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের পুরনো মনোভাবকেই আঁকড়ে ধরেছেন। কিন্তু তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের একের পর এক মন্তব্য থেকেই পরিষ্কার, কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের এই মনোভাব আন্তর্জাতিক মহলে বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলতে পারেনি। -ফাইল চিত্র