নয়াদিল্লি: কখনও দশ ঘণ্টা, কখনও আঠারো ঘণ্টা বসিয়ে রেখে টানা জেরা। একদিন নয়, দিনের পর দিন। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর জেরার এহেন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ইডির ‘উদ্ধত ও অমানবিক আচরণ’ নিয়ে রীতিমতো ভর্ৎসনা করেছে শীর্ষ আদালত। হরিয়ানার প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক সুরেন্দর পানওয়ারকে বেআইনি বালি খাদান সংক্রান্ত মামলায় ১৫ ঘণ্টা জেরা করেছিল ইডি। পরে পানওয়ারকে গ্রেপ্তারও করা হয়। এর আগে হাইকোর্ট সেই গ্রেপ্তারিকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়েছিল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। কিন্তু সেখানেও বিচারপতিদের তোপের মুখে পড়েছে তারা। বিচারপতি অভয় এস ওকা ও অগাস্টিন জর্জ মাসির বেঞ্চ জানিয়েছে, কোনও মামলায় একজনের সঙ্গে এই ধরনের আচরণ করা যায় না। এটি একটি বেআইনি খাদান সংক্রান্ত মামলা, কোনও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের মামলা নয়। তাই পানওয়ারের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়েছে, তা অমানবিক। আপনারা একজনকে জবানবন্দি দিতে কার্যত বাধ্য করছেন। একইসঙ্গে হাইকোর্টের ‘বেআইনি গ্রেপ্তার’ সংক্রান্ত নির্দেশ বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে পানওয়ারের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের যে মামলা চলছে, তাতে এই নির্দেশের কোনও প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
বিরোধীদের ভয় দেখাতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি ব্যবহার করার অভিযোগ নতুন নয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিরোধী নেতাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টার পর জেরা করার নজির ইডির রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সে সব মামলা গতি হারিয়েছে। বিরোধী নেতাদের হেনস্তা করতেই জেরার নামে টানা বসিয়ে রাখা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। সেই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও ইডির আইনজীবী জোহেব হুসেন আদালতে দাবি করেন, হাইকোর্ট যে তথ্য পেয়েছে, তাতে ভুল রয়েছে। কারণ পানওয়ারকে ১৪ ঘণ্টা ৪০ মিনিট জেরা করা হয়েছিল। মাঝে রাতের খাবারের জন্য তাঁকে ছাড় দেওয়া হয়। গভীর রাতে বা ভোরে যাতে কাউকে জেরা করা না হয়, তার জন্য ইডি আধিকারিকদের গত বছরই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও সেই সব যুক্তিতে কান দেননি দুই বিচারপতি।