সংবাদদাতা, শ্রীনগর, ২১ অক্টোবর: ব্লক উন্নয়ন পরিষদ (বিডিসি) নির্বাচনের প্রচারে যেতে পারছেন না কাশ্মীরের পঞ্চায়েত প্রধান এবং সদস্যরা। জঙ্গি হামলার আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাঁদের। গত সপ্তাহে দক্ষিণ উপত্যকায় অ-কাশ্মীরি শ্রমিকদের উপর জঙ্গি হামলার পর এই আতঙ্ক আরও বেড়েছে। জঙ্গি হামলার আশঙ্কা থাকায় নিজেদের এলাকায় প্রচারে যেতে পারছেন না বলে পঞ্চায়েত প্রধান এবং সদস্যরা প্রশাসনকে জানিয়েছেন। আগামী ২৪ নভেম্বর জম্মু ও কাশ্মীরে বিডিসি নির্বাচন। গতবারের বিজয়ী বিভিন্ন দলের সদস্যরা এবারও ভোটে লড়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন। ইতিমধ্যে নিরাপত্তার কারণে উপত্যকার একাধিক গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যদের শ্রীনগরের হোটেলে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁদের পরিবারকেও সেখানে রাখা হয়েছে। হোটেলে তাঁদের এবং পরিবারকে পুরোপুরি নিরাপত্তার বেষ্টনীতে রাখা হয়েছে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক দক্ষিণ কাশ্মীরের এক পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, বিগত দু’মাস ধরে আমি আমার নির্বাচনী কেন্দ্রে যেতে পারিনি। নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দারা হোটেলে এসে আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁরা আমাকে বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে গিয়েছেন। এখানে একপ্রকার ‘আটকে’ থাকায় এলাকা উন্নয়নের কাজ কিছুই করতে পারছি না। সম্প্রতি দক্ষিণ কাশ্মীরে অ-স্থানীয়দের উপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোটের আগে এলাকায় সন্ত্রাসের বাতাবরণ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যদের মধ্যেও আতঙ্ক তৈরি করতে ওই ধরনের হামলা হচ্ছে। নিরাপত্তাজনিত কারণেই আমাদের বাধ্য হয়ে শ্রীনগরের একাধিক হোটেলে থাকতে হচ্ছে। শ্রীনগরের হোটেলে থাকা সোপিয়ানের অপর এক পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, প্রাণের ঝুঁকি থাকায় আমি ও আমার পরিবারকে নিয়ে শ্রীনগরের হোটেলে রয়েছি। নিজের এলাকায় যেতে সাহস পাচ্ছি না। এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ঠিকাদাররা হোটেলে এসে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গিয়েছেন। তবে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে যাতে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত না হন, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, অ-কাশ্মীরি শ্রমিকদের উপর জঙ্গি হামলার পর থেকে পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যরা আতঙ্কে ভুগছেন।
উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করার পর এই প্রথম সেখানে কোনও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২৪ নভেম্বর জম্মু ও কাশ্মীরে ৩০০ বেশি ব্লক উন্নয়ন পরিষদে ভোটে হবে। ওই নির্বাচনের জন্য ৩ হাজার ৭০০ কোটি ব্যয় করছে কেন্দ্র। এখনও পর্যন্ত ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পঞ্চায়েতগুলিকে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা সময়মতো বরাদ্দ করতে আধিকারিকদের নির্দেশও দিয়েছে রাজ্যপাল প্রশাসন। এদিকে কাশ্মীরের গ্রামোন্নয়ন বিভাগের ডিরেক্টর ইতিমধ্যে পঞ্চায়েতের জন্য বরাদ্দ টাকা খরচ করার স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছেন।