নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্যের প্রচারে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততায় কোনও খামতি নেই। প্রার্থী এলাকায় আসছেন শুনেই অনেকে কাজ ফেলে তাঁকে দেখতে ছুটে আসছেন। কেউ তাঁকে জড়িয়ে ধরছেন, কেউ ঘামে ভেজা পাঞ্জাবি বদলে পরিয়ে দিচ্ছেন নতুন জামা। যাদবপুরের তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থীর প্রচারেও ভিড় হচ্ছে যথেষ্ট। কিন্তু স্বতঃস্ফূর্ততার নিরিখে সৃজন কিছুটা এগিয়ে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। এই আবহে সিপিএমের অন্দরে একটাই চিন্তা, ইভিএমে এই ভিড়ের প্রতিফলন ঘটবে তো? প্রার্থীকে একবার দেখা বা দু’টো কথা শোনার জন্য যতজন উৎসাহ দেখাচ্ছেন, তাঁদের প্রত্যেকের ভোট কি নিশ্চিত করতে পারছে কাস্তে-হাতুড়ি? যদিও আত্মবিশ্বাসী সৃজনের দাবি, মানুষের সমর্থন তাঁর পক্ষেই থাকবে।
বিগত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, বামেদের মিটিং-মিছিল বা যে কোনও কর্মসূচিতে কর্মী-সমর্থকদের ব্যাপক ভিড়। কিন্তু ভোটের ফলাফলে তার কোনও ইতিবাচক প্রভাব দেখা যায়নি। কমতে কমতে রাজ্য বিধানসভায় শেষ পর্যন্ত শূন্য হয়ে গিয়েছে বামেরা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম একাধিক নতুন ও তরুণ মুখকে প্রার্থী করেছে। শ্রীরামপুর, যাদবপুর, তমলুক ইত্যাদি কেন্দ্রে লড়াকু ছাত্র-যুব নেতাদের প্রার্থী করে তৃণমূল-বিজেপিকে জোর টক্কর দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। যাদবপুর এক সময় সিপিএমের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে এখন তা তৃণমূলেরই গড়। তবে সৃজন যেসব এলাকায় প্রচারে যাচ্ছেন, সেখানে মানুষ যেভাবে তাঁকে দেখে এগিয়ে আসছেন এবং অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন, তাতে বাকি দুই প্রতিপক্ষের চিন্তা বাড়তে পারে। এই আবহে তৃণমূলের একাংশ বলছে, সিপিএম যত ভোট পাবে, তৃণমূলের ততই লাভ।  বিজেপিতে যে ভোট চলে গিয়েছিল, সেটা বামেরা ফেরাতে পারলে গেরুয়া শিবিরেরই বড় ক্ষতি হবে এবং তৃণমূলের জয় আরও নিশ্চিত হবে। 
সিপিএম তথা বামেরা সৃজনকে ঘিরে এই আবেগকে ভোটবাক্স পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারবে? আপাতত সেই হিসেবেই মগ্ন লালপার্টির ভোট-ম্যানেজাররা। সৃজন অবশ্য বলছেন, ‘স্থানীয় ইস্যুতেই আমি বেশি জোর দিচ্ছি প্রচারে। সাধারণ মানুষ এগিয়ে এসে তাঁদের নানা অসুবিধার কথা বলছেন। আমরা তাঁদের সবরকমভাবে আশ্বস্ত করছি। যুবসমাজ থেকে আপামর মানুষ, সিংহভাগ ভোটদাতা বামেদের পক্ষেই যে থাকবেন, তাতে কোনও সংশয় নেই।’