নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: প্রেমের টানে ঘর ছেড়েছিল দশম শ্রেণির নাবালিকা। প্রেমিকই পঠিয়ে দিয়েছিল ট্রেনের টিকিট। বুদবুদ থেকে অসম— দূরত্বটা নেহাৎ কম নয়। ফলে শুধু টিকিট নয়, টাকাও লাগবে প্রেমিকার। কার্পণ্য করেনি ‘সুহৃদয়’ প্রেমিক সাতাশ বছরের যুবক। প্রয়োজনীয় টাকাও পাঠিয়ে দিয়েছিল সে। আহ্লাদে আটখানা ওই ছাত্রী। সুখে সংসার গড়ার স্বপ্ন নিয়ে ট্রেনে চেপে বসে। গন্তব্য অসমের শিলচর। দেখা হল প্রেমিকের সঙ্গে। সেখান থেকে করিমগঞ্জ। একটি ভাড়া বাড়িতে দেবতার ছবিকে সাক্ষী রেখে প্রেমিকার সিঁথি সিঁদুরে রাঙিয়ে দেয় প্রেমিক প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। ক’দিন যেতে না যেতেই ছাত্রীটি টের পেল স্বামীটি আসলে এক ধুরন্ধর যুবক। কীভাবে, সংসারে চার হাতে আয়ের প্রস্তাব দিয়ে নববধূকে প্রদ্যুৎ শিলচরের একটি স্পা’তে কাজে ঢুকিয়ে দেয়। অভিযোগ, সেই স্পা’তে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করা হয় ছাত্রীটিকে। তার থেকে দিনে যা রোজগার হতো তা নিয়ে নিত প্রদ্যুৎ। এমনকী, একদিন পাঁচ বন্ধুকে দিয়ে নিজের স্ত্রীকে গণধর্ষণও করায় সে। এমন হাড়হিম ঘটনার পর প্রেমিকের প্রতি মোহভঙ্গ ঘটে ছাত্রীটির। সে গোপনে যোগাযোগ করে এক আত্মীয়ের সঙ্গে। তাঁকে সব খুলে বলে। তখনই পুলিসের দ্বারস্থ হয় ছাত্রীটির পরিবার। বুদবুদ থানার পুলিস অসমে অভিযানে যায়। ওই স্পা থেকেই নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়। ধরা পড়ে যায় প্রদ্যুৎও।
বুধবার অভিযুক্তকে দুর্গাপুর আদালতে তোলা হয়। বিচাকর তিন দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিস অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ করবে বলে জানা গিয়েছে। এসিপি সুমন জশওয়াল বলেন, ‘অসম থেকে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ জানা গিয়েছে, বুদবুদ থানার মানকর এলাকায় নাবালিকার বাড়ি। বাবা ও মায়ের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর মামার বাড়িতেই থাকত সে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রদ্যুতের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। ক্রমেই দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। নতুন ঘর বাঁধার স্বপ্নে বিভোর হয়ে মামাবাড়ি ছাড়ে দশম শ্রেণির পড়ুয়া। পুলিস জানতে পেরেছে, ওই স্পা’তে চলত দেহ ব্যবসা। প্রদ্যুৎ সেই ব্যবসায় নামিয়ে প্রচুর টাকা উপার্জনের নেশায় ছাত্রীটিকে সংসার বাঁধার টোপ দিয়েছিল।