নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা, বেলদা: বেলদায় উড়ালপুল হবে। নিত্যযাত্রীদের দুর্ভোগ ঘুচবে। সমাধান হবে দীর্ঘ কয়েক দশকের সমস্যার। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে ভোট চাইতে এসেছিলেন মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ। কিন্তু উড়ালপুল তৈরি দূর অস্ত, একটি ইটও গাঁথা হয়নি এখানে। যার ফলে বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বেলদাবাসী। জবাব দিয়েছেন ইভিএমে। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের পাশাপাশি নারায়ণগড় ব্লক থেকেই ১০ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া। মানুষের আশা, এবার অন্তত এনিয়ে সংসদে আওয়াজ তুলুন জুন। দীর্ঘ সময়ের সমস্যার সমাধান করুন। 
নারায়ণগড় ব্লকের বেলদা-কেশিয়াড়ি রাজ্য সড়কের কেশিয়াড়ি মোড়ে যানজট নিত্যদিনের সঙ্গী। এলাকায় রেলের লেভেল ক্রসিং রয়েছে। খড়গপুর-বালেশ্বর ডিভিশনে এই লাইন দিয়ে প্রতিদিন দক্ষিণ ভারতগামী প্রচুর এক্সপ্রেস ও মালবাহী ট্রেনের যাতায়াত করে। যে কারণে লেভেল ক্রসিংয়ে যানজট বাড়ে। লেভেল ক্রসিংয়ের জায়গায় উড়ালপুল হবে। বেলদাবাসীর এই দাবি দীর্ঘদিনের। বাসিন্দাদের অভিযোগ, লেভেল ক্রসিংয়ের একদিকে রয়েছে বেলদা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, কলেজ, অন্যদিকে বেলদা বাস স্ট্যান্ড, রেল স্টেশন, বাজার। এই লেভেল ক্রসিং পেরিয়ে খুব সহজেই নয়াগ্রাম হয়ে ঝাড়গ্রাম যাওয়া যায়। প্রতিনিয়ত এই রাস্তা দিয়ে কয়েক হাজার পণ্যবাহী যান ও যাত্রীবাহী বাস যাতায়াত করে। ফলে একবার রেল গেট পড়লে আর রক্ষে নেই। দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষা। বাসিন্দাদের দাবি, সম্প্রতি খড়গপুর থেকে জলেশ্বর পর্যন্ত রেলের তৃতীয় লাইনের সম্প্রসারণের কাজ চলছে। যা সম্পূর্ণ হয়ে গেলে এই লেভেল ক্রসিং দিয়ে পারাপার কার্যত দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে। ২০১৯ সালে বেলদাবাসীকে উড়ালপুলের স্বপ্ন দেখান দিলীপ ঘোষ। ২০২১ সাল নাগাদ রেলের তরফে অনুমোদনও মেলে। রেল সূত্রে খবর, রেল ও রাজ্য যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্পের কাজ করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। যদিও ২০২৩ সালে এই প্রকল্প সংশোধন করা হয়। উড়ালপুল নির্মাণের সম্পূর্ণ ব্যয়ভারই রেল গ্রহণ করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এনিয়ে মাপজোকও করে রেল। প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়, কেশিয়াড়ি মোড়ের উপর দিয়ে উড়ালপুল যাবে। কিন্তু এই এলাকা দিয়ে উড়ালপুল তৈরি হলে প্রচুর ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভাঙতে হবে। ফলে বিকল্প ভাবনাচিন্তা শুরু করে প্রশাসন। তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। উড়ালপুলের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়েছেন স্থানীয় সুশান্ত পানিগ্রহী, প্রদীপকুমার দাসরা। তাঁরা বলেন, আগের সাংসদ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বাস্তবায়িত করতে পারেননি। নতুন সাংসদের কাছে আমাদের আর্জি, তিনি যত দ্রুত সম্ভব আমাদের সমস্যার সমাধান করুন।
জুন মালিয়া ভোট প্রচারের সময় থেকেই বলে আসছেন, সাংসদ হলে এই সমস্যার কথা তিনি লোকসভায় তুলবেন। তাঁর এখনও দাবি, সমস্যার সমাধানে সবরকম চেষ্টা হবে। নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্য অট্ট বলেন, দিলীপ ঘোষ মানুষকে বোকা বানিয়েছেন। তাই এই ভোটে তাঁর দলের প্রার্থী জবাবও পেয়েছেন। জুন সাংসদ হয়েছেন। আশা করছি এবার সমস্যার সমাধান হবে।