ছোট ও মাঝারি ব্যবসার প্রসার ও বিক্রয় বৃদ্ধি। অর্থাগম ক্রমশ বাড়বে। মানসিক অস্থিরতা। ... বিশদ
ঝাড়গ্ৰাম জেলার নিজস্ব এক লোকসংস্কৃতির সমৃদ্ধ ধারা রয়েছে। অরণ্য, মূলনিবাসীদের সংস্কৃতি সেই ধারার সঙ্গে মিশে আছে। জেলার শিল্পীরা সেই ধারাকে আজও বহন করে চলেছে। শিল্পী সুবীর বিশ্বাসের কাঠের ভাস্কর্য, স্লেট পাথরে খোদাই করা চিত্রে সেই ধারাই ফুটে ওঠে। জঙ্গলমহলের প্রাচীন লোকসংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক পরিবেশ তাঁকে বাংলার মূল শিল্প ধারার ভিতরে পৃথক এক বৈশিষ্ট্য দিয়েছে। যা তার শিল্পকর্মে বারবার ফুটে উঠেছে। শিল্পীর ভাষায়, প্রকৃতি আপন শক্তিতে বলীয়ান। আঘাত করলেও অভেদ্য। কাঠ ও স্লেট পাথরের শিল্পকর্মে তা ফুটে ওঠে। দেবীর রূপের মধ্যেও সেই শক্তিই ফুটে ওঠে। যদিও এই শিল্পী কোনও প্রাতিষ্ঠানিক শিল্পশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষিত নন। কিন্তু তাঁর শিল্পকর্ম দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি লাভ করেছে। শিল্প রসিকরা তাঁর কাঠ ও স্লেট পাথরে খোদাই করা শিল্পকে অনন্য সৃষ্টিকর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। নিজের খেয়ালেই কাঠ ও স্লেট পাথরে খোদাই করা একশোটি দেবী দুর্গার মূর্তি তৈরি করছেন। পঞ্চাশটি কাজ ইতিমধ্যেই শেষ করেছেন। নিজের স্টুডিওতে বসে বাকি কাজ শেষ করার জন্য ঝাঁপিয়েছেন। শিল্পী সুবীরবাবু বলেন, প্রথাগত কোনও শিক্ষাই আমি লাভ করিনি। একসময় সংসার চালানোর জন্য ট্রেনে হকারি করতাম। ৩০পেরোনোর পর এক অমোঘ শিল্পসৃষ্টি করার ইচ্ছে আমার মধ্যে জেগে ওঠে। এই অরণ্য ভূমির কাঠ, পাথর আমার শিল্পসৃষ্টির মাধ্যম হয়ে ওঠে। কাজের মধ্যে দিয়ে বুঝতে পারছিলাম অরণ্যভূমির প্রকৃতি, লোকসংস্কৃতি আমার কাজে ফুটে উঠেছে। সেই ধারায় আমার শিল্প সাধনার পথ হয়ে ওঠে। দেবী দুর্গা শুভ শক্তির প্রতীক। অশুভ শক্তি তাঁর কাছে পরাজিত হয়। পরাজিত শক্তি তাঁর চরণে আশ্রয় নেয়। সেই ভাবনাকে নিয়ে কাঠ ও স্লেট পাথরে একশোটি দেবী দুর্গার মূর্তি তৈরি করার পণ করি। ৫০টি কাজ হয়ে গিয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত শেষ করব। অনেকেই আমার তৈরি দুর্গা প্রতিমা কেনার আগ্ৰহ দেখিয়েছে। শিল্প সৃষ্টির আনন্দেই এগুলি তৈরি করেছি।
ঝাড়গ্ৰামের শিল্পী উপল পাহাড়ী বলেন, স্লেট পাথর খোদাই শিল্পে উনি অনন্য প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন। অরণ্য, লোকসংস্কৃতির নির্যাস তাঁর কাঠের ভাস্কর্যে দেখা যায়। জঙ্গলমহলের কমবেশি সকল শিল্পকর্মে এখানকার নিজস্বতা প্রকাশ পায়। বাংলার মূল ধারার শিল্পে যা এক বিশিষ্টতা দান করেছে। -নিজস্ব চিত্র