কর্ম নিয়ে স্থানান্তর গমনে সাফল্যের যোগ। কর্মে স্থানগত বা সংস্থাগত পরিবর্তন অসম্ভব নয়। পারিবারিক ক্ষেত্রে ... বিশদ
শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। ১৯ বছর ধরে গ্রামীণ অর্থনীতির মেরুদণ্ড হয়েই রয়ে গেল ১০০ দিনের গ্যারান্টি প্রকল্প। অক্টোবর থেকে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ১০০ দিনের কাজের চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়ছে। নভেম্বর মাসে এই প্রকল্পের অধীনে কাজের চাহিদা বেড়েছিল ২০২৩ সালের ওই মাসের তুলনায় ৪ শতাংশ। আর সেটাই ডিসেম্বরের নিরিখে হয়েছে ৯ শতাংশ। অর্থাৎ লাফিয়ে বাড়ছে জব কার্ডের দাবি। বাজেটের প্রাক্কালে এই রিপোর্ট অর্থমন্ত্রকের কাছে পৌঁছে দিয়েছে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। বক্তব্য ছিল একটাই—বাজেটে আগামী আর্থিক বছরের বরাদ্দ বৃদ্ধি তো করতেই হবে, চলতি আর্থিক বছরেও বাড়তি বরাদ্দ চাই। ২০২৩ সালে গোটা বছরে ৬ কোটি পরিবার ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল। আর এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্তই মোট সাড়ে ৫ কোটি পরিবার ১০০ দিনের কাজে জুড়ে গিয়েছে। শুধু ডিসেম্বর মাসেই আড়াই কোটি মানুষ কাজের আর্জি জানিয়েছেন। অর্থাৎ এবার অর্থবর্ষ শেষ হওয়ার তিন মাস আগেই সাড়ে ৫ কোটি পরিবারের আবেদন করা হয়ে গিয়েছে। বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছিল ৮৬ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু প্রায় ৮২ হাজার কোটি টাকা ইতিমধ্যেই ১০০ দিনের কাজে খরচ হয়ে গিয়েছে। যেভাবে আর্থিক বছরের শেষ লগ্নে দেশজুড়ে কাজের চাহিদার আবেদন জমা পড়ছে, বরাদ্দে টান পড়বেই। অর্থাৎ, বরাদ্দ বাড়ানো ছাড়া গতি নেই। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি এই খাতে অতিরিক্ত টাকা খরচ করবেন তো?
অর্থমন্ত্রকের কপালে ভাঁজ পড়েছে। কারণ, গত বছর ৯৮ হাজার কোটি টাকা খরচ হওয়া সত্ত্বেও এবারের বাজেটে বরাদ্দ কমিয়ে ৮৬ হাজার কোটি করা হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল, তার প্রমাণ পেতে দেরি হয়নি। তাহলে কেন ১০০ দিনের কাজে সাপ্লিমেন্টারি বরাদ্দ করা হল না? ২০২৪ সালে ৮৪ লক্ষ নাম জব কার্ডের তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। নতুন করে যুক্ত হয়েছে ৩৯ লক্ষ। সরকারের দাবি ছিল, জব কার্ড কমলে স্বাভাবিক নিয়মেই চাহিদা কমবে। ১০০ দিনের কাজে খরচ কম হবে। সেক্ষেত্রে বাড়তি বরাদ্দের প্রশ্ন নেই। কিন্তু আজকের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি কি সে কথা বলছে? রীতি হল, নির্মাণশিল্প থেকে সরকারি বেসরকারি পরিকাঠামো সেক্টর—সব ক্ষেত্রে কাজের দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরই বাধ্য হয়ে অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মপ্রার্থী গ্রামে ফিরে শেষ ভরসা হিসেবে ১০০ দিনের কাজে নাম লেখান। এখন সেটাই হচ্ছে। অর্থাৎ কাজ কমছে। সেইসঙ্গে হাতে নগদের জোগানও। মোদির ভারতের লক্ষ লক্ষ আম আদমির কাছে উপায় তো এখন একটাই—মনমোহন সিংয়ের সামাজিক সুরক্ষার ফর্মুলা আঁকড়ে ধরা।