ছোট ও মাঝারি ব্যবসার প্রসার ও বিক্রয় বৃদ্ধি। অর্থাগম ক্রমশ বাড়বে। মানসিক অস্থিরতা। ... বিশদ
এতদিন আধার কার্ড ছিল না হাড়জোড়ার শবর পাড়ার প্রায় ৪৪জন গ্রামবাসীর। কয়েকদিন আগেই ব্লক প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, শনিবার আধার কার্ড তৈরি হবে বাসিন্দাদের। ব্লক অফিস থেকে গাড়ি পাঠানো হবে। সেইমতো এদিন সকাল থেকেই কিছুটা ব্যস্ত ছিল হাড়জোড়ার শবররা। মলিন, নোংরা কাপড় ছেড়ে পরিষ্কার জামাকাপড় পরে সকাল থেকেই তৈরি ছিলেন ভকম শবর, কনকু শবর, দেবী শবররা। তাঁরা জানতেন, আজ তারা যে আধার কার্ড তৈরির জন্য ব্লক অফিস যাবে, তার গুরুত্ব অপরিসীম। এই আধার কার্ড না থাকার জন্যই তো এতদিন ধরে তাদের মিলছিল না রেশন। স্কুলে ভর্তি করতে পারছিল না ছেলেমেয়েদের। বঞ্চিত হচ্ছিল সরকারের সব রকম সামাজিক সুরক্ষার প্রকল্পের সুবিধা থেকে। একবার এই আধার কার্ড তৈরি হয়ে গেলেই তাদের রেশন মিলবে। দু’বেলা পেট ভরে খেতে পারবে। আর অনাহারে দিন কাটাতে হবে না।
শনিবার ব্লক প্রশাসনের তরফে গাড়ি পাঠিয়ে হাড়জোড়ার প্রায় ৪০ জন বাসিন্দাকে ব্লক অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই শিবির করে শুরু হয় আধার কার্ড তৈরির প্রক্রিয়া। হাতের আঙুলের ছাপ, চোখের মণি স্ক্যান করা হচ্ছিল। যদিও সন্ধ্যার সময় হঠাৎ করে মেশিন খারাপ হয়ে যায়। বলরামপুরের বিডিও সৌগত চৌধুরী বলেন, মেশিন খারাপ হয়ে যাওয়ায় এদিন ২৫ জনের আধারকার্ড তৈরির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। বাকিদের মঙ্গলবারের মধ্যে হয়ে যাবে। একবার আধার কার্ড পেয়ে গেলেই আমরা তাদের রেশন কার্ড থেকে শুরু করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বিধবা ভাতা সহ সরকারের যা যা প্রকল্প রয়েছে, তার সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’ ষাট বছর বয়সে এসে আধার কার্ড পেতে চলেছেন সারথি শবর, ভকম শবর, লালমোহন শবররা। তাঁরা বলেন, ভেবেছিলাম এরকম অনাহারেই আমাদের দিন কেটে যাবে। কিন্তু, এবার মনে হয় দিনবদল হতে চলেছে।
ছেলেপিলে নিয়ে পরিবারে সাতজন সদস্য গুরুচরণ শবরের। তিনি বলেন, একটি মাত্র রেশন কার্ডে মাত্র ৯কেজি চাল পেতাম এতদিন। এবার প্রত্যেকের রেশন মিললে দু’বেলা খেতে তো পারব।
এদিন খানিকটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন পুরুলিয়ার মহকুমা শাসক উৎপল ঘোষ। তিনি বলছিলেন, লোকসভা ভোটের আগে দুয়ারে সরকারের সময় ঘুরতে ঘুরতে এই হাড়জোড়ায় এসে পৌঁছেছিলাম। জানতে পারি, এখানকার বহু শবর জনজাতির মানুষের জন্মের শংসাপত্রটুকুও নেই। তা না থাকার কারণে হয়নি আধার কার্ড। আধার না থাকায় কার্যত অন্ধকারে ডুবে জীবন। সেদিন থেকেই আধার তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়। প্রথমে জন্মের সার্টিফিকেট, তারপর যাদের ভোটার কার্ড নেই তাদের তা ব্যবস্থা করি। অবশেষে আধার কার্ডের ব্যবস্থাও হতে চলেছে। -নিজস্ব চিত্র