স্বদেশের বা বিদেশের নামী প্রতিষ্ঠানে বিদ্যালাভের সুযোগ পেতে পারেন। সব কাজে কমবেশি সাফল্যের যোগ। আয় ... বিশদ
কাটোয়া ২ ব্লকের অগ্রদ্রীপের ছোট কুলগাছি গ্রামের ঘরে ঘরে একতারা, বাঁশি তৈরি হয়। এখানকার শিল্পীদের তৈরি বাঁশি বাংলাদেশ, আমেরিকা, জাপান, জার্মানেও যায়। বাড়ির মহিলা ও পুরুষ প্রত্যেকেই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে। পাশাপাশি তাঁরা বিভিন্ন রকমের একতারা তৈরি করেন। বড় একতারা লাউয়ের খোলা দিয়ে তৈরি হয়। আর ছোট একতারাগুলি নারকেলের মালা দিয়ে তৈরি হয়। সেই নারকেলের মালা নিয়েই সমস্যায় পড়েছেন শিল্পীরা।
গ্রামের শিল্পী বিজয় মাল, আকবর মাল, আস্কর মাল, তাজমিনা মাল বলেন, আগে ৭-৮ টাকা প্রতি পিস নারকেল কিনতাম। এখন ১০ টাকাতেও পাওয়া যাচ্ছে না নারকেল। ফলে আমরা খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। কীভাবে ভবিষ্যতে একতারা তৈরি করব বুঝতে পারছি না।
জানা গিয়েছে, কেরল, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে নারকেলের মালা আমদানি হয়। বিভিন্ন নার্সারি থেকেও নারকেলের মালা আমদানি করা হয় তারপর সেগুলি যন্ত্রের সাহায্যে ছুলে নেওয়া হয়। এরপর বাঁশের বেত দু’ দিকে লাগিয়ে তার বাঁধা হয়। তারপর সেই একতারায় রং করে নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়। ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন মেলায় বিক্রি করা হয় সসেইসব একতারা। আর বাঁশিগুলি অসমের বাঁশ কেটে তৈরি করা হয়। নারকেল গাছ কমে যাওয়ায় ছোট একতারা তৈরি ভবিষ্যতে বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে গ্রামের এই কুটির শিল্পে ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা।
কাটোয়া মহকুমা কৃষিদপ্তরের এসএম জনার্দন ভট্টাচার্য বলেন, আসলে এখন আর কেউ নারকেল গাছের যত্ন করে না। তাই এখন ডাব ছোট অবস্থাতেই ঝরে যাচ্ছে। তাই হয়তো নারকেলের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
ষাটোর্ধ্ব শঙ্কর মালের চার পুরুষের বাঁশির কারবার। বাবা ভক্ত মালের পর ছোট ছেলে শঙ্কর বাঁশি, একতারার ব্যবসার হাল ধরেন। বাড়িতেই ছোটখাটো কারখানা খুলে বসেছেন তিনি। বাংলাদেশ, আমেরিকা, জাপান প্রভৃতি দেশে শঙ্কর মালের হাতে তৈরি বাঁশি পাড়ি দেয়। শঙ্করবাবু নিজেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ট্রেন, বাসে ঘুরে ঘুরে বাঁশি বিক্রি করেন। তিনিও বলেন, নারকেল না পাওয়া গেলে ভবিষ্যতে আমাদের মতো গ্রামের শিল্পীদের অবস্থা খুব একটা ভালো হবে না।-নিজস্ব চিত্র