নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: দুর্যোগ কমতেই জল নেমেছে জলপাইগুড়ি শহরের ১৬, ১৯, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশ এলাকা থেকে। কিন্তু বৃষ্টির ভ্রুকুটি থাকায় ফের জল জমার মতো দুর্ভোগের শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন পুরসভা এলাকার ওই বাসিন্দারা। সঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে জমে থাকা বদ্ধ জলের জন্য উপদ্রব বেড়েছে মশা-মাছি সহ পোকামাকড়ের। যা নিয়ে সরব শুধু সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারাই নন, সরব জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলার অম্লান মুন্সিও। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মহামায়া পাড়ার বাসিন্দা আন্না দাস, সন্ধ্যা দাস, বানি দাসদের মতো গৃহবধূ, প্রৌঢ়াদের অভিযোগ, বেশ কয়েক ঘণ্টার দুর্ভোগের পর মঙ্গলবার রাতের মধ্যে জমা জল নেমে গিয়েছে। কিন্তু আশপাশের ফাঁকা জমিতে এখনও নোংরা জল জমে আছে। জল জমে আছে নর্দমাগুলিতেও। যার ফলে এলাকায় মশা সহ অন্যসব পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়ে গিয়েছে। তাঁদের আক্ষেপ, দীর্ঘবছর ধরে আমাদের ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকায় বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়। এই বর্ষার মরশুমে দু’দফায় এলাকায় জল জমেছে। জলমগ্ন হলেই খাবার জলের সঙ্কট তৈরি হয়। কারণ রাস্তার জলের কলগুলি ডুবে যায়। কেঁচো সহ বিভিন্ন পোকা  কলপাড়ে জমা হয়। ফলে আমরা জল জমা অবস্থায় পানীয় জল সংগ্রহের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ে যাই। এছাড়াও বেশিরভাগ বাড়ির উঠোনে, কারও ঘরে জল ঢুকে যায়। কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর সমান জল দাঁড়িয়ে যায়। রান্নাঘরে জল ঢুকে যাওয়ায় রান্না খাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি বৃষ্টির জল যখন নেমে যায় তখন পিচের, কংক্রিটের রাস্তাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমাদের এলাকার বেশ কয়েকটি রাস্তা থেকে পিচের আস্তরণ উঠে গিয়েছে। বৃষ্টি হলে ও করলা নদীর জল বাড়লে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় শহরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের পরেশ মিত্র কলোনি ও নীচ মাঠ এলাকার। মঙ্গলবারও সেখানে নদীর জল ঢুকে গিয়েছিল শতাধিক বাড়িতে। তবে বুধবার বৃষ্টি ও করলার জলস্তর কমতেই জল নেমেছে। নীচমাঠ এলাকার বাসিন্দা রামকিশোর মণ্ডল বলেন, আমাদের বাড়ির সামনে এখনও কাঁচা রাস্তা। পুরসভা রাস্তা করে দেবে বলেও করেনি। ফলে বৃষ্টির জল নামলেও দুর্ভোগ পোহাতেই হচ্ছে। আশপাশের জমিতে জল জমে আছে। মশা, পোকামাকড়ের উপদ্রব এখানে। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলার বলেন, বিরোধী দলের কাউন্সিলার হিসেবে আমরা অনেকদিন ধরেই যে অভিযোগ আনছি, তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়ে দিয়েছেন। পুরসভার পরিকল্পনাহীন কার্যকলাপের জন্য শহরের বাসিন্দারা এমন সমস্যায় ভুগছেন। জলপাইগুড়ি পুরসভা পরিকল্পনা মাফিক কাজের ব্যাপারে উদ্যোগী হলেই সমস্যা মিটত। কিন্তু তা হয়নি। যদিও জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারপার্সন পাপিয়া পাল বলেন, বর্ষার আগে নর্দমা পরিষ্কার থেকে শুরু করে, মূল নিকাশি গদাধর খাল পরিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাপক পরিমাণে বৃষ্টি হলে শহরের নিচু এলাকায় ভৌগোলিক কারণেই জম জমে। আমাদের চেষ্টা থাকে মানুষকে যতটা কম সমস্যায় পড়তে হয়। সেই মতোই কাজ চলেছে বলেই ১৬৬ মিমি বৃষ্টির পরও জল নেমে গিয়েছে। এলাকায় ডেঙ্গু সার্ভে টিমগুলি কাজ করছে।