বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
যদিও শিক্ষা দপ্তর জুতোর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক উড়িয়ে দিয়েছে। আধিকারিকদের দাবি, এটা নতুন কিছু নয়। বেশ কয়েক বছর ধরেই ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার কথা ভেবে জুতো দিচ্ছে রাজ্য সরকার। চলতি বছরে মার্চ মাসের মধ্যে জুতো না দিলে পরবর্তী সময়ে জুতো বিলিতে সমস্যা হতে পারে। সেই কারণেই আগামী সপ্তাহে অন্যান্য বছরের মতো ছাত্রছাত্রীদের জন্য জুতো স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(প্রাথমিক) চাপেশ্বর সর্দার বলেন, ছাত্রছাত্রীদের জন্য আসা জুতো স্কুলে পৌঁছনো ও সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট রাজ্যে পাঠানোর বিষয়ে আমাদের কাছে চিঠি এসেছে। জুতো আসার সঙ্গে সঙ্গে নিয়ম মেনে দ্রুত তা স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে ফি বছরই খুদে পড়ুয়াদের পোশাক দেওয়া হয়। গত কয়েক বছর ধরে তার সঙ্গে যোগ হয়েছে জুতোও। দু’সেট পোশাকের জন্য আগে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার ৪০০ টাকা করে বরাদ্দ করত। এবার তা ২০০ টাকা বাড়িয়ে ৬০০ টাকা করা হয়েছে। পোশাকের পাশাপাশি জুতো দেওয়ার সিদ্ধান্তে পড়ুয়া থেকে অভিভাবক, সকলেই খুশি।
শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৭ তারিখ স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কমিশনার সৌমিত্র মোহন রাজ্যের সমস্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকদের(প্রাথমিক) কাছে একটি চিঠি পাঠান। তাতে বলা হয়, ২০১৯ সালে প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত সমস্ত ছাত্রছাত্রীকে জুতো দেওয়া হবে। টেক্সট বুক কর্পোরেশন লিমিটেড সার্কেল লেভেল পর্যন্ত জুতো পৌঁছে দেবে। সমস্ত এসআইকে ওই জুতো দ্রুত ছাত্রছাত্রীর মধ্যে বিতরণের জন্য স্কুলে স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সমস্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে সপ্তাহের শেষে অর্থাৎ শুক্রবার বিকেল ৩টের মধ্যে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট রাজ্যে পাঠাতে হবে। যাতে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট ওই দিন ৫টার মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর জন্য তৈরি করা যায়। সমস্ত বিদ্যালয় পরিদর্শক(প্রাথমিক) এই কাজের জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকবেন।
ওই চিঠিতে রিপোর্ট পাঠানোর ফরম্যাটও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে, তারিখ, জেলার নাম, কত সংখ্যক জুতো প্রয়োজন, কত পরিমাণ জুতো সার্কেল ও স্কুল লেভেলে পৌঁছেছে ও তারমধ্যে কত জুতো ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হয়েছে, সেই তথ্য রাজ্যে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল তৃণমূল প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি নীলকান্ত অধিকারী বলেন, অন্যান্য বছর শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই ছাত্রছাত্রীদের জুতো দেওয়া হয়েছিল। এবছর কোনও কারণে হয়তো একটু দেরি হয়েছে। তবে এবারও তা দেওয়া হবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত স্কুলে ছাত্রছাত্রীর জন্য জুতো পৌঁছনোর কথা রয়েছে। তিনি বলেন, এর সঙ্গে রাজনীতি বা ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ, ছাত্রছাত্রীদের কেউ ভোট দেবে না। মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় মানবিক সরকার ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে প্রতিবছর এভাবে জুতো দেয়।
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক অরূপকুমার ভৌমিক বলেন, এবারও শিশু শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। প্রথম শ্রেণী থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি শিশুশ্রেণীর ছাত্রছাত্রীকে জুতো দেওয়ার দাবি আমরা প্রশাসনের সর্বস্তরে জানিয়েছি।
বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক সতীশ সাউ বলেন, পোশাক দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য ও কেন্দ্র, উভয়ের শেয়ার থাকে। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের জুতো দেয় রাজ্য সরকারই। এটা সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের প্রকল্প। ২০১৬ সালের পর রাজ্য জুতো দেয়নি। এবার ফের দিচ্ছে। আমাদের দাবি, শুধু ভোটের বছর নয়, ফি বছরই ছাত্রছাত্রীদের জুতো দিতে হবে। একই সঙ্গে প্রাক প্রাথমিকেও জুতো দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি আমরা।