কর্ম নিয়ে স্থানান্তর গমনে সাফল্যের যোগ। কর্মে স্থানগত বা সংস্থাগত পরিবর্তন অসম্ভব নয়। পারিবারিক ক্ষেত্রে ... বিশদ
নিয়ম হল, সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের প্রথম বছর নিজের কলেজ বা যে কোনও মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হয়। পরের দু’বছর সরকারের নির্দেশিত জেলা, মহকুমা বা গ্রামীণ হাসপাতালে পরিষেবা দিতে বাধ্য থাকেন এই শ্রেণির চিকিৎসকরা। অথচ, তাঁদের একটা অংশ নিজের কলেজে প্রথম বছর কাটানোর পর আর শহরের বাইরের হাসপাতালে যেতে চান না। বাকি সময়টা চুপটি করে তাঁরা নিজের কলেজে কাটিয়ে দেন। এই ‘অনিয়মে’র গোড়াতেই ঘা দিয়েছে রাজ্য সরকার। এই অর্ডার জারি হওয়ায় কিছুতেই আর গ্রাম বা মহকুমা এলাকার রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত রাখতে পারবেন না তাঁরা। স্বাস্থ্যদপ্তর কিন্তু জানাচ্ছে, নিয়ম আগেই ছিল। কাজে ‘ফাঁকি’ রুখতে এবং জনস্বার্থে আরও বেশি কঠোর হতে হল নবান্নকে। এমডি-এমএস পাশের পর স্বাস্থ্যদপ্তরের অধীনে কর্মরত সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের সংখ্যা ১ হাজার ১০০’র বেশি। তাঁদের ক্ষেত্রেই নয়া আদেশনামা কার্যকর হচ্ছে। স্বাস্থ্যদপ্তরের এক শীর্ষ সূত্র জানিয়েছে, এরপর এসআর’রা বন্ড সার্ভিসের নিয়ম মতো জনস্বার্থে গ্রামে না গেলে ভাতা বন্ধ তো হবেই। পাশাপাশি, যেসব মেডিক্যাল কলেজে তাঁরা পড়ছেন, সেখানকার অধ্যক্ষ- উপাধ্যক্ষরাও শাস্তির মুখে পড়তে পারেন। কারণ, কলেজ জানবে না, অথচ তাঁরা নিয়মকে কাঁচকলা দেখিয়ে বছর বছর সেখানে থেকে যাবেন, এমনটা হওয়া অসম্ভব!
কিছুদিন আগেই কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বিস্তর নাড়াচাড়া পড়েছিল। সরকার নির্দেশিত হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে না যাওয়া ৩১ জন সিনিয়র রেসিডেন্টকে বছরে ১০ লক্ষ করে মোট ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। কলকাতা, আর জি কর, এন আর এস সহ বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজগুলিতে কার্যত কান্নার রোল পড়ে যায়। দলে দলে এসআর’রা অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের কাছে গিয়ে ক্ষতিপূরণ মকুবের জন্য বারবার অনুরোধ জানান। শেষে অবশ্য সরকার তাঁদের এই ‘ক্ষতিপূরণ’ মকুব করেছে। তার পরই এই কড়া সিদ্ধান্ত। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, প্রায় ৫০ জন এসআর নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এই কাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিলেন। জেলা, মহকুমা বা গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁদের পাঠানো হলেও তাঁরা সেখানে যাননি। এই অর্ডারে স্পষ্ট বলা হয়েছে, নিয়ম মেনে না চলা এসআর’দের অবিলম্বে ‘রিলিজ’ করে দিতে হবে। সেইসঙ্গে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, ২০২৫’এর ১ জানুয়ারি থেকে এই সংক্রান্ত কোনও যুক্তি বা অজুহাতই আর মানা হবে না। বন্ড সার্ভিসের দ্বিতীয় বা তৃতীয় বছরের ‘ডিউটি’ নিয়ে ‘সমঝোতা’ করতে পারবেন না। জেলায় জেলায় তাঁদের যেতেই হবে। সেক্ষেত্রে অবশ্য যথারীতি কাউন্সেলিংয়ে বসে নিজেদের স্কোর অনুযায়ী পোস্টিং পাওয়ার সুযোগ মিলবে।