নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ডুরান্ড কাপের প্রথম ম্যাচে মোহন বাগানের কাছে হেরে গেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়াল সুব্রত ভট্টাচার্যর প্রশিক্ষণাধীন মহমেডান স্পোর্টিং। প্রথমার্ধের খেলাটা দেখে বিরতিতে তিনি কিছু পরামর্শ দেন। এতেই দলের খেলাটাই বদলে যায়। শনিবারের বৃষ্টিভেজা বিকেলে সেই চিত্রই দেখা গেল মোহন বাগান মাঠে। প্রথমার্ধে ইন্ডিয়ান নেভি প্রবলতর প্রতিপক্ষ। কালো সাদা শিবিরের স্টপার করিম ওমোলোজা প্রথমার্ধে ব্রিটো ও নবীন গুরুংয়ের দুটি শট গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন। নেভির গোলরক্ষক ভাস্কর রায় ২৪ মিনিটে শোভন সেনের একটি শট তৎপরতার সঙ্গে রুখে দেন। বিরতির পর খেলা শুরু হয় বৃষ্টি। যা আশীর্বাদ হয়ে ওঠে মহমেডান স্পোর্টিংয়ের কাছে। নেভি দলটিতে ভাস্কর রায়, ব্রিটো, দলরাজ, নবীন গুরুংদের মতো আই লিগে খেলা ফুটবলার থাকলেও ডুরান্ডের আগে ত্রিবান্দ্রমে প্র্যাকটিস হয়েছে মাত্র ১৫ দিন। গত মরশুমে কলিঙ্গ কাপের পর কোনও টুর্নামেন্টে খেলেনি তারা। ফিটনেস ভালো হওয়ায় প্রথমার্ধে গতির ঝড় তোলে। কিন্তু বৃষ্টির পর মাঠের চরিত্র বদলে যাওয়ায় আর পাঁচ গোল করা আইভরি কোস্টের স্ট্রাইকারটিকে একটু ডানদিকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেন মহমেডান কোচ। এই টিপসেই দ্বিতীয়ার্ধে হ্যাটট্রিকসহ পাঁচটি গোল করলেন আর্থার কোয়েসি। একটি ম্যাচে পাঁচটি গোল কলকাতার মাঠে স্মরণাতীতকালে হয়নি। ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর আই লিগের ম্যাচে চিডি চারটি গোল করেছিলেন। (মোহন বাগান ওই ম্যাচে ইস্ট বেঙ্গলকে হারায় ৫-৩ গোলে) চিডিকে এদিন টপকে গেলেন মালয়েশিয়া লিগে সাবা এফসি’র হয়ে খেলা আর্থার। তাঁর বাবা ফিজিক্যাল এডুকেশনের টিচার। মা ফ্রেঞ্চ ভাষার শিক্ষিকা। আইভরি কোস্টের সুইগি শহরের বাসিন্দা গত বছর গোকুলামে এসে ট্রায়ালে বাতিল হন। ফিরে গিয়েছিলেন মালয়েশিয়ার ক্লাবে। ডিসেম্বরে মালয়েশিয়ান লিগ শেষ হওয়ার পর মহমেডানে আসেন। পাঁচটি গোল করে রেকর্ড করার পর তাঁর মুখে কোচ সুব্রত ভট্টাচার্যর কথা। আর্থার বলেন,‘দেড় মাস প্রি- সিজন প্র্যাকটিসের সুফল এটা।
প্রথম দুটি ম্যাচে খেলোয়াড়দের বেছে নিয়ে কোচ সঠিক দলটি শনিবারই বেছে নিতে পেরেছেন।’ ময়দানে কোনও ম্যাচে আট গোলও বিরল। ম্যাচে ৫৫,৭৩,৭৬,৮৬ এবং ৯০ মিনিটে পাঁচটি গোল করেন আর্থার। নেভির গোল দুটি ৭১ এবং ৯৩ মিনিটে। দুটি গোলই মোহন বাগানের প্রাক্তনী ব্রিটোর। গোয়ান ফুটবলারটির শেষের গোলটি পেনাল্টি থেকে। আর্থার ৫৫ এবং ৭৩ মিনিটে গোল দুটি করেন করিম ওমোলাজার পাস থেকে। স্বদেশি নেভির বিরুদ্ধে করিম ওমোলাজাকে কিছুটা উপরে তুলে দেন সুব্রত। তীর্থঙ্করের কাছ থেকে বল পেয়ে দলরাজকে কাটিয়ে ৭৬ মিনিটে দুরন্ত প্লেসিংয়ে হ্যাটট্রিক করেন আর্থার। ৮৬ মিনিটে একক প্রয়াসে বক্সে ঢুকলে ভাস্কর তাঁকে ফেলে দেন। পেনাল্টি থেকে চতুর্থ গোল আর্থারের। ৯০ মিনিটে তীর্থঙ্করের কর্নারে দুরন্ত হেডে পঞ্চম গোল করেন আর্থার। এই গোলটি করেই তিনি সবথেকে তৃপ্ত। ৬২ মিনিটে মহমেডানের অপর গোলটি উগান্ডার মুড্ডে মুসার।