নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। তাও দিনভর প্রচার করলেন হুগলি ও শ্রীরামপুরের প্রার্থীরা। শুভেচ্ছা বিনিময় থেকে নদীতে নৌকা নিয়ে প্রচার, নানা ভঙ্গিমায় বঙ্গাব্দের প্রথম দিন ভোটপ্রচার হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যার ভিড়ে বোঝাই রাস্তা। দেখা গিয়েছে প্রচারের ট্যাবলো থেকে প্রার্থীদের। হালখাতার দিনে ভোটপ্রচারের ‘হালখাতা’ কমবেশি সেরে রেখেছেন ডান থেকে বামপন্থী প্রার্থীরা। একে রবিবার, তায় বাংলা নববর্ষ, ফলে ভোটপ্রচারের যেমন আগ্রহ ছিল প্রার্থীদের, তেমনই উৎসাহী দেখিয়েছে আম জনতাকেও।
রবিবার সকাল সকাল সুসজ্জিত নৌকা নিয়ে প্রচারে নেমে পড়েন হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। চন্দননগরের ঘাট থেকে ত্রিবেণী পর্যন্ত তিনি জলপথে সফর করেন। দু’টি নৌকায় কর্মীদের নিয়ে তাঁর সেই সফর ঘিরে নাগরিক মহল্লায়ও বিশেষ আগ্রহের সৃষ্টি হয়। প্রচারের পাশাপাশি কুলো ও পাখা নিয়ে সনাতন বাঙালি আদলে আম জনতাকে শুভেচ্ছা জানানোর কাজও করেছেন বিজেপি কর্মীরা। সবটাই হয়েছে জলপথে।
এদিন লকেট বলেন, বলাগড়ের নৌকাশিল্প বাঁচিয়ে তোলার কাজ আমাদের করতে হবে। রাজ্য সরকার ওই শিল্পের জন্য কিছুই করেনি। বলাগড়ের গঙ্গা ভাঙন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার পদক্ষেপ করতে চেয়েছে কিন্তু রাজ্য সরকারের অসহযোগিতায় তা করা যায়নি। কেন্দ্রীয় সরকার ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্প নিয়েছিল। সেসবও রাজ্যে খুব বেশি কার্যকর হয়নি। লকেটের অভিযোগের জবাব দিয়েছেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে ধনেখালিতে গিয়েছিলেন তিনি। স্থানীয় বিধায়ক অসীমা পাত্রকে নিয়ে একাধিক গ্রামীণ মহিলা সমাবেশে যোগ দেন তিনি। তারকার দ্যুতি ঝেড়ে ফেলে গ্রামীণ মহিলাদের সঙ্গে দীর্ঘসময় খোশ মেজাজে গল্প করতে দেখা গিয়েছে রচনাকে। তিনি বলেন, যতদূর জানি, ক্ষুদ্রশিল্প দপ্তরের তরফে বলাগড়ের নৌকা শিল্প নিয়ে পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। রাজ্যের কুটিরশিল্প দপ্তরের মন্ত্রী নিজে এসে বলাগড়ের নৌকা কিনে নিয়ে গিয়েছেন। বর্ধমানের গ্রামীণ উৎসবে তা তুলে ধরা হয়। আর ভাঙন নিয়ে? কেন্দ্র কোনও পদক্ষেপই করেনি। শুধু হুগলি নয়, মালদহ, মুর্শিদাবাদও ভাঙন সমস্যায় জর্জরিত। মানুষ সবই জানেন। মানুষকে যিনি বোকা ভাবেন তিনি ভুল করেছেন এবং করছেন। হুগলির বাম প্রার্থী মনোদীপ ঘোষও এদিন শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে প্রচার করতে নেমেছিলেন। চুঁচুড়ার কনকশালি, মোতিবাগান থেকে বাঁশবেড়িয়ার বড় এলাকা জুড়ে তিনি প্রচার করেন।
শ্রীরামপুর লোকসভা আসনের জাঙ্গিপাড়া ও চণ্ডীতলার বিরাট এলাকা জুড়ে দাপিয়ে প্রচার করেন বিজেপির কবীরশঙ্কর বসু। সকাল থেকে জাঙ্গিপাড়ায় প্রচার শুরু হয়। কখনও পায়ে হেঁটে, কখনও গাড়িতে চেপে প্রচার করেন তিনি। শ্রীরামপুরের বাম প্রার্থী দীপ্সিতা ধর এদিন ডোমজুড়ে প্রচার করেন। আর প্রবীণ তৃণমূল নেতা ও প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন নিজে কোনও প্রচার করেনি। তবে প্রচারে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস।