হস্তশিল্পীরা বিশেষ স্বীকৃতি ও সুনাম পেতে পারেন। পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। ব্যয় কিঞ্চিৎ বাড়তে পারে। ... বিশদ
ছিটমহল বিনিময় কার্যকর হওয়ার পর ২০১৫ সালের ২২ থেকে ৩০ নভেম্বর চ্যাংরাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ৯২১ জন বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছিলেন। তাঁরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ভারতীয় ছিটমহলের বাসিন্দা ছিলেন। কিছুদিন অস্থায়ী ক্যাম্পে রাখার পর ফ্ল্যাট বানিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের। কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকের ১৫২ পানিশালা গ্রামের তারারবাড়ি এলাকায় নব্য ভারতীয়দের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে সাতটি ফ্ল্যাট তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে ৫৬টি পরিবারকে। পরিবারগুলির অভিযোগ, তারা ভারতের নাগরিকত্ব পেলেও অনেক নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া নানা প্রতিশ্রুতি আজও পূরণ হয়নি। মেলেনি কর্মসংস্থান।
কার্তিক বর্মন, বিশ্বনাথ রায়, রঞ্জিত রায়, সরস্বতী বর্মন, রুমিতা রায়ের কথায়, ফ্ল্যাট বাড়ি মিলেছে ঠিকই, কিন্তু কর্মসংস্থান কোথায়? পেটের তাগিদে দিনমজুরি করতে যেতে হচ্ছে অন্যের বাড়িতে। কেউ চালাচ্ছেন টোটো, কেউ বা ভাড়া গাড়ি। উপার্জনের আশায় ফ্ল্যাটে পুষতে হচ্ছে হাঁস-মুরগি ও গোরু- ছাগল। কেউ আবার কাজের খোঁজে ভারতের ভিনরাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। ফ্ল্যাটের বাসিন্দা কণিকারানি বর্মন বলেন, এখানকার ৫৬টি পরিবারের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১০টি পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি। অন্য জায়গা থেকে বিদ্যুতের সংযোগ নিয়ে অথবা কেরোসিনের আলোয় রাত্রিযাপন করতে হচ্ছে। দেখার কেউ নেই।
সবিতা বর্মন, সুশীল বর্মন, যুগল রায়ের বক্তব্য, ফ্ল্যাট বেহাল হয়ে পড়েছে। ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ছে। নালা নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। ফলে মশামাছির উপদ্রব বেড়েছে। কার্তিক বর্মন, সিদ্ধার্থ বর্মন বলেন, কর্মসংস্থানের অভাব। অন্যের জমি লিজে নিয়ে চাষাবাদ করছি। কয়েক মাস হল পানীয় জলের উৎস বিকল হয়ে পড়েছে। কিন্তু সারাইয়ের উদ্যোগ নেই। বাইরে থেকে জল বয়ে নিয়ে আসতে হচ্ছে।
নাগরিকত্ব মিললেও সাবেক ছিটমহলবাসীর দুর্দশার ছবি যে বদলায়নি, ১৫২ পানিশালা গ্রামের তারারবাড়িতে পা রাখলেই স্পষ্ট বোঝা যায়। বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট, ভিসা নিয়ে ক’দিন আগে ভারতে মেয়ের ফ্ল্যাটে এসেছেন সুমিত্রা বর্মন। তিনি বলেন, এক বুক আশা নিয়ে মেয়ে-জামাই ভারতের নাগরিকত্ব নিয়েছে। সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কাজ দেবে। কিন্তু মেয়ে-জামাই কারও কাজ জোটেনি। দিনমজুরি করে দিন গুজরান করছে ওরা।
মেখলিগঞ্জের বিডিও অরিন্দম মণ্ডল অবশ্য বলেন, সাবেক ছিটমহলবাসীকে স্বাবলম্বী করে তুলতে সরকার নানা পরিকল্পনা নিয়েছে। মহিলাদের কর্মসংস্থানমুখী প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তারপরও বাসিন্দাদের কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না খোঁজ নিয়ে দেখব।