নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কুকুরে কামড়ানোর পর ভ্যাকসিন একেবারে না নিলে বা নিয়ম মেনে না নিলে হতে পারে জলাতঙ্ক। চিকিৎসকরা জানান, মাত্র ৩-৪ শতাংশ মৃত্যুহার যে করোনা রোগে, তা নিয়ে হইচই হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু বহুগুণে বিপজ্জনক জলাতঙ্কে মৃত্যুহার অনেক বেশি— ১০০ শতাংশ! অথচ আজ পর্যন্ত জলাতঙ্ক রোগ পরীক্ষার কোনও পরিকাঠামোই নেই গোটা রাজ্যে। দেশেও নিমহ্যানস ও হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া এই পরীক্ষা হয় না। অথচ পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি জলাতঙ্কে মৃত্যুর ঘটনা ভারতেই। এবার রাজ্যের জলাতঙ্ক চিকিৎসার প্রধান কেন্দ্র বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালে হতে চলেছে রাজ্যের প্রথম র‌্যাবিস পরীক্ষাকেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা খরচে হবে এই কেন্দ্র। এখানে র‌্যাবিসের অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি পরীক্ষা হবে।
বুধবার আইডির সুপার ডাঃ আশিস মান্না এবং জলাতঙ্কের চিকিৎসার নোডাল অফিসার ডাঃ আশিসকুমার কুণ্ডু বলেন, কিছু ক্ষেত্রে লক্ষণ নিয়ে এলেও দেখা যায়, রোগটি জলাতঙ্ক নয়। এইসব ক্ষেত্রে রোগীর প্রাণ বাঁচাতে র‌্যাবিস পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি হতে পারে। এছাড়া অনেকে আগে কুকুরে কামড়ালে টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলা করেছেন। নির্দিষ্ট সময়ান্তর মেনে টিকা নেননি। তাঁদের ক্ষেত্রে ফের কুকুরে কামড়ালে কোন ডোজে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে জানতেও কাজে লাগবে এই পরীক্ষা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, কর্মসূচিতে অর্থসাহায্য করছে জাতীয় জলাতঙ্ক দূরীকরণ প্রকল্প বা ন্যাশনাল র‌্যাবিস কন্ট্রোল প্রোগ্রাম। তাদের পক্ষ থেকে সম্প্রতি আইডি হাসপাতালে যোগাযোগ করে জলাতঙ্কের পরীক্ষা ও গবেষণার জন্য কেন্দ্রটি চালু করতে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। কুকুরের পাশাপাশি অন্যান্য জীবজন্তুর কামড়ের ক্ষেত্রে (বিড়াল, ঘোড়া, বাঘের কামড়েও হতে পারে) এটি পরীক্ষানিরীক্ষার কাজ করবে। বর্তমানে কুকুরে কামড়ালে ক্ষতস্থানের ধরন দেখে তিন ধরনের শ্রেণীতে ভাগ করে চিকিৎসা চলে। আইডিতে এই তিন ধরনের চিকিৎসা হয়, কিন্তু এখনও পর্যন্ত র‌্যাবিস পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। -নিজস্ব চিত্র