হস্তশিল্পীরা বিশেষ স্বীকৃতি ও সুনাম পেতে পারেন। পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। ব্যয় কিঞ্চিৎ বাড়তে পারে। ... বিশদ
প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে কয়লা পাচার কাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর করেছিল সিবিআই। অভিযুক্ত হিসেবে পয়লা নম্বরে নাম ছিল ইসিএলের প্রাক্তন জিএম অমিতকুমার ধরের। মঙ্গলবার কলকাতার নিজাম প্যালেসে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিদ্যাসাগর দাস ও শ্রীমন্তকুমার ঠাকুরকেও। বুধবার অভিযুক্তদের আসানসোল সিবিআই বিশেষ আদালতে তুলতেই বিচারকের তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এফআইআরে প্রথম নাম থাকা অভিযুক্তকে ধরতে সাড়ে তিন বছর সময় লাগলো? বিলম্বের কারণ হিসেবে সিবিআই নানা যুক্তি দিলেও তা মানতে চাননি বিচারক। বরং পাল্টা জানতে চান, একটা মামলার নাম বলুন তো, যেটা আপনারা দশ বছরের মধ্যে নিস্পত্তি করেছেন। এরপরেই হুশিয়ারির সুরে বিচারকের সংযোজন—আগামী ৩ জুলাই এই মামলার চার্জ গঠনের দিন রয়েছে। সেদিন হলে ভালো, না হলে আমিই চার্জ নিয়ে নেব।
২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর। অনুপ মাজি ওরফে লালার পাশাপাশি ইসিএলের পাঁচ আধিকারিকের নামে কয়লা পাচারের অভিযোগ দায়ের করে সিবিআই। তোলপাড় শুরু হয়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। চর্চায় উঠে আসে বহু প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও পুলিস কর্তাদের নাম। কিন্তু এই সাড়ে তিন বছরে ইসিএলের কয়েকজন শীর্ষ আধিকারিক ছাড়া কোনও রাঘববোয়ালকেই জালে তুলতে পারেনি সিবিআই। এই প্রথম পয়লা নম্বর অভিযুক্তকে ধরল তারা। কিন্তু কেন এত দেরী? বিচারকের প্রশ্নে সিবিআইয়ের যুক্তি, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করতে সময় লেগেছে। বিচারক পাল্টা বলেন, তার মানে শুধু সন্দেহের ভিত্তিতেই তাঁর নাম এফআইআরে ঢোকানো হয়। ফলে, এতদিন উনি সমাজে কয়লা চোর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছেন। তার দায় কে নেবে? এটা কী ধরনের তদন্ত চলছে? সিবিআই তদন্তকারি অফিসার বলেন, অত্যন্ত বড় মামলা। সব দিক দেখতে হচ্ছে। তাই দেরি হয়েছে। কিছুটা সময় লাগছে। বিচারক তখন বলেন, সিবিআইয়ের মতো সংস্থার সাড়ে তিন বছর পরও বলছে, টাইম লাগবে। মামলাটা বড় না আপনারা বড় করছেন? যারা সাইকেলে করে কয়লা টেনে নিয়ে যায়, তাদের ধরে অনুন। ৪০ জন অভিযুক্ত রয়েছে, ৪০০ জন হোক।
সিবিআই আইনজীবী রাকেশ কুমার তখন বলেন, তাহলে আপনিই তদন্তের দিক নির্দেশ করুন। বিচারক বলেন, এই চেয়ারে থেকে সেটা পারি না। আমি ৩ জুলাই মামলার চার্জ গঠনের দিন ধার্য করেছি। আপনারা তার জন্য কী সহযোগিতা করছেন দেখতেই পাচ্ছি। অভিযুক্তর আইনজীবী শেখর কুণ্ডু বলেন, এফআইআরে ২ নম্বর অভিযুক্ত জে সি রায় এখনও বাইরে। এরপর বিচারক আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন, এবার পিপি সাহেব কী বলবেন? আপনারা তাঁকে গ্রেপ্তার করেননি, গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি নেই, তিনি পলাতক নন, তাহলে তাকে বাদ রেখে কী করে চার্জ গঠন হবে? এরপরই চার্জ গঠন না হলে চার্জ নিজের হাতে তুলে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বিচারক।
এদিন অভিযুক্তদের আদালতে তুলে চারদিনের সিবিআই হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বিচারক তাদের আর্জি মঞ্জুর করে তিন অভিযুক্তকে চারদিনের সিবিআই হেফাজত দেন। শনিবার তাদের ফের আদালতে তোলা হবে।