বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাঙ্গালপাড়ার বাসিন্দা শুভ্রার সঙ্গে সিউড়ির কড়িধ্যা এলাকার বাসিন্দা সুমন চট্টোপাধ্যায়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সুমন বর্তমানে পিএইচডি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সে একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতাও করে। সুমন ও শুভ্রা একসঙ্গে বিএড পড়েছে বলে দাবি।
এই ঘটনার পর মৃতার পরিবারের তরফে সংবাদ মাধ্যমের কাছে কোনও মন্তব্য না করা হলেও শুভ্রার বাবা ওই রাতেই সিউড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে পুলিস অভিযুক্ত প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে। মৃতার বাবা প্রদীপ মণ্ডলের অভিযোগ, শুভ্রার সঙ্গে সুমনের দু’বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই সম্পর্কের কথা শুভ্রার পরিবারের প্রত্যেকেই জানতেন। কিন্তু, গত কয়েকদিন ধরে পরিবারের সদস্যরা শুভ্রাকে বিষণ্ণ অবস্থায় দেখেন। তা নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে শুভ্রা জানিয়েছিলেন, সুমন বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে সহবাস করেছে। এছাড়া তাঁর কিছু ছবিও প্রেমিকের কাছে রয়েছে। বিয়ের চাপ দিলেই সেই ছবিগুলি স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। এছাড়া বিয়ের কথাও অস্বীকার করেছে ওই যুবক। তার জেরে রবিবার রাত ১০টা নাগাদ শুভ্রা বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন।
এছাড়া আত্মঘাতী হওয়ার সময় শুভ্রা সেই ছবি তুলে সুমনকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছিলেন বলে দাবি। সেই ছবিও সোমবার স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পাশাপাশি তাঁর মৃত্যুতে কলেজ কর্তৃপক্ষও হতবাক। পুলিসের অনুমান, শুভ্রা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। সেই থেকেই আত্মঘাতী হয়েছেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে, মৃতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই রাতেই অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিস। সোমবার তাকে সিউড়ি আদালতে তোলা হলে বিচারক দু’দিনের পুলিসি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এদিন অভিযুক্তকে আদালতে তোলার সময় সংবাদিকরা তার প্রতিক্রিয়া জানতে প্রশ্ন করলে সে কোনও মন্তব্য করেনি। অভিযুক্তের এক আত্মীয় মাধব দাস বলেন, সুমন বর্তমানে পিএইচডি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সে ফিজিক্সে মাস্টারডিগ্রি করেছে। শহরেই একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতার কাজ করছিল। এই ঘটনার সঙ্গে সুমনের কোনও যোগ নেই। বাকি কীভাবে হয়েছে তা আমাদের জানা নেই।
সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ তপনকুমার পড়িচ্ছ্যা বলেন, কয়েকমাস আগে শুভ্রা এখানে অতিথি শিক্ষিকা হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। নিয়মিত ক্লাস করতেন। আচার-ব্যবহারও ভালো ছিল। কিন্তু, কলেজে তাঁর গতিবিধি নিয়ে সেইরকম কিছু বোঝা যায়নি। এদিন সংবাদ মাধ্যমেই তাঁর ঘটনা শুনেছি। কীভাবে কী হয়েছে বলতে পারব না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিউড়ি শহরের ডাঙ্গালপাড়ায় এদিন শুভ্রার বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁর পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে তাঁরা কোনও কথা বলেননি। বাড়িতে তাঁর প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা ভিড় জমান।
স্থানীয়দের দাবি, শুভ্রার সঙ্গে সুমনের বিএড পড়ার সময় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দু’জনই পড়াশোনায় যথেষ্ট মেধাবী। কিন্তু, সম্পর্কের অবনতির জন্য শুভ্রা আত্মঘাতী হবেন তা কেউই মেনে নিতে পারছেন না। এদিন সিউড়ি সদর হাসপাতালে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার প্রসঙ্গে যুবককে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।