শাস্ত্র অধ্যয়নে গতি বৃদ্ধি ও পরীক্ষায় শুভ ফল লাভের সম্ভাবনা। নতুন কর্মপ্রাপ্তি হতে পারে। দাম্পত্যে ... বিশদ
পরিবারের ছোট মেয়ে ক্লাস নাইনের প্রিয়ংবদার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। সোমবার পরীক্ষা দিতে যায় সে। দুপুরে ফিরে আসে। মঙ্গলবার ছুটি ছিল। সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ হরিদেবপুরের বাড়ি থেকে রোমিকে ফোন করেন মা চিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাতনির সঙ্গে কথা বলতে চান দিদা। কিন্তু, রোমি জানান, ‘ও পড়ছে।’ কাঁদতে কাঁদতে চিত্রাদেবী বললেন, ‘সেটাই মেয়ের সঙ্গে শেষ কথা। অস্বাভাবিক কিছু হতে যাচ্ছে, মেয়ের কথা শুনে তখন মনে হয়নি। মঙ্গলবার সকালে ফোন করি। সুইচড অফ পাই। মেয়ের শ্বশুরবাড়ির সবারই ফোন বন্ধ ছিল।’
দে বাড়ির পাশেই এক আবাসনের কেয়ারটেকার বলছেন, ‘ওদের বাড়িতে নিত্যপুজো হয়। সকালে একজন ফুল দিয়ে যেতেন। দরজাতেই সেই প্লাস্টিক ঝোলানো থাকতো। ওই যে দেখুন এখনও রয়েছে। গত সোমবার থেকেই ওই প্লাস্টিক বাইরে ঝোলানো। মঙ্গলবার থেকে সেই ফুল সরবরাহকারী আসছেন না। সকাল ৭টা নাগাদ আসতেন পুরোহিত। মঙ্গলবার থেকে তাঁরও দেখা নেই। ওইদিন থেকে খবরের কাগজ দিতে আসেননি হকার।’ এখানেই পুলিসের সন্দেহ, তাহলে কি মঙ্গলবার থেকে বাড়ির পুরোহিত, ফুল ব্যবসায়ী, কাগজের হকারকে আসতে নিষেধ করে দিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা?
অপরদিকে, তিন খুনের তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার দে বাড়ির ভিতরে থাকা সিসি ক্যামেরার যাবতীয় ফুটেজ সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা। খতিয়ে দেখতে গিয়ে একের পর এক অস্বাভাবিকতা নজরে আসে গোয়েন্দারাদের। মঙ্গলবার সকাল থেকে কেউ ওই বাড়িতে আসেননি। অর্থাৎ, পাশের বাড়ির কেয়ারটেকারের বক্তব্যের সঙ্গে মিল রয়েছে। অন্যদিকে, ভিতরের ফুটেজ বলছে, বাড়ির ভিতরের দালানে প্রণয় ও প্রসূন একসঙ্গে বসে গভীর আলোচনায় মগ্ন। প্রায় আধঘণ্টা চলে সেই কথাবার্তা। সেখানেই কি চলছিল খুনের ছক? সারাদিনে বাড়ির বাইরে কেউ বের হননি। অন্যদিকে, দুপুরের পর থেকে বেশ কিছু ফুটেজ আরও সন্দেহজনক। সূত্রের দাবি, বড় ভাই প্রণয় তাঁর ছেলেকে নিয়ে তিনতলায় উঠে যাচ্ছেন। এরপর ইতস্ততভাবে ৪-৫ বার ওঠা-নামা করছেন প্রসূন। একবার, দোতলা থেকে এক তলা, একতলা থেকে তিনতলা। তারপর বেশ কিছুক্ষণ কেটে যাওয়ার পর দোতলায় নেমে আসে তারা।
পুলিসের দাবি, মঙ্গলবার রাতে অনলাইনে খাবার অর্ডার করা হয়েছিল দে বাড়ি থেকে। ওইদিন রাত ১২টা বেজে ৫৩ মিনিট। বাড়ি থেকে বের হয় দে পরিবারের গাড়ি। বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে, দ্বিতীয় হুগলি সেতু, এজেসি বোস ফ্লাইওভার, পার্ক সার্কাস ক্রংসিং সায়েন্স সিটি ও ই এম বাইপাস হয়ে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছয় গাড়িটি। পুলিস বলছে, সেই সময়েই প্রণয়ের ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করা হয়। কিন্তু, সে রাজি না হওয়ায় তাকে নিয়ে শহরজুড়ে চক্কর কাটতে থাকেন দুই ভাই। শেষে ভোর সোয়া তিনটে নাগাদ কালিকাপুরের কাছে মেট্রো পিলারে ধাক্কা!