শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্তশত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত সাফল্য।প্রতিকার: ... বিশদ
প্রতিদিনের মতো ক্লাস চলছিল সিন্ধ প্রদেশের সিং পাবলিক স্কুলে। এক শিক্ষক যখন উর্দু ক্লাস নিচ্ছিলেন, তখন শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করেন প্রিন্সিপাল নোটন লাল। এবং শিক্ষককে থামিয়ে দিয়ে হজরত মহম্মদের অপমান করতে থাকেন। এমনটাই জানিয়েছে ঘটনার সময় শ্রেণীকক্ষে থাকা স্কুলপড়ুয়া রানা মহম্মদ ইবতিসাম। তখন সে তার মুসলমান বন্ধু ও শিক্ষকদের কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করে। তাঁরা তাকে সমর্থন না করায় বাবা আব্দুল আজিজ রাজপুতের কাছে যায় ইবতিসাম এবং বিষয়টি খুলে বলেন। তখন আব্দুল আজিজ প্রিন্সিপাল নোটনের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁর কাছে নিজের ভুলের কথা স্বীকার করেন।
এরপরেই হজরত মহম্মদকে নিয়ে প্রিন্সিপালের করা মন্তব্য নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে পোস্ট করে দেয় ইবতিসাম। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়তেই এক ব্যক্তিকে পাঠিয়ে তার বাবাকে স্কুলে ডেকে পাঠান নোটনবাবু। ইবতিসামের কথায়, ‘আমার বাবা পরের দিন দেখা করবেন, এটা ওই ব্যক্তিকে জানাতে গেলে তিনি আমাকে মোটরবাইকে বসিয়ে স্কুলে নিয়ে চলে যান।’ সেখানে প্রিন্সিপাল তাকে ফেসবুকের পোস্টটি মুছে ফেলতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ। তারপর আজিজ স্কুলে গিয়ে ছেলেকে নিয়ে আসেন।
এই ঘটনার পর প্রিন্সিপাল নোটনের বিরুদ্ধে পাকিস্তান দণ্ডবিধির ২৯৫ ধারায় ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ আনেন আজিজ। এবং দাবি করেন, ‘আমার ছেলে ফেসবুকে ওই সমস্ত পোস্ট করেনি। তার নাম করে কেউ একাজ করেছে এবং হিন্দু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে।’ এই ঘটনায় এলাকায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। উত্তপ্ত জনতা হিন্দুদের মন্দির, সিন্ধ পাবলিক স্কুল সহ একাধিক স্কুল এবং সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিস পিকেট বসানো হয়েছে। বিশাল পুলিস বাহিনী টহল দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঘোটকির সিনিয়র পুলিস সুপার ফারুক লানজার। পাকিস্তানের মানবাধিকার সংগঠন হিন্দুদের উপর আক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত প্রিন্সিপাল নোটনকে। গোটা মামলাটি হায়দরাবাদের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল নঈম শেখের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তান হিন্দু কাউন্সিলের প্রধান রমেশকুমার বাঙ্কওয়ানি। নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে নোটনকেও। পাশাপাশি, দাঙ্গা ছড়ানো, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করা ইত্যাদির অভিযোগে বিক্ষোভকারী ২১৮ জনের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, হিন্দুদের ধর্মান্তকরণে মূল অভিযুক্ত আব্দুল হক ওরফে মিয়ান মিথু এই দাঙ্গায় জড়িত রয়েছে। এছাড়া, বিক্ষোভকারীদের যে দলটি স্কুলে হামলা চালিয়েছিল, তাদের নেতৃত্ব দিয়েছিল মিথুর দাদা মিয়ান আসলাম।
যদিও, যাবতীয় অভিযোগ নস্যাৎ করে মিথু বলেছে, ঘটনার সময় উবারোতে ছিল সে। হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করে পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারপার্সন বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি সিন্ধের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আর্জি জানিয়েছেন। দলের একাধিক নেতা-নেত্রী এলাকায় গিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন।