নয়াদিল্লি: ২০২২ সালে প্রথমবার নিটে বসেছিল সুস্মিতা (নাম পরিবর্তিত)। র্যাঙ্ক হয় ২ লাখের বেশি। চলতি বছর ফের ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। এবার র্যাঙ্ক তালিকায় উপরের দিকে লাফ। ২ লক্ষের ঘর থেকে সোজা ৮ হাজার। এমনই একাধিক ঘটনার সাক্ষী এবারের নিট। শুধু এবারেরই নয়, এই প্রবণতা দেখা গিয়েছিল বিগত বছরেও। যেমন আশালতা (নাম পরিবর্তিত) ২০২২ সালের পরীক্ষায় দুই লক্ষাধিক র্যাঙ্ক করেছিলেন। সেই তিনিই পরের বছর কোনও এক জাদুবলে আট হাজারের তালিকায় চলে আসেন। প্রথমবারের চেষ্টায় যে পড়ুয়ারা ‘ভালো’ ফল করতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাঁরাই দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় ‘বাজিমাত’ করেছেন। সৌজন্যে কি ভালো পড়াশোনা, প্রস্তুতি? তদন্তকারীদের অবশ্য ধারণা, টাকার গল্পও রয়েছে এর নেপথ্যে। কারণ ২০২৩ বা ২০২৪— নিটের এই দ্বিতীয়বার প্রবণতায় দেখা গিয়েছে, অসাধারণ সাফল্য পাওয়া পড়ুয়ারা ‘অচিরাচরিত’ পরীক্ষা কেন্দ্র থেকেই পরীক্ষা দিয়েছেন। যেমন কেউ বেছে নিয়েছেন পাটনার শহরতলি, কেউ বা বেলাগাভি। সোজা কথায় এমন শহর বা গ্রামের কেন্দ্র এই পড়ুয়ারা বেছে নিয়েছেন, যেগুলি সাধারণ অর্থে খুব একটা জনপ্রিয় নয়। এবার গোধরার এক গ্রামের স্কুলে পড়ুয়াদের বলা হয়েছিল, যতগুলি প্রশ্ন পারবেন, ততগুলি উত্তর দিন। বাকিগুলি ফাঁকা রেখে দিন। সেগুলি ভরাট করে দিয়েছিলেন কেন্দ্রের ডেপুটি সুপারিন্টেডেন্ট। সূত্রের খবর, পড়ুয়ারা যখন ফর্ম ফিলাপ করে, তখন থেকেই এই জালিয়াতির শুরু। চক্রের লোকজন তাদের পছন্দের কেন্দ্র বেছে নিতে বলে পড়ুয়াদের অভিভাবকদের। তাঁরা আগ্রিম এক লক্ষ টাকা দেন ও কেন্দ্রগুলি বেছে নেন। এগুলি বেশিরভাগই শহর থেকে দূরে। পরীক্ষায় সফল হলে পরে ৯ লক্ষ টাকা দিতে হয়। এখানেই এনটিএ-রে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ কীভাবে ওই পড়ুয়ারা নিজেদের পছন্দের কেন্দ্র পেয়ে যান।
এদিকে, নিট বিতর্কের আবহে প্রশ্নফাঁস রুখতে অর্ডিন্যান্স জারি করল উত্তরপ্রদেশ সরকার। মঙ্গলবার এই ইস্যুতে মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রশ্নফাঁস রুখতে বিধানসভায় পাশ করানো হবে নতুন আইন। যে কোনও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, পদোন্নতি পরীক্ষা, ডিগ্রি-ডিপ্লোমা, প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস বা কোনও শংসাপত্রে জালিয়াতির ঘটনায় কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।